শনিবার ১৪ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শনিবার ১৪ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

IPL-এ ১৭ বছরের শাপমোচন, পাঞ্জাবকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বিরাট কোহলির RCB

বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫
11 ভিউ
IPL-এ ১৭ বছরের শাপমোচন, পাঞ্জাবকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বিরাট কোহলির RCB

কক্সবাংলা ডটকম :: ২০০৮ সালে IPL-এর প্রথম ম্যাচটা খেলতে নেমেছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। তার পর কেটে গিয়েছে ১৭ বছর। বিশ্ব ক্রিকেটের তাবড় প্লেয়ারদের দলে নিলেও কাঙ্খিত সাফল্য আসেনি, ট্রফিটা অধরাই থেকে গিয়েছে।

এ বার রজত, জিতেশ, সূয়শদের মতো তরুণদের নিয়ে সেই ট্রফি জিতল RCB। অধিনায়ক হয়েও যেটা পারেননি বিরাট কোহলি, সেটা অধিনায়কের পাশে থেকে করে দেখালেন তিনি। ১৮-র IPL-এ ১৮ নম্বর জার্সির বিরাট হাতে তুললেন IPL ট্রফি। ফাইনালে পাঞ্জাবকে ৬ রানে পরাস্ত করল RCB।

পাঞ্জাব কিংস এ দিন টস জিতে ব্যাটিং করতে পাঠায় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে। গত তিনবারই RCB ফাইনালে রান তাড়া করেছিল এবং ব্যর্থ হয়েছিল। এ বার ছবিটা বদল হওয়ায় সমর্থকরা আশা করেছিলেন ফলও বদল হবেও। সেটাই হলো।

ওপেনে নেমে ফিল সল্ট নিজের চেনা মেজাজে শুরু করেন। ৯ বলে ১৬ রানের ইনিংস খেলেন। তিনি শর্ট বলে উইকেট দিয়ে ফেরেন। কাইল জেমিসনের বলে তিনি আউট হন। এর পর নজর ছিল বিরাট কোহলির দিকে। তিনি ৩৫ বলে ৪৩ করলেও তাঁর ১২২.৮৬-এর স্ট্রাইক রেট নিন্দার মুখে পড়ে।

বিরাটের পর মায়াঙ্ক আগরওয়াল, রজত পতিদার, লিয়াম লিভিংস্টোন, জিতেশ শর্মা কেউই বড় রান করতে পারেননি। RCB-র ব্যাটারদের ফেরানোর নেপথ্যে ছিল শ্রেয়সের নিখুঁত পরিকল্পনা। শরীর লক্ষ্য করে শর্ট বল। যেটা তিনি করালেন অর্শদীপ সিং, কাইল জেমিসনদের দিয়ে। দুই বোলারই তিনটে করে উইকেট পান। একটি করে উইকেট নেন আজ়মাতুল্লা ওমরজ়াই, বিজয়কুমার বৈশাক ও যুজ়বেন্দ্র চাহাল।

রান তাড়া করতে নেমে RCB-র থেকে কিছুটা দ্রুত গতিতে রান তোলে পাঞ্জাব কিংস। প্রিয়াংশ আর্য ও প্রভসিমরন সিংয়ের ওপেনিং জুটি করে ৪৩ রান। তবে দুই ব্যাটারই কম স্ট্রাইক রেটে শেষ করেন। প্রিয়াংশ করেন ২৪ ও প্রভসিমরন করেন ২৬। শুরুতে যেই দ্রুত গতিতে রান করা দরকার ছিল সেই গতিটা ধরতে পারেননি তাঁরা।

আমেদাবাদের পিচে ম্যাচ যত এগোতে থাকে ততই স্লো হতে থাকে পিচ। এই সময়ে RCB কাজে লাগায় ক্রুনাল পান্ডিয়া ও ইমপ্যাক্ট সাপ সূয়শ শর্মাকে। ক্রুনাল ফেরান প্রভসিমরন সিং ও জশ ইংলিশকে। অন্যদিকে সূয়শ রান চাপতে থাকেন। এই স্পিনারদের ভেল্কির মাঝে শ্রেয়স আইয়ারকে ফেরান রোমারিও শেফার্ড। তিনি মাত্র ১ রান করে ফেরেন। ব্যাটের কানায় লেগে বল চলে যায় কিপারের হাতে এবং সেটা ধরতে ভুল করেননি জিতেশ শর্মা। শ্রেয়স, ইংলিশ ফেরার পরে কোমর ভাঙে পাঞ্জাবের।

এর পর IPL-এ লাল হলুদ জার্সির আশা ছিল নেহাল ওয়াধেরা, শশাঙ্ক সিং ও মার্কোস স্টোইনিসদের হাতে। কিন্তু শশাঙ্ক বাদে আর কেউই রান পেলেন না। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮৪ রানে থামে পাঞ্জাবের ইনিংস।

RCB এ বার তাদের বোলিং লাইনআপ সবচেয়ে শক্তিশালী করেছিল। সেটারই ফল পেল। যেই স্টেডিয়ামে ২০০-র বেশি রান হতো, সেই স্টেডিয়ামে ১৯০ রান আটকে দিলেন ভুবনেশ্বর কুমার, জশ হ্যাজ়েলউড, সূয়শ শর্মারা। বহু যুদ্ধের নায়ক ভুবনেশ্বর কুমার নেন দুটি উইকেট। ক্রুনালও নেন দুটি। একটি করে উইকেট নেন যশ দয়াল, জশ হ্যাজ়েলইউড ও রোমারিও শেফার্ড।

কোহলির আইপিএল জয়ের আনন্দ ‘১০ গুণ’ বাড়িয়েছেন যে দুই কিংবদন্তি

বিজয় মঞ্চে কোহলির সঙ্গে গেইল ও ডি ভিলিয়ার্সও ছিলেন। কাল রাতে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে আইপিএলের ফাইনাল শেষে
বিজয় মঞ্চে কোহলির সঙ্গে গেইল ও ডি ভিলিয়ার্সও ছিলেন। কাল রাতে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে আইপিএলের ফাইনাল শেষে এএফপি

আইপিএল ফাইনাল দেখতে ভারতে যাওয়ার ছবি উড়োজাহাজে থাকতেই পোস্ট করেছিলেন ক্রিস গেইল। এবি ডি ভিলিয়ার্স তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হ্যান্ডলে কোনো ছবি পোস্ট করেননি। চুপি চুপি চলে যান ভারতে। কাল রাতে আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে দেখা গেল দুজনকেই। ম্যাচ শেষে মাঠেও দেখা গেল। বিরাট কোহলির সঙ্গে এ দুই কিংবদন্তির ফ্রেমবন্দী ছবি দেখে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর নষ্টালজিক সমর্থকেরা বলতেই পারেন ‘হলি ট্রিনিটি!’

ডি ভিলিয়ার্স ও গেইল বেঙ্গালুরুতে খেলাকালীন সময়ে তিনজনকে একসঙ্গে এ নামেই ডেকেছেন সমর্থকেরা। ২০১১ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত বেঙ্গালুরুতে খেলে ৮৪ ইনিংসে ৩১৬৩ রান করেন গেইল। ৫ সেঞ্চুরির সঙ্গে ফিফটি ১৯টি। গেইল অবশ্য পাঞ্জাবের হয়েও খেলেছেন। কাল রাতের ফাইনালে তিনি বেঙ্গালুরুকে সমর্থন দেওয়ার পাশাপাশি পাঞ্জাবকেও সমর্থন দেন। বেঙ্গালুরুর জার্সি পরার পাশাপাশি পাঞ্জাবি পাগড়িও পরে মাঠে গিয়েছিলেন গেইল।

ডি ভিলিয়ার্স ২০১১ থেকে ২০২১ পর্যন্ত খেলেন বেঙ্গালুরুতে। ১৫৬ ম্যাচে ৪৪৯১ রান করেন। কাল ম্যাচের শেষ দুই ওভারে বাউন্ডারি সীমানার বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন এই প্রোটিয়া কিংবদন্তি। মাঠ থেকে তাঁকে দেখে আবেগাক্রান্ত হয়ে পড়েন কোহলি। বেঙ্গালুরুর জয়ের পর মাঠে তাঁদের উদ্‌যাপনে যোগ দেন ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি গেইলও। মাঠেই সম্প্রচারক চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ দুজনের উপস্থিতি নিয়ে কোহলি বলেছেন, তাতে শিরোপা জয়ের আনন্দটা ‘১০ গুণ বেড়ে বিশেষ’ হয়েছে।

সম্প্রচারক চ্যানেলের ক্যামেরার সামনে তিন কিংবদন্তি মিলে দারুণ এক উদ্‌যাপনও করেন। বেঙ্গালুরুর দীর্ঘদিনের স্লোগান ছিল ‘এ সালা কাপ নামদে (এবার কাপটা হবে আমাদের)!’ ১৮ বছর অপেক্ষার পর শিরোপা জিতে ক্যামেরা ও মাইক্রোফোনের সামনে চিৎকার করে স্লোগানটি পাল্টে দেন তিন কিংবদন্তি, ‘এ সালা কাপ নামদু (এবার কাপ আমাদের)!’

ডি ভিলিয়ার্সের সঙ্গে আইপিএলে দারুণ কিছু ম্যাচ জেতানো জুটি রয়েছে কোহলির। তাঁকে নিয়ে কোহলি বলেন, ‘সে ফ্র্যাঞ্চাইজির (বেঙ্গালুরু) হয়ে যা করেছে, সেটা অসাধারণ। ম্যাচের আগে বলেছি তাকে, এই ম্যাচটা আমাদের জন্য যা, তোমার জন্যও তা–ই এবং আমি চাই যখন আমরা ট্রফি উঁচিয়ে ধরব, তখন তুমি আমাদের সঙ্গে উদ্‌যাপন করবে। কারণ, সে আরসিবির জন্য যা করেছে, সেটা সত্যিই বিশেষ কিছু।’

প্রোটিয়া কিংবদন্তিকে নিয়ে কোহলি আরও বলেন, ‘সে সবচেয়ে বেশি ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছে এবং চার বছর হলো অবসর নিয়েছে। এই দলে তার প্রভাবটা এতেই স্পষ্ট…বেঙ্গালুরুর মানুষ এবং এই দলের কাছে সে কতখানি, সেটা আসলে ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। তাই আমি বলেছি, আমাদের সঙ্গে বিজয়মঞ্চে দাঁড়িয়ে ট্রফি উঁচিয়ে ধরাটা তার প্রাপ্য।’

শেষ দুই ওভারে সীমানার বাইরে ডি ভিলিয়ার্সকে দেখে আবেগাপ্লুত হওয়া নিয়েও কথা বলেন কোহলি। ডি ভিলিয়ার্সকে উদ্দেশ করে কিংবদন্তি বলেন, ‘শেষ দুই ওভারে সীমানার বাইরে তোমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখাটা ছিল আরও বিশেষ কিছু। (শেষ ওভারে) হফের (হ্যাজলউড) দ্বিতীয় বলটি ছক্কা না হওয়ার পর তাদের পাঁচ ছক্কার দরকার ছিল। (ডি ভিলিয়ার্সকে দেখিয়ে) আমি জানি না ইনিংসের শেষ তিন বলে কীভাবে অশ্রু আটকে রাখতে পেরেছি। কিন্তু তুমি জানো, তখন কেমন লাগে। সেও (গেইলকে দেখিয়ে) জানে কেমন লাগে।’

গেইল সে মুহূর্তে জড়িয়ে ধরেন কোহলিকে। তারপর মুখে হাসি ফুটিয়ে বলেন, ‘১৮ বছর! কী সৌভাগ্যের নম্বর (কোহলির জার্সি নম্বরও ১৮)! তোমার জন্য খুশি লাগছে। আমি তোমার জন্যই। ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্যও খুশি লাগছে।’

কোহলি এরপর বলেন, ‘এটা (আইপিএল ট্রফি) আমার কাছে খুব বিশেষ কিছু হওয়ার কারণ হলো তাদের সঙ্গে এটা ভাগ করে নিতে পারছি। কারণ, নিজের সেরা সময় আমি তাদের সঙ্গে ভাগ করেছি এবং আমি জানি (ট্রফি) জয়ের জন্য আমরা কী পরিমাণ চেষ্টা করেছি…আমরা সবাই কষ্ট (ট্রফি না জেতায়) পেয়েছি, কারণ, আমরা সবাই নিজেদের সেরা সময়টা এই ফ্র্যাঞ্চাইজিকে দিয়েছি। আমরা একদম অন্তরের অন্তস্থল থেকে আরসিবির জন্য শিরোপাটি জিততে চেয়েছিলাম। হলফ করে বলছি, এটাকে (ট্রফি জয়) এখন ১০ গুণ বেশি বিশেষ কিছু মনে হচ্ছে, কারণ, তারা আমার পাশে দাঁড়িয়ে। এ শিরোপা আমার জন্য যতটা প্রাপ্য, তাদেরও ততটাই। আমি জানি, মানুষ আবেগপ্রবণ এবং তারাও নিজেদের সর্বস্ব নিংড়ে দিয়েছে। তাই এটায় তাদেরও সমান ভাগ।’

11 ভিউ

Posted ২:০৭ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : Shaheed sharanee road, cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com