শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

হার্নিয়ার ব্যথা থেকে মুক্তি ?

শুক্রবার, ০৩ নভেম্বর ২০১৭
1073 ভিউ
হার্নিয়ার ব্যথা থেকে মুক্তি ?

কক্সবাংলা ডটকম(৩ নভেম্বর) :: তলপেট বা কুঁচকিতে অস্বস্তি? মা হওয়ার পর থেকেই পেটে ব্যথা? হতে পারে হার্নিয়া। শরীরে পুষে রাখবেন না। হার্নিয়ার অপারেশন ছাড়া বিকল্প পথ নেই। অত্যাধুনিক ই-টেপ অপারেশনে থাকছে না কোনও জটিলতা। কেমন সেই পদ্ধতি।

পেটের বা কুঁচকির মাংসপেশিতে কোনও ফুটো বা ছিদ্র থাকলে হার্নিয়া হয়। প্রকৃতিগত দিক থেকে পেটের ভিতরের অন্ত্র, চর্বি ওই ফুটো দিয়ে বাইরে আসার চেষ্টা করে। হাঁচি, কাশি বা যে কোনও কারণে পেটে চাপ পড়লে অন্ত্র ওই ফুটো দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করে বলে রোগীর মনে হয়। দীর্ঘদিন যখন ওই ফুটোর মধ্যে অন্ত্র অবস্থান করে তখন রোগীর প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয় ও একইসঙ্গে শরীরে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা তৈরি হয়।

কেন হয়?
মহিলাদের থেকে পুরুষদের হার্নিয়া বেশি হয়, এই ধারণা ঠিক নয়। তবে পুরুষদের কুঁচকিতে হার্নিয়া বেশি হয়। পুরুষদের ক্ষেত্রে মায়ের গর্ভে থাকাকালীন অণ্ডকোষ বাচ্চার কিডনির সঙ্গে পিঠে একই জায়গায় বৃদ্ধি পায়। প্রসবের পরে নাভি থেকে কুঁচকির দিকে নেমে আসে। ওই পথ বেশিরভাগ সন্তানের বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু অনেক বাচ্চার তা হয় না। যাদের প্রথম থেকে পথ খোলা থাকে তাদের জন্ম থেকেই হার্নিয়া থাকে।

একে ‘কনজেনিটাল’ বা জন্মগত হার্নিয়া বলে। অনেকের আবার অস্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায়, কিন্তু বয়স বাড়তে বাড়তে ওই পথ খুলে যায়। তখন হার্নিয়া ধরা পড়ে। মহিলাদের পেটে ‘ইনসিশনাল’ হার্নিয়া বেশি হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সন্তান প্রসবের সময় মহিলাদের অপারেশনের পরে পেটের মাংসপেশি শিথিল হয়ে যায়। ফলে পেটে হার্নিয়া দেখা যায়।

লক্ষণ:

১. রোগী পেটে কিংবা কুঁচকিতে ব্যথা ও ফোলা অনুভত করেন। অনেকের আবার দেরিতে ব্যথা অনুভূত হয়।
২. বয়স্কদের ক্ষেত্রে হার্নিয়া হলে রোগী খেতে পারেন না, পেট ফুলে যায়। যদি অন্ত্র সম্পূর্ণরূপে কোনও জায়গায় বন্ধ হয়ে যায় তাহলে পেটে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয়।
৩. অনেকের আবার পিঠে, কোমরে ব্যথাও হয়।

ল্যাপারোস্কপি সার্জারি:

হার্নিয়ার একমাত্র চিকিৎসা হল অপারেশন। এর কোনও বিকল্প চিকিৎসা নেই। বর্তমানে হার্নিয়ার চিকিৎসাকে আর ‘হার্নিয়া রিপেয়ার’ বলা হয় না। এখন এই চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ‘অ্যাবডোমিনাল ওয়াল রিকনস্ট্রাকশন’ বলা হয়। ল্যাপারোস্কপি পদ্ধতি চালুর আগে অপারেশন করে পেটের বা কুঁচকির ছিদ্রের চারিদিকে জাল দিয়ে সেলাই করা হত।

কিন্তু এতে কোনও ইতিবাচক ফল পাওয়া যেত না। তাই এখন মাইক্রো সার্জারি করে সংশ্লিষ্ট ফুটোকে বাইরে থেকে বন্ধ করা হয় এবং তার বাইরে জাল লাগানো হয়। পেটের ফুটোয় ল্যাপারোস্কোপ ঢুকিয়ে ভিতর দিয়ে প্লাস্টিকের জাল লাগানো হয়।

এই জালে এমন রায়াসনিক পদার্থ থাকে যাতে অন্ত্র কিংবা অন্যান্য অঙ্গ সেঁটে না যায়। কিন্তু এত বছর ধরে ব্যবহার করা হলেও এই পদ্ধতি ঠিক নয় বলে প্রমাণিত হয়েছে। জার্মানিতে দু’টি গবেষণায় ধরা পড়েছে যে জালের মধ্যে থাকা রাসায়নিকের জন্য পেটের ভিতরে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং বিভিন্ন জটিলতা হচ্ছে।

অত্যাধুনিক ই-টেপ:

হার্নিয়া অপারেশনের জন্য ই-টেপ একদম অত্যাধুনিক পদ্ধতি। এক্ষেত্রে অপারেশনের পর কোনও জটিলতা দেখা যায় না। রোগীদের পুনরায় হার্নিয়া হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে না। ল্যাপারোস্কপিতে যে পদ্ধতিতে জাল লাগানো হয় সেই পদ্ধতিতে জাল লাগানো হয় না। পেটের ভিতরে জাল না দিয়ে মাংসপেশির পিছনের একটি স্তরে পেটের গর্ত বা ক্যাভিটির বাইরে দেওয়া হয়।

অপারেশনের পরে সতর্কতা:

১. অপারেশনের পরে রোগীকে সাধারণত স্বাভাবিক জীবনযাপনের পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে খুব বেশি ভারি জিনিস তোলা, এক্সারসাইজ করা কিছুদিন বন্ধ রাখতে হয়।
২. ধূমপান বন্ধ রাখতে হবে।
৩. ডায়াবেটিস থাকলে সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
৪. ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে কারণ স্থূলতা থাকলে হার্নিয়ার জটিলতা তৈরি হয়।

রিস্ক ফ্যাক্টর:

সাধারণত হার্নিয়ার অপারেশনে কোনও ঝুঁকি নেই। কিন্তু বয়স্ক রোগীর হার্নিয়া বড় আকার নিলে কিংবা রোগীর শরীরের অবস্থা ভাল না থাকলে অত্যন্ত সতর্কভাবে অপারেশন করতে হয়। একইসঙ্গে ডাক্তার হার্নিয়ার অপারেশনের পরামর্শ দিলে একেবারেই দেরি করবেন না কারণ সমস্যা জটিল হয়ে গেলে প্রাণহানিও ঘটতে পারে।

প্রেগন্যান্সির পর:

মহিলাদের ক্ষেত্রে সাধারণত সন্তানের জন্মের পর হার্নিয়ার অপারেশন করা উচিত। যেমন ২৪ বছর বয়সি কোনও তরুণীর যদি প্রথম সন্তান হওয়ার পর হার্নিয়া ধরা পড়ে তাহলে ডাক্তার তার হার্নিয়ার অপারেশন করার আগে অবশ্যই দ্বিতীয় সন্তানের সম্ভাবনার কথা জেনে নেন। যদি দ্বিতীয় সন্তানের সম্ভাবনা থাকে তাহলে তাকে তার পরেই হার্নিয়ার অপারেশনের পরামর্শ দেওয়া হয়। অন্যথা সন্তান হওয়ার ছ’মাসের পর যে কোনও সময় হার্নিয়ার অপারেশন করা যায়। তবে যদি হার্নিয়া জটিল পর্যায়ে পৌঁছে যায় কিংবা রোগী অত্যন্ত ব্যথা অনুভব করেন সেক্ষেত্রে গুরুত্ব অনুযায়ী যথা সময়ে অপারেশন করা হয়।

সাবধান:

যদি আপনার পেটে কিংবা কুঁচকিতে যন্ত্রণা বা ফোলাভাব অনুভূত হয় তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন। একইসঙ্গে যদি দীর্ঘদিন ধরে পেট ফুলে থাকে, পেট খারাপ হয় তাহলেও ডাক্তার দেখান। আপনার স্বাস্থ্যের যথাযথ পরীক্ষার পরই ডাক্তার হার্নিয়া হয়েছে কিনা জানাবেন। পাশাপাশি ডাক্তার অপারেশনের পরামর্শ দিলে দেরি করবেন না। জটিল পর্যায়ে পৌঁছনোর আগেই সঠিক ডাক্তারের কাছে অপারেশন করিয়ে নিন। দেরি করলে বিপদ হবে মারাত্মক।

1073 ভিউ

Posted ১:৩১ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৩ নভেম্বর ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com