মঙ্গলবার ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

মঙ্গলবার ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

রেমিট্যান্স আর কালো টাকায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে আবাসন শিল্প

শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর ২০২০
359 ভিউ
রেমিট্যান্স আর কালো টাকায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে আবাসন শিল্প

কক্সবাংলা ডটকম(৩০ অক্টোবর) :: স্বাভাবিক সময়ের মতো বেচাকেনা না হলেও বর্তমানে ফ্ল্যাট ও প্লটের বিক্রি বেড়েছে। কালো টাকা সাদা করার সুযোগে বিদেশ থেকে টাকা (রেমিট্যান্স) এনে অনেকে ফ্ল্যাট ও প্লট কিনছেন। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যেও ফ্ল্যাট ও প্লট কেনার প্রবণতা বেড়েছে। এই খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি না হলেও করোনাকাল অনুযায়ী, আবাসন খাতে রমরমা ব্যবসা হচ্ছে। এতে একদিকে ক্রেতাদের আগ্রহ ও বেচাকেনায় এই খাতের উদ্যোক্তাদেরকে উৎসাহ দিচ্ছে। অন্যদিকে সরকারও অন্য যে কোনও সময়ের চেয়ে এই খাত থেকে এখন সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আহরণ করছে।

বর্তমানে ফ্ল্যাটের দাম কিছুটা কম থাকায় ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি দেখা যাচ্ছে। তবে যেভাবে চাহিদা বাড়ছে, তাতে কিছু দিনের মধ্যেই ফ্ল্যাটের দাম বেড়ে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন। তিনি বলেন, ‘তুলনামূলকভাবে এখন ফ্ল্যাটের দাম কম। এ কারণে এর চাহিদা বেড়ে গেছে। বেচাকেনাও বেড়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘অর্থনীতি যেহেতু ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, অর্থনীতির সব সূচকও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। মানুষের মধ্যে ভাড়া বাসার বদলে নিজের বাসায় থাকার প্রবণতা তৈরি হচ্ছে। সে কারণে চাহিদাও বাড়ছে।’ তিনি উল্লেখ করেন, কিছুদিনের মধ্যেই ফ্ল্যাটের দাম আবারও বেড়ে যেতে পারে।

জানা গেছে, দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি আবাসন প্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক সময়ে প্রতিমাসে ৫০ কোটি টাকার ব্যবসা হতো। করোনার কারণে মার্চ-এপ্রিলে ব্যবসা খারাপ গেলেও গত জুলাই থেকে ব্যবসা বেড়েছে। গত সেপ্টেম্বর মাসে তাদের ৪০ কোটি টাকার ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছে।

বর্তমানে রিহ্যাবের সদস্য সংখ্যা এক হাজার ২০০। আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো বছরে গড়ে ১০-১২ হাজার ফ্ল্যাট ক্রেতাদের কাছে হস্তান্তর করে।

ডেভেলপার কোম্পানির কর্মকর্তারা বলছেন, ক্রেতারা বিভিন্ন ধরনের ফ্ল্যাটের খোঁজখবর নিচ্ছেন। অধিকাংশই ১২শ’ স্কয়ার ফিট থেকে ১৬শ’ স্কয়ার ফিটের ফ্ল্যাট বেশি পছন্দ করছেন। তবে এক হাজার স্কয়ার ফিটের বাসার চাহিদাও বেশি বলে জানান অনেকেই। অনেক আবাসন প্রতিষ্ঠানের ফ্ল্যাট বিক্রি বেড়েছে। কিছু প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে করোনার আগে যে হারে বিক্রি ছিল, এখন অনেকটা সেই অবস্থায় পৌঁছেছে। অবশ্য অনেকের বিক্রি স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক শতাংশ কম।

