কক্সবাংলা ডটকম(২১ ফেব্রুয়ারী) :: রাজধানী ঢাকার চকবাজারে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ গেল ৭৮ জনের। বুধবার রাতে পুরাতন ঢাকার চকবাজার এলাকার একটি বহুতলে আগুন লাগে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কমপক্ষে ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।এদের মধ্যে ৬৬ জন পুরুষ,৭ জন নারী ও ৫ শিশু রয়েছে। কীভাবে আগুন লাগল তা এখনও জানা যায়নি।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা প্রসঙ্গে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ডিরেক্টর জুলফিকর রহমান সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন,বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজারের নন্দনকুমার দত্ত সড়কের পাঁচতলা ভবনে এ আগুন লাগে।একটি ভবনে ভয়াবহ আগুন লেগেছে। নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট। ‘‘এখনও অনেকে নিখোঁজ। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে।’’ অগ্নিকাণ্ডে জখম বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। প্রায় ৫০ জনকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে খবর। অনেকের অবস্থা সংকটজনক বলে জানা গিয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, রাত ১০টার পর পাঁচতলার ঐ ভবনে আগুন লাগে।ওই বহুতলে প্রচুর দাহ্য বস্তু মজুত ছিল, তাই দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তে তা ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের ভবন থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার হচ্ছে। ওই এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
চকবাজার অগ্নিকাণ্ড : ৬৯ জনের মরদেহ উদ্ধার
রাজধানীর চকবাজার এলাকায় কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন লেগে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পুড়ে যাওয়া লাশগুলো শনাক্ত করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। লাশের খোঁজে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ আশপাশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভিড় করছেন স্বজনরা।এদিকে প্রায় ৫ ঘণ্টা চেষ্টার পর রাত ৩টায় রাজধানীর চকবাজার এলাকায় কেমিক্যাল গোডাউনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিস। অগ্নিদগ্ধ কমপক্ষে ৪০ জনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। এখনো অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন।ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ জানান, ইতিমধ্যে ওই এলাকায় ফায়ার সার্ভিসের একটি অস্থায়ী কমান্ডপোস্ট বসানো হয়েছে। ইতিমধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। এ পর্যন্ত ৬৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৩২টি ইউনিট কাজ করেছে।কেমিক্যাল গোডাউন ভবনের মালিক লালবাগের সাবেক এমপি হারুন-অর-রশিদের চাচা হাজী আব্দুল ওয়াহেদের বলে জানা গেছে। ভবনটি প্লাস্টিক ও পারফিউমের গুদাম ছিল বলে স্থানীয়রা জানান।এর আগে রাত সাড়ে ১০টায় শুরু হওয়া আগুন ১টা ৫ মিনিটে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের ৫টি বিল্ডিংয়ে।ইত্তেফাক/ইউবি
Posted by FB page maker on Wednesday, February 20, 2019
ভবনের মালিকপক্ষ জানায়, নিচ তলায় খাবার হোটেল এবং দোতলায় কেমিক্যালের গোডাউন আছে।
স্থানীয়রা জানায়, ওয়াহেদ ম্যানশনের সামনে একটি ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরিত হয়ে প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে। এসময় প্রাইভেটকারের সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে ভবনে আগুন লাগে।
তবে, আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে কেউই তেমন কিছু বলতে পারছেন না।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১০ জন ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ও ৪০ জন জরুরি বিভাগে চিকিৎসার জন্য এসছেন। আহত ও আগুনে পুড়ে যাওয়া রোগীরা এখনো ঢাকা মেডিকেলে আসছেন।
নিখোঁজদের খোঁজে ঢাকা মেডিকেলসহ রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে ঘুরছেন তাদের স্বজনেরা। ভিড় করেছেন আগুন লাগা ওই এলাকায়ও।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে স্বজনের অপেক্ষায় থাকা এক ব্যক্তি সমকালকে বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তার দুইজন স্বজন নিখোঁজ হয়েছেন। তাদের খোঁজে হাসপতালে এসেছেন তিনি।
এছাড়া অন্য হাসাপতালগুলোর সামনেও স্বজনদের খোঁজ করছেন অনেকে। অনেককে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেছে। কেউ কেউ আবার হাসাপতাল আর অগ্নিকাণ্ডের এলাকা ছুটোছুটি করছেন।