কক্সবাংলা ডটকম(২৪ জুলাই) :: দীর্ঘদিন পর বিএনপি নেতাদের সঙ্গে দেখা করলেন বেগম খালেদা জিয়া। দেখায় অবশ্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হয়েছিল। বেগম খালেদা জিয়ার কাছ থেকে বেশ দূরেই ছিলেন স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্য।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে কয়েকজন ঈদের দিন রাতে সুধাসদনে গিয়েছিলেন বেগম জিয়া`র সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে একজন বলেছেন যে, এই বৈঠকটি ছিল সৌজন্য সাক্ষাৎ, ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা।
কিন্তু সৌজন্য সাক্ষাৎ হলে কি হবে এই বৈঠকে বেগম জিয়ার সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথাবার্তা বলেছেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ। তার মূল বিষয় ছিল যে, তিনি মাঝে মাঝে একটা দুইটা বিষয়ে বিবৃতি দিতে পারেন কিনা। খালেদা জিয়া বিদেশ যাওয়ার চিন্তাভাবনা কি ইত্যাদিও জানতে চেয়েছেন নেতারা। বেগম খালেদা জিয়া এমনিতেই কম কথা বলেন কিন্তু সেদিন আরো কথা বলেননি শুধু রহস্যময় হাসি হেসেছেন।
বেগম জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন এরকম একজন স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া সঙ্গে আমরা শুধু কুশল বিনিময় করেছি। তিনি সবাইকে জিজ্ঞেস করেছেন কেমন আছেন? এর বাইরে কোনো বিষয় নিয়েই তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
বিএনপি`র ওই নেতা বলেন, আমরাই উপযাচক হয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম।
এই প্রশ্নগুলোর উত্তরে বেগম খালেদা জিয়া শুধু রহস্যময় হাসি হেসেছেন, কোনো কথা বলেননি। বেগম খালেদা জিয়ার কাছে যে সমস্ত বিষয় নিয়ে কথা বলেছিলেন বিএনপি নেতাদের মধ্যে তার মধ্যে, প্রথম বেগম খালেদা জিয়ার শরীর কেমন আছে এর উত্তরে বেগম খালেদা জিয়া মাথা নেড়ে হেসেছেন।
দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিল যে, তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে চান কিনা? এজন্য বিএনপি`র কিছু করণীয় আছে কিনা। বেগম খালেদা জিয়া এই প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি। বরং তিনি মাথা নেড়ে হেসেছেন।
বেগম খালেদা জিয়ার কাছে তৃতীয় প্রশ্ন ছিল যে, কোনো কোনাে বিষয়ে তিনি কিছু কিছু বিবৃতি দিতে পারেন কিনা। তিনি চাইলে তার পক্ষ থেকে দলের দপ্তর থেকে এ ধরনের বিবৃতিগুলো দেওয়া যেতে পারে।
বিশেষ দিবসে যেমন ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, ঈদের শুভেচ্ছা বাণী ইত্যাদি দিতে সমস্যা আছে কিনা এবং বেগম খালেদা জিয়ার সম্মতি আছে কিনা। এই এরকম বিবৃতিগুলো দেয়া প্রয়োজন বলেও বিএনপি`র দুইজন স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম খালেদা জিয়ার কাছে বলেছেন। কিন্তু এর জবাবে বেগম খালেদা জিয়া কিছুই বলেননি।
বেগম খালেদা জিয়া শুধু মৃদু হেসেছেন। ভবিষ্যতে বিএনপি কি করবে এবং বিএনপি কি আন্দোলনে যাবে কিনা বড় ধরনের। এরকম বিষয় নিয়েও বেগম খালেদা জিয়ার মতামত চাওয়া হয়েছিল ওই সৌজন্য সাক্ষাতে। কিন্তু সে ব্যাপারেও বেগম খালেদা জিয়া কোনো মুখ খোলেননি। বরং তিনি শুধু মৃদু হেসেছেন।
বেগম খালেদা জিয়ার কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, তিনি কি রাষ্ট্রপতির কাছে দণ্ড মওকুফের কোনো চিন্তা-ভাবনা করছেন কিনা। সেটারও উত্তর বেগম খালেদা জিয়া দেননি। তার এই রহস্যময় হাসি এবং নীরবতা বিএনপিকে বিব্রত করেছে এবং বিএনপি নেতৃবৃন্দ মনে করছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার এই রহস্যময় হাসি বিএনপিকে আরও দুর্বল করে তুলবে।
এমনিতেই বেগম খালেদা জিয়া গত বছরের ২৪ মার্চ থেকে মুক্ত অবস্থায় আছেন। এই মুক্ত অবস্থায় থাকার পরও তিনি কোনো বিষয়ে কোনো মন্তব্য, বক্তব্য, বিবৃতি দিচ্ছেন না। যেহেতু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন যে, বেগম খালেদা জিয়া আসলে মুক্ত নন।
তিনি শুধু কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ফিরোজা এসে আছেন। এক রকম বন্দী জীবনযাপন করছেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠলো বেগম খালেদা জিয়া যদি বন্দীই থাকবেন তাহলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা কিভাবে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান।
ঈদের দিন বেগম খালেদা জিয়া তার লন্ডন প্রবাসী পুত্র তারেক জিয়ার সাথে টেলিফোনে কথা বলেছেন, নাতি-নাতনীদের সাথে কথা বলেছেন। কথা বলেছেন কোকোর স্ত্রী এবং পুত্রের সঙ্গেও। আর এরকম একটি পরিস্থিতিতে বেগম খালেদা জিয়ার হাসি বিএনপিকে এক অজানা শঙ্কায় নিয়ে গেছে।
Posted ৭:১৭ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৪ জুলাই ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta