বৃহস্পতিবার ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

২ জানুয়ারি ১৭৫৭’ : সিরাজউদ্দৌলার পতনের মূলে চার বিশ্বাসঘাতক

বৃহস্পতিবার, ০৩ জানুয়ারি ২০১৯
363 ভিউ
২ জানুয়ারি ১৭৫৭’ : সিরাজউদ্দৌলার পতনের মূলে চার বিশ্বাসঘাতক

কক্সবাংলা ডটকম( ৩ জানুয়ারি) :: এক মুসলিম নবাব প্রাণপণে চেষ্টা করলেন বাংলা বাঁচাতে। অপরদিকে হিন্দু প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বরা ক্রমাগত সাহায্য করে গেল ইংরেজদের। ফলাফল প্রথমে ইংরেজবাহিনীর কলকাতা দখল এবং পরে বাংলা দখল।

২ জানুয়ারি ১৭৫৭, এমন দিনেই কলকাতা পুনর্দখল করে ইংরেজরা। এরপর পলাশির যুদ্ধে কলকাতা এবং বাংলাকে পরিপূর্ণভাবে দখলে এনেছিল ব্রিটিশরা। বিশ্বাসঘাতকতার সৌজন্যে প্রভাবশালী রায়দুর্লভ মানিকচাঁদ, জগৎ শেঠ এবং উমিচাঁদ।

অনেকটা পিছনে গেলে ছবিটা আরও স্পষ্ট হতে পারে। ১৬০০ খ্রিষ্টাব্দ, টমাস রো কোম্পানিকে চিঠি লিখেছিলেন, আর যাই হয়ে যাক তাদের এই কম সৈন্য নিয়ে স্থলভাগে লড়াই করা যাবে না। তিনি স্পষ্ট বলে দেন, “যদি লাভজনক বাণিজ্য করতে চান তবে তা শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালনা করুন আর সমুদ্রে আপনাদের কার্যক্রম সীমিত রাখুন। বিতর্ক পরিত্যাগ করে এটা নিয়ম হিসেবে গ্রহণ করাই ভালো যে ভারতে স্থলযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার পরিণতি মারাত্মক হতে পারে।”

১৬৮১ সালে স্যার জোসিয়া চাইল্ড কোম্পানি পুরনো নীতি ভুলিয়ে স্থলপথে ভারত দখলের পরিকল্পনা করে। দিল্লির সম্রাটদের সঙ্গে কিছু যোগাযোগ থাকলেও তাদের আসল লক্ষ্য বাংলা তথা কলকাতার দিকে ছিল। কারণ ঐতিহাসিকরা মনে করছেন, এখানে ছিল গঙ্গা নদী যা বানিজ্যের জন্য অসাধারণ জায়গা।

নবাব আলীবর্দী খাঁ পূর্ব ভারতে কোম্পানির ক্ষমতাকে দমিয়ে রেখেছিলেন। সিরাজ নবাব হওয়ার সেই চেষ্টাই করেছিলেন। কিন্তু তাঁর দুর্ভাগ্য তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশ্বাসঘাতকতা এবং বেইমানি। তপন মোহন চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘পলাশীর যুদ্ধ’ বই এমন তথ্যই দিচ্ছে। ভিতরে ভিতরে সিরাজকে ফোঁপরা করে দিয়েছিল কলকাতার প্রভাবশালী রায়দুর্লভ মানিকচাঁদ, জগৎ শেঠ এবং উমিচাঁদ। যদিও এদের সবার উপরে অবশ্যই সিরাজের বাবা নবাব আলীবর্দী খাঁর এক দূর সম্পর্কের বোনের স্বামী মীর জাফর আলী খাঁ।

১৭৫৬, ৯ এপ্রিল নবাব রূপে সিরাজের পদার্পণ। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকেই ‘জঙ্গ’ শুরু হয়ে যায় ইংরেজদের সঙ্গে। প্রতিপদে বনিবনা হতে শুরু করে। ইউরোপে সপ্তবর্ষব্যাপী যুদ্ধের অজুহাতে বাংলায় ইংরেজ ও ফরাসিদের দুর্গ নির্মাণ শুরু হয় বাংলায়। নবাব এতে বাধা দিলে মেনে নেয় ফরাসিরা। ইংরেজ তা মানেনি। ২০ মে, ১৭৫৬ সালে নবাবকে পাঠানো গভর্নর ড্রেকের চিঠিতে দুর্গ তৈরি বন্ধ করার কোনও উল্লেখ ছিল না। নবাবের পূর্ণিয়া যাওয়ার কথা ছিল।

বাধ্য হয়ে সিরাজ পুর্নিয়া না গিয়ে মুর্শিদাবাদে ফিরে আসেন। কলকাতায় ইংরেজদের দমনের উদ্দেশে সসৈন্যে যাত্রা করেন। ১৭৫৬-র ২০ জুন কলকাতার দুর্গ নবাব সিরাজউদ্দৌলার দখলে আসে। গভর্নর ড্রেক ও অন্যান্য ইংরেজ কলকাতা ছেরে পালায়। তবে তাদেরকে টিকিয়ে রাখে প্রভাবশালী হিন্দু উমিচাঁদ, জগৎ শেঠ, রায়দুর্লভ মানিক চাঁদ এবং শোভাবাজার রাজ বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা রাজা নবকৃষ্ণ দেব।

২৭ ডিসেম্বর, ১৭৫৬ সাল , ফের ইংরেজ সৈন্য ও নৌবহরের কলকাতা দখলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এবং ২ জানুয়ারি, ১৭৫৭ সাল , মানিকচাঁদদের বেইমানিতে ইংরেজেরা কলকাতা আবারও দখল করে নেয়। সিরাজ আবারও কলকাতার পথে আসেন। জানুয়ারির শেষের দিকে তিনি হুগলী পৌঁছতেই কলকাতা ছেরে পালায় ক্লাইভের বাহিনী। তবে এবার আগের মতো পুরো সরে যায়নি তারা।

৫ ফেব্রুয়ারি, কলকাতায় সিরাজের শিবির আমির চাঁদের বাগানে আক্রমণ করে ক্লাইভ ও ওয়াটসন। সিরাজের পাল্টা হামল করেন। ক্লাইভরা নবাব শিবির দখল করতে পারেনি। তবে ওই চার জনের সহায়তায় তারা ভিতরে ভিতরে বেশ শক্তিশালী। সবচেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতক অবশ্য সিরাজের রাজ বাড়িতেই ছিল।

এরপর সিরাজের সঙ্গে সরাসরি ইংরেজদের লড়াই পলাশির যুদ্ধে। সিরাজের ৫০ হাজার সৈন্য হেরে গেল ইংরেজদের ৩০০০ সৈন্যের কাছে যাদের অধিকাংশই আবার স্থানীয় ভাড়া করা সৈন্য। এখানেই বড় চাল চেলেছিলেন মির জাফর। ৫০ হাজার সৈন্যের বেশীরভাগই থেকেও লড়লেন না।

অতঃপর বাংলা দখলে সক্ষম ইংরেজ এবং কলকাতাও স্বাভাবিকভাবেই দখলে। পরে কলকাতা পরাধীন ভারতের রাজধানী যা বাংলার হয়েও প্রভাবশালী মানিকচাঁদ, জগৎ শেঠ এবং উমিচাঁদদের বিশ্বাসঘাতকতায় ধীরে ধীরে চলে গিয়েছিল ইংরেজদের হাতে।

প্রসঙ্গত, বাংলা দখলের পর শোভাবাজারে শুরু হয় বিখ্যাত দুর্গাপুজো। যা আজও আড়ম্বর সঙ্গে পালিত হয়। রাজা হন নবকৃষ্ণ। প্রচুর সম্পত্তি নিয়ে প্রতিপত্তি লাভ করন হাওড়ার আন্দুলের রাজ পরিবার।

তথ্য সুত্র : তপন মোহন চট্টোপাধ্যায় তাঁর পলাশীর যুদ্ধ বই

363 ভিউ

Posted ২:১৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৩ জানুয়ারি ২০১৯

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com