শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশিদের সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

শুক্রবার, ২৬ জুন ২০২০
213 ভিউ
সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশিদের সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

কক্সবাংলা ডটকম(২৫ জুন) :: সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে বড় অঙ্কের অর্থ থাকার হালনাগাদ পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে। ২০১৯ সাল শেষে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশের নামে রয়েছে ৬১ কোটি ৩২ লাখ সুইস ফ্রাঁ। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ফ্রাঁ ৯০ টাকা) যার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৫ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা।

২০১৮ সালে এর পরিমাণ ছিল ৬২ কোটি ২৫ লাখ সুইস ফ্রাঁ বা প্রায় ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এ হিসাবে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের নামে থাকা অর্থের পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় খুব সামান্য কমেছে। সুইস ব্যাংকে থাকা এই অর্থের একটি অংশ পাচার হয়ে থাকে বলে ধারণা করা হয়। তবে পাচার সম্পর্কে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায় না এমনকি আমানত হিসেবে কার কত অর্থ আছে তাও জানা যায় না।

বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (এসএনবি) ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড-২০১৯’ নামে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে সে দেশের ব্যাংক ব্যবস্থায় বিভিন্ন দেশের নামে পাওনা ও দায়ের তথ্য রয়েছে।

প্রতিবেদনটি বিশ্নেষণে দেখা যায়, বাংলাদেশের নামে সে দেশের ব্যাংক ব্যবস্থায় মোট দায় ৬০ কোটি ৩০ লাখ সুইস ফ্রাঁ। এর সঙ্গে সম্পদ ব্যবস্থাপকের মাধ্যমে আরও ১ কোটি সুইস ফ্রাঁ বিনিয়োগ হিসেবে রয়েছে। মোট দায়ের মধ্যে গ্রাহকের সরাসরি আমানত রয়েছে প্রায় ২ কোটি ফ্রাঁ বা ১৮০ কোটি টাকা। এর বাইরে সে দেশের ব্যাংক ব্যবস্থায় বাংলাদেশের পাওনা এবং তাদের দায়ের পরিমাণ ৫৮ কোটি ৩২ লাখ ফ্রাঁ।

প্রতিবেদনের সুইজারল্যান্ডের ২৪৬টি ব্যাংকের পরিসংখ্যান ব্যবহার করা হয়েছে।

এতে দেখা যায়, সার্বিকভাবে সে দেশের ব্যাংক ব্যবস্থায় বিদেশি গ্রাহকের আমানত কমেছে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। তবে সার্বিকভাবে অন্য দেশগুলোর প্রতি দায় বেড়েছে প্রায় ৬ শতাংশ। ভারতের নামে সুইস ব্যাংকে দায় রয়েছে ৮৯ কোটি ফ্রাঁ, যা ২০১৮ সালে ছিল ৯৪ কোটি ফ্রাঁ। অন্যদিকে পাকিস্তানের কাছে দায় ২৭ কোটি থেকে কমে ৩৬ কোটি ফ্রাঁতে নেমেছে।

মতামত জানতে চাইলে গবেষণা সংস্থা সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, সুইজারল্যান্ডের ব্যাংক ব্যবস্থায় থাকা অর্থকে একটি অংশ পাচার বলে ধারণা করা হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশি নাগরিকদের অনেকেই বিদেশে বৈধভাবে আয় করে দেশে আনেন না। বাণিজ্য প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকা একটি অংশ হয়তো দেশে না এনে সেখানকার ব্যাংকে রেখে দেয়।

তিনি বলেন, দেশে অর্থ পাচার ও দুর্নীতিবিরোধী আইন আছে এবং প্রতিরোধের জন্য প্রতিষ্ঠান আছে। তারপরও অর্থ পাচার ঘটছে। দুর্নীতিবিরোধী জিরো টলারেন্সের কথা শুধু মুখে না বলে রাজনৈতিক অঙ্গীকারের মাধ্যমে কাজে প্রমাণ করতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

কয়েক বছর ধরে সুইস ব্যাংকে টাকার পরিমাণ নিয়ে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। ২০১৭ সালে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকা নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদকে ‘অতিশয়োক্তি’ বলে দাবি করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

জাতীয় সংসদে তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে ব্যাংকের মাধ্যমে যে লেনদেন হয়, তা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, যা পাচার নয়। তবে কিছু অর্থ পাচার হয়। ব্যক্তি খাতে অনেক বাংলাদেশি নাগরিক যারা বিদেশে কাজ করছেন অথবা স্থায়ীভাবে অবস্থান করছেন তাদের হিসাবও এখানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশের নামে থাকা অর্থের বেশিরভাগই বাণিজ্যকেন্দ্রিক। এ দেশের ব্যাংকগুলোর পাওনা হিসেবে যা উল্লেখ করা হয়। গ্রাহকের আমানত হিসাবে যে অর্থ থাকে তার মধ্যে বিদেশে চাকরি করেন এমন বাংলাদেশিদের অর্থও রয়েছে। গ্রাহক আমানতের একটি অংশ পাচার হতে পারে বলে সন্দেহ করা হয়।

জানা যায়, বাংলাদেশের কোনো নাগরিক বা প্রতিষ্ঠান যদি নিজের বদলে অন্য দেশের নামে অর্থ গচ্ছিত রেখে থাকে তাহলে তা এই হিসাবের মধ্যে আসেনি। একইভাবে সুইস ব্যাংকে গচ্ছিত রাখা মূল্যবান শিল্পকর্ম, স্বর্ণ বা দুর্লভ সামগ্রীর আর্থিক মূল্যমান হিসাব করে এখানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। অনেক দেশের নাগরিকই মূল্যবান এসব সামগ্রী সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকের ভল্টে রেখে থাকেন।

ওয়াশিংটন ভিত্তিক গবেষণা ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) অর্থ পাচার নিয়ে কাজ করে। সংস্থাটি বাণিজ্যের আড়ালে কোন দেশ থেকে কী পরিমাণ অর্থ পাচার হয় তার প্রাক্কলন করে। জিএফআই গত মার্চে এ বিষয়ে তাদের বৈশ্বিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। জিএফআইর প্রাক্কলন অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানি ও রপ্তানির মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে বছরে ৬৪ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়।

বাংলাদেশ থেকে যে উল্লেখযোগ্য অঙ্কের অর্থ পাচার হয় তা সরকারও বিভিন্ন সময়ে স্বীকার করেছে। আগামী অর্থবছরের বাজেটে অর্থ পাচার বিষয়ে আয়কর অধ্যাদেশে নতুন ধারা সংযোজন করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। এতে বলা হয়েছে, যে পরিমাণ অর্থ আন্ডার ইনভয়েসিং ও ওভার ইনভয়েসিং করে পাচার করা হয়েছে এবং যে পরিমাণ প্রদর্শিত বিনিয়োগ ভুয়া হিসাব প্রমাণিত হবে তার ওপর ৫০ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হবে।

213 ভিউ

Posted ২:৪৬ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৬ জুন ২০২০

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com