আবাসন ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজেটে বিনা প্রশ্নে কালো টাকা (অপ্রদর্শিত অর্থ) বিনিয়োগের সুবিধা দেওয়ায় করোনাকালের মধ্যেই ফ্ল্যাট বিক্রিতে গতি এসেছে। ব্যাংকঋণে সুদের হার কমে যাওয়ার কারণেও এই খাতে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে মাঝারি টাইপের ফ্ল্যাট বেশি বিক্রি হচ্ছে। রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘একদিকে চাহিদা বাড়ার কারণে বিক্রি বাড়ছে, অন্যদিকে নতুন প্রকল্পও নিতে শুরু করেছে আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সংগঠনের সদস্যদের কাছ থেকে ফ্ল্যাট বিক্রি বেড়ে যাওয়ার তথ্য পাচ্ছি।’ বিনা প্রশ্নে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ায় এই খাত অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘গত জুন থেকেই একটু একটু করে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। এখন পরিস্থিতির আরও উন্নতি হয়েছে।’

এদিকে নিবন্ধন অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, জমি বেচাকেনা ও ফ্ল্যাট বেচাকেনা বেড়ে গেছে। গত ১০ /১২ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, জমি রেজিস্ট্রি থেকে প্রতি মাসে গড়ে সরকারের রাজস্ব আয় হতো ৬৫১ কোটি ৪ লাখ টাকা। নিবন্ধন অধিদফতরের হিসাব বলছে, এই বছরের ৩১ মে থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে সারাদেশে ২ লাখ ৪৭ হাজার ৭৮০টি দলিল হয়েছে, এতে মোট রাজস্ব আয় হয়েছে ৫২৯ কোটি ৮১ লাখ ৫১ হাজার ৩৩৯ টাকা।

ঢাকা ও ঢাকার বাইরের একাধিক সাব-রেজিস্ট্রারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনাকালে প্রবাসী আয়ের অর্থ থেকে ও কালোটাকার মালিকেরা স্থাবর সম্পত্তি বেশি কিনেছেন।

প্রসঙ্গত, গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। তারপর ২৬ মার্চ থেকে দেশজুড়ে লকডাউন বা অবরুদ্ধ অবস্থা জারি করা হয়। এর ফলে আবাসন ব্যবসায় ভয়াবহ ধস নামে। তখন ফ্ল্যাট বিক্রি একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। সেসময় গ্রাহকের কাছ থেকে কিস্তির টাকাও পায়নি প্রতিষ্ঠানগুলো। সেই সঙ্গে প্রকল্পের নির্মাণ কাজও বন্ধ হয়ে যায়।

তবে জুনে জাতীয় বাজেটে আবাসন খাতে বিনা প্রশ্নে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ায় এর সুফল পাওয়া শুরু হয় ওই মাস থেকেই। অনেকেই বিদেশ থেকে টাকা (রেমিট্যান্স) এনে ফ্ল্যাট কিনতে শুরু করেন। এর ধারাবাহিকতা এখনও রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘মূলত কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগে আবাসন খাত ঘুরে দাঁড়িয়েছে। দেশে ও বিদেশে থাকা সব কালো টাকা এখন ফ্ল্যাট-প্লটে বিনিয়োগ হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দেশের প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেদারসে ফ্ল্যাট কিনছেন। বিশেষ করে এই করোনাকালে ইউরোপ এবং আমেরিকা থেকে আগের চেয়ে বেশি বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। এর সঙ্গে কালো টাকা বিনিয়োগ করার সুযোগ তো রয়েছেই।’ তিনি উল্লেখ করেন, প্রবাসীরা ওই সব দেশে টাকা রেখে এখন কোনও মুনাফা পাচ্ছেন না। লাভের আশায় তারা বাংলাদেশে টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছেন। এর সঙ্গে ২ শতাংশ প্রণোদনাও পাচ্ছেন।

প্রবাসীদের পাঠানো টাকা ও অর্থনীতিতে থাকা কালো টাকার বাইরে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও প্লট ও ফ্ল্যাট বেশি কিনেছেন বলে জানান ল্যান্ড ডেভেলপারস কোম্পানি ‘নিউ ভিশনের’ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুল আলম। করোনাকালে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়মিত কিস্তি শোধ করা ছাড়াও নতুন নতুন প্লট কিনতে দেখা গেছে। তিনি বলেন, ‘বেসরকারি খাতে সংকটের কারণে ছোট বড় ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন ভাতা কমেনি, বরং বেড়েছে।’

359 ভিউ

Posted ১২:৪৫ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর ২০২০

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com