বৃহস্পতিবার ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

রোহিঙ্গা সংকটের ৬ মাসে কক্সবাজার : চলছে সমস্যা জিইঁয়ে রাখার ষড়যন্ত্র

শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
523 ভিউ
রোহিঙ্গা সংকটের ৬ মাসে কক্সবাজার : চলছে সমস্যা জিইঁয়ে রাখার ষড়যন্ত্র

মোসলেহ উদ্দিন,উখিয়া(২৪ ফেব্রুয়ারী) :: প্রত্যাবাসন নিয়ে ১০ লাখ রোহিঙ্গা শঙ্কায় ২৫ ফেব্রুয়ারী রবিবার রোহিঙ্গা সমস্যার ৬ মাস পূর্ণ হল। পচিশে আগষ্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনী, বিজিপি ও উগ্রপন্থীদের দমন, নিপীড়ন নির্যাতন, হত্যা সহ শিশুদের পুড়িয়ে মারার ঘটনায় রোহিঙ্গা দলে দলে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে উখিয়া-টেকনাফে বিভিন্ন শিবিরে আশ্রয় নেয়।

এ পর্যন্ত বিভিন্ন শিবিরে ঝুপড়ি বেঁধে ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা অস্থায়ী ভাবে বসবাস করে আসছে। রোহিঙ্গাদের জায়গা দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতার মা হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছেন। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের কাছে মিয়ানমারের আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করার জন্য আহবান জানিয়ে আসছেন।

বিদেশী দাতাসংস্থার পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকেও খাদ্য, ঔষুধ, পানি সরবরাহ দিয়ে মানবতার সেবা করে আসছে। মিয়ানমার-বাংলাদেশের সাথে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে ঢাকায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংক্রাস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়াও মিয়ানমারের নেপিডোতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে আলোচনায় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

গত জানুয়ারীর ২২ তারিখ প্রথম দফায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন করার কথা থাকলেও ফের দমড়ো জালে আটকা পড়ে যায়।

২০ ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশ-মিয়ানমার শূন্য রেখার কোনার পাড়া এলাকায় ৬ হাজারের অধিক রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফেরৎ নেওয়ার কথা বললে মিয়ানমার সরকার কিছু কিছু রোহিঙ্গারা রাতের আধারে পালিয়ে যায় ক্যাম্প ছেড়ে।

কারণ রোহিঙ্গারা প্রত্যাবাসিত হলে সেখানে তাদের বাসতভিটা খেত খামার, জায়গা জমি ফিরে পাবেনা এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দিন কাটাতে এ ভয়ে উখিয়া-টেকনাফে অবস্থানরত অন্তত ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা ভীতসন্ত্রস্ত্র সঙ্কায় রয়েছে।

কুতুপালং ক্যাম্পের ডাক্তার জাফর আলম জানান, তারা জানেনা মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক হওয়ার পরও এখনো রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের কোন হদিস নেই। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কাজ বাধাগ্রস্ত করতে ত্রিমুখী ষড়যন্ত্র চলছে। বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সমস্যা জিইয়ে রাখতে শুরু হয়েছে স্বার্থান্বেষী মহলের অপতৎপরতা।

সরকার রোহিঙ্গাদের নিরাপদে স্বদেশে ফেরত পাঠাতে কূটনৈতিক আলোচনাসহ বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে চলছে। কিন্তুরোহিঙ্গাদের দুটি সংগঠন ও কয়েকটি এনজিও প্রত্যাবাসন বিরোধী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। ষড়যন্ত্রকারীদের নানা অপতৎপরতায় স্থানীয়দের মধ্যেও দেখা দিয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।

সীমান্ত এলাকার অধিবাসীরা জানান, আন্তর্জাতিকচাপে পড়ে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরৎ নেওয়ার ব্যাপারে সবসময় ষড়যন্ত্রের ফাদ ফাদছেন। তাছাড়া স্বার্থান্বেষী কতিপয় এনজিও সংস্থায় এই সুযোগকে কাজে লাগাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। রোহিঙ্গারা তাৎক্ষনিক ভাবে বিভিন্ন সময়ে মিয়ানমারে ফেরৎ যাবেনা বলে ক্যাম্পের অলিগলিতে বিক্ষোভ মিছিলও করেছে।

তাদের একমাত্র দাবী জায়গা জমি, ঘর বাড়ি নাগরিক অধিকার, মৌলিক অধিকার ও তাদের চলাফেরা সহ পূর্ণ স্বাধীনতা না দিলে তারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে রাজি নই বলে বালুখালী ক্যাম্পের হেডমাঝি আবু তাহের জানান। তারা আরো বলেন, তারা মিয়ানমারে গিয়ে মগ সেনাদের হাতে প্রাণ না দিয়ে এখানে মরতে রাজি আছে।

বাংলাদেশ পার্সপোর্ট এন্ড ইমিগ্রেশনে অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু নোমান মুহাম্মদ জাকের হোসেন জানিয়েছেন শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারী) পর্যন্ত এদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে নতুন-পুরাতন মিলে ১০ লাখ ৭৬ হাজার ৬৪০ জন রোহিঙ্গাকে নিবন্ধনের আওতায় আনা হয়েছে। নিবন্ধিত ওই সব রোহিঙ্গাদের আইডি কার্ড দেওয়া হয়েছে, যাতে ত্রাণ বিতরণসহ বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে রোহিঙ্গাদের ঝামেলা পোহাতে না হয়।

সূত্র জানায়, রোহিঙ্গাদের সঙ্কট বিশ্বের এক মানবিক সমস্যা। রাখাইন রাজ্যের অভ্যন্তরীণ এ সমস্যাটি বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের বোঝা। অতীতেও দেখা গেছে, মিয়ানমারের সরকারী বাহিনী রোহিঙ্গাদের মাতৃভূমি থেকে বিতাড়ন করে বাংলাদেশে ঠেলে দিতে বার বার চেষ্টা চালিয়েছে। দেশ স্বাধীনের পর অন্তত ৫ বার রোহিঙ্গারা এদেশে অনুপ্রবেশ করেছে।

তবে অতীতের চেয়ে এবারে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বহুগুণ বেশি। ইতোপূর্বে প্রত্যাবাসনে ফাঁকি দিয়ে অনেক রোহিঙ্গা থেকে গেছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। কৌশলে তারা দীর্ঘদিন এদেশে বসবাস করলেও কোন সময় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষাবলম্বন করেনি।

নিজেদের স্বার্থকেই প্রাধান্য দিতে মরিয়া রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠী প্রত্যাবাসন বিরোধী কর্মকান্ড চালিয়েছে। এবারও ওই পুরনো রোহিঙ্গা ক্যাডাররা প্রত্যাবাসনের সিদ্ধান্ত বিরোধী কর্ম তৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে বলে বালুখালী ১নং ক্যাম্পের লালু মাঝি জানিয়েছেন।

এদিকে যার কারণে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, উগ্রবাদ, সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে নানাবিধ সমস্যা নিরসনের লক্ষে পুলিশ, বিজিবি, কোষ্ট গার্ড সহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন রোহিঙ্গাদের উপর নজর রাখছে। তবুও গত ১ মাসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন শিবিরে উগ্রপন্থী রোহিঙ্গাদের কারণে ৪ জন খুন হয়েছে এবং র‌্যাব-৭ কক্সবাজার বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে।

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র সংগঠন আল-ইয়াকিন (আরসা), আরএসও এবং একাধিক এনজিও প্রতিনিধি নিজ নিজ অবস্থান থেকে রোহিঙ্গা সমস্যা জিইয়ে রাখার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। টেকনাফ ও উখিয়ায় আশ্রিত নতুন ও পুরনো মিলে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চিহ্নিত তিনটি গ্রুপনিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি করার জন্য পরিকল্পনা নিয়েই গোপনে নানা ষড়যন্ত্রের কলকাঠি নাড়ছে। এদিকে এ সমস্যাকে উখিয়া ও টেকনাফের বিপুল জনগোষ্ঠি ভীতিসন্ত্রস্ত্র অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে বলে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা নুরুল হক জানিয়েছেন।

পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির সদস্য সচিব এম.গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঠেলে দিতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও দেশটির বিদ্রোহী গ্রুপ আরসার সন্ত্রাসীদের মধ্যে যোগসাজশ রয়েছে। এছাড়াও রোহিঙ্গাদের সেবায় নিয়োজিত কিছু ভিন দেশী এনজিও সংস্থার লোকজন রোহিঙ্গাদের উস্কানি দিয়ে প্রত্যাবসন বিরোধী কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে।

অভিজ্ঞজনরা বলেন, লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়ে মিয়ানমার সেনা বাহিনী যেমন উল্লাসিত, তেমনি রাখাইনে ঘটনা সৃষ্টিকারী রোহিঙ্গাদের বিদ্রোহী জঙ্গী সংগঠন আরসার সন্ত্রাসীরাও একেবারে চুপচাপ। সম্পূর্ণ পর্দার আড়ালে চলে গেছে আরসার ক্যাডাররা।

এ জন্য রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গাদের বিতাড়নে মিয়ানমার সেনা বাহিনী ও আরসার মধ্যে গোপন আঁতাত থাকতে পারে বলে মত প্রকাশ করেছেন তারা। আরএসওর যেসব ক্যাডার আরসায় যোগ দিয়েছে, তাদের সঙ্গে পুরনো রোহিঙ্গা নেতাদের যোগাযোগের বিষয়টিকেও উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না।

তারা আরও বলেন, ১৯৮২ সালে রোহিঙ্গাদের নাকরিকত্ব কেড়ে নেয়ার আইন করার পর থেকে দেশটিতে রোহিঙ্গা শূন্য করার সুযোগ খুঁজছিল।আন্তর্জাতিক ভাবে চাপের মুখে না পড়ার লক্ষ্যে আল-ইয়াকিনকে (আরসা) হাতে নেয় মিয়ানমার। তাদের সেই উদ্দেশ্য সফল হয়েছে মনে করেন স্থানীয় সচেতনমহল। তাই রাখাইন থেকে ঠেলে দেয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে সহজে ফিরিয়ে নিতে চাইবে না মিয়ানমার। আশ্রিত রোহিঙ্গারাও এনজিও এবং আরএসওর উস্কানিতে সহজে স্বদেশে ফিরে যেতে আগ্রহী হবে না।

বিশ্বের চাপে পড়ে কিছু রোহিঙ্গা ফেরত নিলেও মাঝপথে বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করতে পারে মিয়ানমার। এ জন্য বাংলাদেশের ওয়ার্কিং গ্রুপকে কঠোর হওয়ার এবং প্রত্যাবাসনের সুবিধার্থে সীমান্ত এলাকা থেকে সরিয়ে রোহিঙ্গাদের ঠেঙ্গারচর-ভাসানচরে স্থানান্তর করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চুক্তি হলেও প্রতিনিয়ত উখিয়া-টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। বিপুল পরিমাণ রোহিঙ্গা আসার কারণে রোহিঙ্গাদের সেবার নামে কর্মতৎপরতা শুরু করে শতাধিক এনজিও সংস্থা। তারা উপজেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় না রেখে রোহিঙ্গা শিবিরে কাজ করে যাচ্ছে।

ইতিমধ্যে চিহ্নিত কিছু এনজিও রোহিঙ্গাদের নামে বিদেশী ফান্ড এনে ইচ্ছেমতো খরচ করতে রোহিঙ্গাদের প্রতি জামাই আদরের মত মমতা বাড়িয়ে দিয়েছে। অতি দরদ দেখাতে রোহিঙ্গা শিশুদের কোলে নিয়ে নিজ হাতে খাইয়ে দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে ওই এনজিও কর্মীরা রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসন না হওয়ার জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।

টেকনাফ ও উখিয়ায় ১২টি অস্থায়ী ক্যাম্পে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার আগমনে অত্যন্ত খুশি পুরনো রোহিঙ্গা নেতারা। রোহিঙ্গাদের অসহায়ত্বের কথা বলে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশ থেকে অর্থ করে সিংহভাগ টাকা আত্মসাৎ করতে বিভিন্ন কৌশল হাতে নিয়ে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বিরোধী কথাবার্তা বলে পুষ মানিয়ে রাখছে।

২নং ক্যাম্পের ফয়েজ মাঝি জানান, বাংলাদেশ সরকার মিয়ানমার থেকে পারিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের খাদ্য স্বাস্থ্য সেবা, জল, চাল, ডাল ও কাপড় চোপড় সব কিছু দিয়ে রোহিঙ্গাদের উৎসাহ দিয়ে রাখা হয়েছে। যে কারণে কর্মহীন রোহিঙ্গারা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সে আরো জানান, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কবে হবে এ নিয়ে তারা আপাতত ভাবছে না।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী জানান, এদেশে রোহিঙ্গা আসার আজ ৬মাস পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু যে ভাবে সরকার আগ্রহ করে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য দেশ বিদেশে ঘুরে ফিরেছে তাতে এতদিনে রোহিঙ্গারা স্বদেশে ফিরে যাওয়ার কথা। কিন্তু ক্যাম্পে অবস্থান নিয়ে কতিপয় এনজিও সংস্থার কর্তা ব্যক্তিরা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে না ফেরার জন্য ইন্ধন যোগাচ্ছে। এর একমাত্র কারণ বিদেশ থেকে আসা কোটি কোটি টাকা থেকে তারা বঞ্চিত হবে। এ জন্য ওই সব এনজিওরা রোহিঙ্গা সমস্যা জিইয়ে রাখার জন্য তত্পর বলে তিনি অভিযোগ করেন।

রোহিঙ্গা নাগরিকদের চিহ্নিতকরণ কমিটির সভাপতি চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আব্দুল মান্নান বলেন, রোহিঙ্গাদের কারনে এদেশে ভূমি, পরিবেশ, জীববৈচিত্র, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দ্রব্যমূল্যের গতি পরিবর্তন ও আইনশৃংখলা পরিস্থিতি হুমকির মূখে পড়লেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে সহায় সম্বলহীন নিরাশ্রয় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে যে মহানুবভতার পরিচয় দিয়েছে তা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তিনি বলেন, এসরকার বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্টিকে খাদ্য,বাসস্থান,ওষুধ সরবরাহসহ সব ধরনের সুযোগ সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন করার একটি চুড়ান্ত রূপ রেখায় উপনীত হয়েছে। এতে মোটামুটি সরকার সাফল্য।

কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (যুগ্ম সচিব) মোঃ আবুল কালাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ৬ লাখ ৯০ হাজার রোহিঙ্গা এদেশে পালিয়ে এসে উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। এদের খাদ্য ও মানবিক সহায়তা প্রদান করছে সরকারের পাশাপাশি প্রায় ১৪০টি এনজিও সংস্থা। তিনি বলেন, আশ্রিত এসব রোহিঙ্গাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ ঘটন করা হয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে ট্রানজিট ক্যাম্প। যেসব রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের চূড়ান্ত বিবেচনায় আসবে ওইসব রোহিঙ্গা পরিবারদের সাময়িক ভাবে ট্রানজিট ক্যাম্পে রাখা হবে। পরে সেখান থেকে মিয়ানমারের ট্রানজিট ক্যাম্পে কর্মরত যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্যের হাতে রোহিঙ্গাদের হস্তান্তর করা হবে। তিনি এও বলেন, আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থিত রোহিঙ্গাদের পরিবার ভিত্তিক তালিকা প্রণয়ন করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭ লাখ মানুষ। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এ ঘটনায় খুঁজে পেয়েছে মানবতাবিরোধী অপরাধের আলামত।

মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি আর ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স নিজস্ব অনুসন্ধানের মধ্য দিয়ে তুলে এনেছে নারকীয় হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের ভয়াবহ বাস্তবতা। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। রাখাইনের সহিংসতাকে জাতিগত নিধন আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ। তবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সরকার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, তারা জঙ্গি সংগঠন আরকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) দমনে অভিযান চালিয়েছে।

523 ভিউ

Posted ৮:৩১ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com