হেলাল উদ্দিন, টেকনাফ :: সেন্টমার্টিনের ছেঁড়াদিয়া পর্যটকের যাতায়াত বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনের মতো সোমবার ঢিলেঢালা ধর্মঘট পালন করা হয়েছে।তবে দ্বীপে বেড়াতে আসা পর্যটকদের দুর্ভোগ ও স্বার্থের কথা বিবেচনা করে ভ্যানগাড়ি, অটোরিকশা (টমটম) ও খাবার হোটেল (রেস্টুরেন্ট) ধর্মঘটের আওতার বাইরে রাখা হয়।
গত রোববার থেকে তিনদিনের সেন্ট মার্টিনের বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠনের ঘোষণায় এই ধর্মঘট পালন করে আসছে।
সেন্ট মার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর আহমদ ও সার্ভিস বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আলম বলেন, ধর্মঘটের প্রথমদিন রোববার সেন্ট মার্টিন দ্বীপে বেড়াতে আসা পর্যটকদের ভোগান্তির কারণে কিছুটা কর্মসূচি পরিবর্তন করা হয়েছে। দ্বীপে বেড়াতে আসা পর্যটকদের দুর্ভোগ ও স্বার্থের কথা বিবেচনা করে ভ্যানগাড়ি, অটোরিকশা (টমটম) ও খাবার হোটেল (রেস্টুরেন্ট) ধর্মঘটের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। তবে বন্ধ রাখা হয়েছে সার্ভিস বোট, দোকানপাট, স্পিড ও গামবোটে পর্যটক পরিবহন।
এদিকে সোমবার দুপুরের সেন্টমার্টিন জেটিঘাটে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে পূর্বের ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিশাল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ আজও অনুষ্ঠিত হয়েছে । মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন-উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি সরোয়ার আলম, সার্ভিস বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আলম, ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম, ইউপি সদস্য হাবিব খান , আব্দুর রহিম জিহাদী প্রমূখ।
অপরদিকে, একই দিন বিকালে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও বরাবরে পরিবেশের জারি করা গণবিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। আজ রাতে সেন্টমার্টিন দ্বীপে ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার দিন তারিখ ঠিক করা হবে।
স্মারকলিপি দেওয়া সময় উপস্থিত ছিলেন সেন্টমাটিন ইউপি চেয়ারম্যান নূর আহমেদ, হোটেল ও কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান, স্পিডবোট ও গামবোট মালিক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, মানবতার মা , প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা চাইলে দ্বীপের বাসিন্দাদের আয় রোজগারের স্বাভাবিক করে দিতে পারেন। বছরের চার মাস দ্বীপের ছয় হাজারের বেশি বাসিন্দা পর্যটন ব্যবসা ঘিরে সংসার চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের পেটে লাথি না মারে, জীবিকার পথ খোলা রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সেন্ট মার্টিনের পরিবেশ-প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পরিবেশ অধিদপ্তর ২ জানুয়ারি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে। এতে ছেঁড়াদিয়া দ্বীপে পর্যটকের যাতায়াত বন্ধ করার কথা বলা হয়।
রোববার ধর্মঘটের কারণে দ্বীপটিতে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দোকানপাট, অটোরিকশা, ভ্যানগাড়িসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখার ফলে দিতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের নানা ধরনের দুর্ভোগ পোহাতে দেখা যায়। পর্যটকদের কথা বিবেচনা করে কর্মসূচিতে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে আরও বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ।
কক্সবাজারের পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি (ইয়েস) প্রধান নির্বাহী এম ইব্রাহিম খলিল মামুন বলেন, সবার আগে দ্বীপকে বাঁচিয়ে রাখা উচিত। সরকার আইনের কথা বললেও স্থানীয় প্রশাসন সেটি বাস্তবায়ন করতে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে। তারমতে, মানুষ অধিকার আদায়ের জন্য ধর্মঘট ডাকতে পারে, তাই বলে দ্বীপকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া যায় না। যদি দ্বীপ রক্ষা করতে না পারলে সেখানকার মানুষ কোথায় যাবে।
দ্বীপের বাসিন্দাদের আয় রোজগারের পথ বন্ধ হওয়ার উপক্রম থেকে তাদের বাঁচানোর জন্য একটি স্মারকলিপি প্রদান করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
ইউএনও বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের কাছ থেকে একটি স্মারকলিপি আমার বরাবরই দিয়েছেন। আমি এটি জেলা প্রশাসকসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করছি।
Posted ১:৩৯ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta