কক্সবাংলা ডটকম :: মার্কিন স্বরাষ্ট্র সচিব মাইক পম্পেও কড়া বার্তা দিলেন চীনকে। লাদাখে ভারত-চীন সীমান্ত অচলাবস্থার আবহে তিনি বললেন, যে কোনও হুমকিকে আটকাতে ভারতের পাশে আছে আমেরিকা। ভারতের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে তাঁর দেশের সমর্থনের কথাও জানান তিনি।
পম্পেও এবং প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক টি এসপার সোমবার ভারতে এসেছেন দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের জন্য।
লাদাখে ১৭৫ দিনের অচলাবস্থা নিয়ে ৪০ মিনিট বৈঠক হল সাউথ ব্লকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে।
দিল্লিতে জাতীয় যুদ্ধ স্মারক ঘুরে এসে পম্পেও বলেন, গালওয়ান উপত্যকায় যে সেনারা প্রাণ দিয়েছেন, তাদের আমরা শ্রদ্ধা জানিয়েছি। ১৫ই জুন চীনা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা শহিদ হয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, “ভারতের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষার্থে পাশে দাঁড়াবে আমেরিকা। আমাদের দেশ সমস্ত ক্ষেত্রে অংশীদারিত্ব বাড়াতে একসঙ্গে কাজ করতে দায়বদ্ধ।”
বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, গত ২ দশকে ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক আরও জোরদার হয়েছে। এই সহযোগিতার একটি নয়, দুটি কারণ রয়েছে – একটি ভারত ও আরেকটি আমেরিকা।
পম্পেও বলেন, “আমাদের নেতারা ও নাগরিকরা স্পষ্ট দেখতে পারছে, চীনা কমিউনিস্ট পার্টি গণতন্ত্রের বন্ধু নয়, মুক্ত, খোলামেলা ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিকের বন্ধু নয়। আমি আনন্দের সঙ্গে বলছি ভারত ও আমেরিকা সমস্ত হুমকির বিরুদ্ধে সহযোগিতা আরও দৃঢ় করতে সমস্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “এখন পরিস্থিতি আরও গুরুতর হয়েছে, আমরা হাত মিলিয়েছি আমাদের জনগন ও সহযোগীদের চীনা কমিউনিস্ট পার্টির শোষণ, দুর্নীতি ও অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচাতে। তিনি উদাহরণ দেন, দক্ষিণ ও পূর্ব চীনা সমুদ্রে, হংকং, হিমালয় ও তাইওয়ানে চীনের ভূমিকা নিয়ে।
মার্কিন সামরিক স্যাটেলাইটের ছবি পাবে ভারত, চুক্তি স্বাক্ষর
লাদাখে চীনের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনার মধ্যেই, মার্কিন সামরিক স্যাটেলাইটের রিয়েল-টাইম ছবি ও তথ্য পেতে আমেরিকার সঙ্গে চুক্তি সই করল ভারত। এর মাধ্যমে ভারত নিখুঁতভাবে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও যুদ্ধবিমান পরিচালনা করতে পারবে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক টি এসপার এখন ভারতে সফরে আছেন।
আজ মঙ্গলবার নয়াদিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউসে পম্পেওসহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী এসপার এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের মধ্যে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী ‘টু প্লাস টু’ আলোচনার পর বেসিক এক্সচেঞ্জ অ্যান্ড কোঅপারেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (বিইসিএ) শীর্ষক এই চুক্তিটি সই হয়।
আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাত্র এক সপ্তাহ আগে পম্পেও এ আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের গত ১৪ জুন লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ২০ ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘যে কোনো হুমকি মোকাবিলায় আমেরিকা ভারতের পাশে আছে।’
তিনি বলেন। ‘গণতন্ত্র ও মূল্যবোধ রক্ষায় আমেরিকা ও ভারত আরও কাছাকাছি থেকে কাজ করছে।’
‘টু প্লাস টু’ আলোচনার আগে পম্পেও ভারতের ‘সার্বভৌমত্ব রক্ষার’ প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের কথা ব্যক্ত করেন।
এরপর, ভারতের ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল পরিদর্শন করার সময় তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি গালওয়ান উপত্যকায় যে সৈন্যরা জীবন দিয়েছেন, আমরা তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। ভারতের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষায়, পাশে থাকবে আমেরিকা।’
এ সময় জয়শঙ্কর বলেন, ‘আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা এখন একসূত্রে গাঁথা এবং ইন্দো-প্যাসিফিক আমাদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।’
এসপার ভারত-মার্কিন প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বৃদ্ধির কথা বলেন। রাজনাথ এর সঙ্গে যোগ করেন, ‘ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা আবারও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলাম। এখানে চীনের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও সামরিক দৃঢ় অবস্থান নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটনের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সামরিক সহযোগিতা ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। যৌথভাবে প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের উন্নয়নের জন্য আমরা প্রকল্প বাছাই করছি।’
Posted ৯:৪৯ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta