মঙ্গলবার ২৬শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

মঙ্গলবার ২৬শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা পরিষদের সফরে মিয়ানমারের ‘না’

শুক্রবার, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
293 ভিউ
রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা পরিষদের সফরে মিয়ানমারের ‘না’

কক্সবাংলা ডটকম(২ ফেব্রুয়ারী) :: নিরাপত্তা পরিষদকে ফেব্রুয়ারিতে রাখাইন সফরে যেতে নিষেধ করেছে মিয়ানমার। জাতিসংঘের রাখাইন পরিদর্শনের প্রস্তাব পুরোপুরি নাকচ না করলেও নেপিদো বলছে, এখন সফরের ‘উপযুক্ত সময়’ নয়।

জাতিসংঘে নিযুক্ত কুয়েতি রাষ্ট্রদূত মানসুর আয়াদ আল ওতাইবিকে উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এসব কথা জানিয়েছে। কুয়েতের নেতৃত্বেই সফরটির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।

২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।

সেখানকার সংখ্যাগুরু বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে নিয়ে তারা রোহিঙ্গাদের ওপর খুন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ চালায়। এরপর থেকে সমালোচনার ঝড় ওঠে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে। আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সাংবাদিকদের রাখাইনে প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করে মিয়ানমার।

গত বছর নভেম্বরেই ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ রাখাইন পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে মিয়ানমার সরকারকে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল। নিরাপত্তা পরিষদ থেকে এক বিবৃতিতে সে সময় মিয়ানমার সরকারকে সাংবাদিকদের নিরাপদে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

আল ওতাইবি জানিয়েছেন, কুয়েত  নিরাপত্তা পরিষদের নেতৃত্ব দানকারী দেশ থাকাকালে ফেব্রুয়ারিতেই মিয়ানমারে নিরাপত্তা পরিষদের একটি সফর আয়োজনের পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি।

এবার তিনি জানালেন, ‘সফরটি ফেব্রুয়ারিতে হবে না। মিয়ানমার প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেনি। তারা বলছে এখন সফরের উপযুক্ত সময় না। নিরাপত্তা পরিষদের অন্যান্য সদস্যরা হয়তো মার্চ বা এপ্রিলে এই সফরের উদ্যোগ নিতে পারেন।’

২৫ আগস্টের উত্তেজনার পর থেকেই রাখাইনে প্রবেশাধিকার নেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও সংবাদমাধ্যমের। সে কারণে সেখানকার চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য জানা সম্ভব হচ্ছে না। তবে গত বছরেই বিবিসিসহ বেশ কিছু সাংবাদিককে সঙ্গে করে ওই এলাকা ঘুরে দেখিয়েছে মিয়ানমারের সরকারি কর্মকর্তারা।

বিবিসির দক্ষিণ এশিয়ার সংবাদদাতা জোনাথন হেড সে সময় জানিয়েছেন, তিনি নিজেই রাখাইনের বৌদ্ধদের রোহিঙ্গাদের গ্রামে আগুন লাগিয়ে দিতে দেখেছেন। সেখানে সেনাবাহিনী মিয়ানমারের সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী উপস্থিত ছিল।

অ্যামনেস্টিসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা শুরু থেকেই সত্য অনুসন্ধানে জাতিসংঘের অনুসন্ধানকারীদের ওই এলাকায় প্রবেশের অনুমতি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে মিয়ানমার এতে রাজি হয়নি।

কুয়েতি দূত জানান, রাখাইনে একটি কূটনৈতিক প্রতিনিধি দলের সফর আয়োজনের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে মিয়ানমার।

নেপিডো বলছে, রাখাইনে এখন উত্তেজনা চলছে। তাদের এইসব কারণ দেখিয়েই আপাতত সফরে আসতে মানা করা হয়েছে।

রাখাইনে ‘গণহত্যার আলামত’, ‘রোহিঙ্গা স্বীকৃতি আর নাগরিকত্বেই’ সংকটের সমাধান : ইয়াংহি লি

মিয়ানমারের মানবাধিকার-বিষয়ক জাতিসংঘ দূত ইয়াংহি লি বলেছেন, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত সেনা অভিযানে ‘গণহত্যার আলামত’ পাওয়া যাচ্ছে। দিনকে দিন সেই আলামত স্পষ্ট হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

জোর করে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত না পাঠানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, তাদের প্রত্যাবাসন প্রশ্নে জাতিগত স্বীকৃতি এবং নাগরিকত্ব নিশ্চিতকেই মূল বিবেচনায় রাখা উচিত।

বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে সরেজমিনে রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি দেখার পর বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে এক সংবাদ সম্মেলনে ইয়াংহি লি এ মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশের বার্তা সংস্থা ইউএনবি এবং ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি লি’র বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে এসব কথা জানিয়েছে।

মিয়ানমারের মানবাধিকার-বিষয়ক জাতিসংঘ দূত ইয়াংহি লিপক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে গত ডিসেম্বরে মিয়ানমারের মানবাধিকার–বিষয়ক বিশেষ জাতিসংঘ দূত ইয়াংহি লির রাখাইন সফরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মিয়ানমারের ডি-ফ্যাক্টো সরকার। রাখাইন ঘুরে তার বাংলাদেশে প্রবেশের কথা থাকলেও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ১৮ জানুয়ারি থেকে এক সপ্তাহের জন্য রোহিঙ্গা পরিস্থিতি দেখতে বাংলাদেশে আসেন। সে সময় কক্সবাজারের শিবিরগুলোতে গিয়ে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন তিনি।

থাইল্যান্ড হয়ে দক্ষিণ কোরিয়া ফিরে ইয়াংহি লি সাংবাদিকদের বলেছেন, বিশ্বাসযোগ্য কোনো আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল বা আদালতে সাক্ষ্য না দেওয়া পর্যন্ত তিনি গণহত্যার ব্যাপারে সরাসরি কোনো ঘোষণা দিতে পারেন না। অবশ্য তিনি বলেন, ‘আমরা এ ধরনের আলামত দেখছি এবং ধীরে ধীরে তা জোরালো হচ্ছে।’

২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।  মিয়ানমারে সংখ্যাগুরু বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে নিয়ে তারা রোহিঙ্গাদের ওপর খুন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ চালান। বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ৬ লাখ ৮৮ হাজার রোহিঙ্গা। কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয় তারা।

বিপন্ন রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষেরাবাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি নিয়ে ইয়াংহি লি মার্চের জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের বৈঠকে প্রতিবেদন দেবেন। তিনি সাংবাদিকদের কাছে মন্তব্য করেন, বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে থাকা কোনও রোহিঙ্গা শরণার্থীকে জোর করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো ঠিক হবে না। এই মুর্হর্তেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির জন্য মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছেন লি। বলেছেন, প্রত্যাবাসন হতে হবে ‘রোহিঙ্গাদের জাতিগত স্বীকৃতি আর নাগরিকত্বের নিশ্চয়তাকে মূলনীতি আর প্রধানতম বিবেচনা হিসেবে নিয়ে’।

এপির অনুসন্ধানে মিয়ানমারে নতুন পাঁচটি গণকবর চিহ্নিত হয়েছে। রাখাইনের গু দার পাইনের একই এলাকার ওই পাঁচ গণকবরে চার শতাধিক মানুষের মরদেহ থাকতে পারে বলে আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিপীড়নের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ২৪ জনেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে নতুন গণকবরের সম্পর্কে নিশ্চিত হয় এপি। নিপীড়নের অভিযোগকারীদের কেউ কেউ নিজেদের দাবির পক্ষে সময়-চিহ্নিত ভিডিও সরবরাহ করেছেন। পরে নির্দিষ্ট ওই অঞ্চলে গিয়ে অনুসন্ধানের চেষ্টা করলেও প্রবেশাধিকার না থাকায় ব্যর্থ হয় এপি।

এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ইয়াংহি লি বলেন, তার কাছে ওই গ্রামের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য নেই। তবে এ ঘটনায় একধরনের নমুনা পাওয়া যায়। এ ধরনের প্রতিবেদনকে বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। বলেন, ‘এ জন্যই আমরা উত্তর রাখাইনে তথ্য অনুসন্ধানী মিশন ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রবেশের আহ্বান জানিয়েছি। মিয়ানমারের পদক্ষেপ মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল। এসব গণহত্যার বৈশিষ্ট্যের অংশ।’

বিপন্ন রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষেরাজাতিসংঘের বিশেষ দূত মনে করেন, মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ওঠা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ দূর করার স্বার্থে দেশটির দায়িত্বশীল ও স্বচ্ছ হওয়া জরুরি। তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন ও তাদের পরিবারের প্রতেক্যেরই একটা উত্তর পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তাই সব ধরনের পদক্ষেপ দরকার।

293 ভিউ

Posted ৬:৫২ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com