সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :: দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য মানবিক সহায়তা ও সুরক্ষা কার্যক্রমে জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক সংস্থাকে (ইউএনএইচসিআর) তাদের অব্যাহত সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে।
দেশটি প্রতিবন্ধী অন্তর্ভুক্তি ও সুরক্ষা কার্যক্রম জোরদার করার পাশাপাশি তাদের জন্য প্রয়োজনীয় গ্যাস সরবরাহে সহায়তা হিসেবে ৫০ লাখ মার্কিন ডলার অনুদান দিয়েছে।
রবিবার (২০ অক্টোবর) এই তথ্য জানায় ইউএনএইচসিআর।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনএইডসিআরের প্রতিনিধি ইভো ড্রেইসেন বলেন, ‘যখন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের চাহিদা ও দুর্বলতা ক্রমাগত বাড়ছে, বিশেষ করে প্রতিবন্ধী শরণার্থীদের ক্ষেত্রে, তখন দক্ষিণ কোরিয়ার এই উদার সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি আরও বলেন, ‘জীবন রক্ষাকারী সহায়তার তীব্র ঘাটতির এ সময়ে কোরিয়ার জনগণ ও সরকারের অটল সমর্থনের জন্য আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।
তাদের এই সহায়তা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখবে এবং অনিশ্চিত পরিস্থিতির মধ্যে শরণার্থীদের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে ও তাদের ভালো রাখতে সহায়তা করবে।’
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার থেকে বৃহৎ সংখ্যক রোহিঙ্গা পালিয়ে আসে।
এই ঘটনার ৮ বছর পার হলেও কক্সবাজার ও ভাসানচরে আশ্রয় নেওয়া ১১ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী এখনও নিত্যদিনের চাহিদা পূরণের জন্য মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।
২০২৪ সালের শুরু থেকেই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে আরও প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার মানুষ পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত কোরিয়ার রাষ্ট্রদুত পার্ক ইয়ং সিক বলেন, ‘এই বছর বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের মানবিক সহায়তা চলমান রয়েছে।
এখন পর্যন্ত সর্বমোট এক কোটি ডলারের অর্থ সহায়তা এবং দ্বিতীয় বারের মতো উল্লেখযোগ্য পরিমাণ চালের অনুদান আমাদের দৃঢ় ও অবিচল প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
যার উদ্দেশ্য বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য পরিচালিত মানবিক কার্যক্রমকে সহায়তা করা।’
দক্ষিণ কোরিয়ার এই অনুদান প্রতিবন্ধী শরণার্থীদের সহায়তায় ব্যয় করা হবে। এর মধ্যে থাকবে প্রাথমিক শনাক্তকরণ, পুনর্বাসন ও সহায়ক যন্ত্র সরবরাহ, মানসিক স্বাস্থ্য ও মনোসামাজিক সহায়তা এবং সহজে ব্যবহার করা যাবে এমন গোসলখানা ও শৌচাগার নির্মাণ।
এছাড়া তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) সরবরাহ অব্যাহত রাখার মাধ্যমে শরণার্থীরা পরিচ্ছন্ন রান্নার জ্বালানি ব্যবহার করতে পারবে। যা খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টি ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সহায়তা করবে।
২০১৮ সালে জ্বালানি কাঠের নিরাপদ বিকল্প হিসেবে এলপিজি চালু হওয়ার পর থেকে এটি নারী ও কিশোরীদের জন্য সুরক্ষা ঝুঁকি হ্রাস করেছে এবং শিশুদের স্কুলে পড়াশোনার জন্য আরও সময় করে দিয়েছে।
এলপিজি ব্যবহারের ফলে পরিবেশের ক্ষতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে এবং শরণার্থী শিবির ও আশপাশের এলাকায় সবুজায়ন ফিরে এসেছে।
৮ বছরের এই রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটে বাংলাদেশ ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। তারা কক্সবাজার ও ভাসানচরে বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ ক্যাম্পগুলোতে বসবাস করছেন।
Posted ৯:৫৭ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta