কক্সবাংলা রিপোর্ট(১৪ নভেম্বর) :: কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের শরনাথী ক্যাম্পে প্রত্যাবাসনের তালিকায় থাকা রোহিঙ্গা পরিবারগুলো দেশে ফিরে সম্মানের সঙ্গে থাকতে পারবেন কি না এবং মিয়ানমারে ফেরত যেতে চায় কিনা তা জানার জন্য তাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া শুরু করেছে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা।
বৃহস্পতিবার কক্সবাজার থেকে প্রথম দফায় ২ হাজার শরণার্থীর মিয়ানমার ফিরে যাওয়ার কথা।আর সেটাই হতে চলেছে প্রত্যাবর্তনের প্রথম পরীক্ষা। এই প্রত্যাবাসন স্থল সীমান্ত দিয়ে হবে এবং ঘুনদুম-বুথিডং সীমান্ত দিয়েই এসব রোহিঙ্গা রাখাইনে প্রবেশ করবে।
সূত্র বলছে, জাতিসংঘের তদারকিতে বৃহস্পতিবার যাঁদের মিয়ানমার ফেরত যাওয়ার কথা, তাঁদের সফল প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়েই বোঝা যাবে এই উদ্যোগ আগামী দিনে কতটা সফল হবে।
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মাদ আবুল কালাম এ খবর নিশ্চিত করে বলেন,মঙ্গলবার শরণার্থী সংস্থা ১১টি পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছে। বুধবার আরও ১৯টি পরিবারের সঙ্গে আলাপ করবে।’ রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফেরত যেতে চায় কিনা জাতিসংঘ সংস্থা বুধবার এ বিষয়ে প্রতিবেদন দেবে বলেও জানান কালাম।
১৫ নভেম্বর রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটির ফিরে যাওয়ার বিষয়ে সোমবার সম্মতি দেয় মিয়ানমার। তারপরই শরণার্থী সংস্থা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলা শুরু করলো। এর আগে ২৮ অক্টোবর ৪৮৫টি পরিবারের ২২৬০ জন রোহিঙ্গার তথ্য দিয়ে শরণার্থী সংস্থাকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানায় বাংলাদেশ।
এরপর সংস্থাটি পরিবারগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের মতামত সংগ্রহ শুরু করে। বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ১৫ নভেম্বর প্রায় ৩০টি পরিবারের ১৫০ জন রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসন করা হবে।
আবুল কালাম বলেন, ‘বাকি পরিবারগুলোর সঙ্গে শরণার্থী সংস্থা পর্যায়ক্রমে আলোচনা করবে।’শরণার্থী সংস্থার সঙ্গে করা সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, এই প্রত্যাবাসন হবে স্বপ্রণোদিত আর সংস্থাটি গোটা প্রক্রিয়ায় সহায়তা করবে। কালাম জানান, প্রত্যাবাসনের জন্য সরকার তৈরি আর এজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এদিকে কক্সবাজারের সচেতন মহল দাবী করেছে,রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেশে ফিরে যাওয়ার সময় হয়েছে। টেকসই সমাধানের একমাত্র উপায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তিন দফা সমাধান সূত্র যা তিনি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সম্মেলনে জানিয়েছেন। তিন দফা সূত্র হলো, সংখ্যালঘু গোষ্ঠীভুক্তদের প্রতি মিয়ানমারের বৈষম্যমূলক নীতি ও আইনের অবসান ঘটানো, আস্থা বাড়িয়ে ও অধিকার রক্ষার মাধ্যমে প্রত্যাবর্তনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ঘৃণ্যতম অত্যাচার বন্ধ করা।
গত ৩০ অক্টোবর বাংলাদেশ ও মিয়ানমার আলোচনা করে ১৫ নভেম্বর প্রত্যাবাসনের সম্ভাব্য তারিখ হিসাবে নির্ধারণ করে। বাংলাদেশে বর্তমানে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। রাখাইনে নির্যাতনের শিকার হয়ে নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে তারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
Posted ১১:২০ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১৪ নভেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta