কক্সবাংলা ডটকম(১২ এপ্রিল) :: গত দুই বছরে বেশ কয়েকটি বহুপাক্ষিক রফতানি নিয়ন্ত্রণ সংস্থার সদস্য হওয়ায় আত্মবিশ্বাস বেড়েছে ভারতের। সেই অবস্থান থেকেই মঙ্গলবার (১০ এপ্রিল) আবারও চীনের সাথে আলোচনা করছে ভারত। নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার্স গ্রুপে (এনএসজি) ভারতের সদস্যপদের জন্য চীনের আপত্তি প্রত্যাহার করানোর জন্য বেইজিংয়ের মধ্যস্থতাকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করছে তারা।
যুগ্ম সচিব পঙ্কজ শর্মা বেইজিংয়ের মধ্যস্থতাকারী ওয়াং শুনের সাথে বৈঠক করেছেন। চীন সরকারের নিরস্ত্রীকরণ বিভাগের প্রধান শুন। প্রায় দুই বছর আগে ২০১৬ সালের জুনে সিউলে নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার্স গ্রুপের যে পূর্ণাঙ্গ বৈঠক হয়, সেখানে ওই গ্রুপে ভারতের অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাবে বিরোধিতা করেছিলেন শুন।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানতে পেরেছে যে, আলোচনা গঠনমূলক ও ভবিষ্যমুখী হয়েছে। আলোচনায় যথেষ্ট আন্তরিকতা ছিল এবং আলোচনার গতিও সঠিক পথেই ছিল। সূত্র এ তথ্য জানালেও কোন সুস্পষ্ট অগ্রগতি হয়েছে কি না তা জানা যায়নি।
এক ধাপ এগিয়ে ভারতীয় পক্ষ ইঙ্গিত দিয়েছে যে উভয় পক্ষই দ্বিপাক্ষিক আলোচনার উপর জোর দিয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে বেইজিংয়ের ভারতীয় দূতাবাসের দেয়া এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “দুই দেশই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার উপর গুরুত্ব দিয়েছে। সংলাপে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করা হয়।
এর মধ্যে রয়েছে বহুপাক্ষিক ফোরামে নিরস্ত্রীকরণের ব্যাপারে অগ্রগতি, পারমাণবিক ইস্যু, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও নিরস্ত্রীকরণ এবং মহাকাশ কর্মসূচির ক্ষেত্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ভূমিকা নিয়ে এ সময় আলোচনা হয়।”
২০১৬ সালের জুনে পররাষ্ট্র সচিব এস জয়শঙ্কর এবং চীনা কর্মকর্তাদের মধ্যে সিউলে যে আলোচনা হয়েছিল এবং তাসখন্দে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের যে আলোচনা হয়েছিল, সেই আলোচনাগুলোর ব্যাপারে সাউথ ব্লকের একটি সূত্র জানায় যে, “ওই আলোচনাগুলো ছিল যথেষ্ঠ কঠিন। তবে এবারের আলোচনার মেজাজ ছিল ভিন্ন।”
এনএসজি সেই সব শীর্ষ দেশের সংগঠন যারা নিউক্লিয়ার প্রযুক্তি এবং এর বিস্তার রোধে ব্যাপারগুলো নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি হাতে পাওয়ার জন্য এই সংগঠনের সদস্যপদ পাওয়াটা ভারতের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
তিনটি রফতানি নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থায় নয়াদিল্লীর সদস্যপদ লাভের পর মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো ভারত ও চীনের মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে বৈঠক হলো। ২০১৬ সালের জুনে মিসাইল টেকনোলজি কন্ট্রোল রেজিমের সদস্য হয় ভারত। এরপর দেশটি ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ওয়াসেনার অ্যারেঞ্জমেন্টের এবং ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়া গ্রুপের সদস্য হয়।
ভারত ও পাকিস্তানকে এ ক্ষেত্রে একই দৃষ্টিতে দেখে এসেছে চীন। কারণ এই দুটির কোন দেশই পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিতে (এনপিটি) স্বাক্ষর করেনি। চীন এনএসজিকে বলেছে বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে। এর অর্থ হলো হয় দুটো দেশই সদস্য হবে, তা না হলে একটিও হবে না। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও ব্রিটেনসহ এনএসজিভুক্ত অধিকাংশ দেশই ভারত ও পাকিস্তানকে আলাদাভাবে দেখে থাকে।
সূত্র জানিয়েছে যে, ভারতীয় কর্মকর্তারা এই আশা নিয়ে বেইজিং গিয়েছিলেন যে, যে মুহূর্তে উভয় পক্ষই সম্পর্কটা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে, এ সময়টাতে হয়তো চীনারা কিছুটা ছাড় দেয়ার মানসিকতা দেখাবে। একইসাথে ভারত যেহেতু এখন এমটিসিআরের সদস্য এবং সেক্ষেত্রে তারাও চীনকে এখানে সদস্যপদ পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।
Posted ১০:০০ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১২ এপ্রিল ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta