কক্সবাংলা ডটকম(৪ জানুয়ারি) :: বহুল আলোচিত ৫ জানুয়ারি আজ। ২০১৪ সালের এই দিনে দেশব্যাপী জ্বালাও-পোড়াওয়ের মধ্য দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। ক্ষমতায় আসার পর দিনটিকে তারা পালন করছে ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ হিসেবে।
এ উপলক্ষে শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউ ও ধানমন্ডি-৩২ নম্বর সড়কের রাসেল স্কয়ারে সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। আর ‘কালো দিবস’ হিসেবে রাজধানী ছাড়া সারাদেশে কালো পতাকা মিছিল ও সমাবেশ করবে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দল। আজ রাজধানীতে জনসভা করার ঘোষণা দিয়েছিল দলটি। কিন্তু অনুমতি পায়নি।
এ নিয়ে উত্তেজনাও আছে, সমাবেশের চেষ্টা করতে পারে বিএনপি- এমন আভাস আছে। বিএনপির সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে এবার সহিংসতার আশঙ্কা কম থাকলেও দুদলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে ঠিকই।
৫ জানুয়ারি এ দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি আলোচিত দিন। দেশজুড়ে হত্যা, জ্বালাও-পোড়াওসহ সহিংস আন্দোলনের মধ্যেই ওই দিন অনুষ্ঠিত হয় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বিএনপি জোটের বয়কটের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কম ভোটারের উপস্থিতি, ১৫৪ আসনে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হওয়া এবং সহিংসতার কারণে ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নেয় এ নির্বাচন। নির্বাচনের দিনেই সহিংসতায় নিহত হন ২২ জন। নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি আগের দিন ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডাকে।
আর হরতাল কর্মসূচি ঘোষণার পর পরই ভোটকেন্দ্রের তালিকায় থাকা চট্টগ্রাম, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নীলফামারী, দিনাজপুর, খুলনা, সাতক্ষীরাসহ দেশের প্রায় ৫০০ স্কুলে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। নির্বাচন বয়কট করে বিএনপি কর্মীরা বিক্ষোভের নামে বিভিন্ন সময় বাস, ট্রাক এবং মোটরচালিত রিকশায় পেট্রলবোমা ছুড়ে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় কয়েকশ নিহত হয়েছেন এবং আরো অসংখ্য নাগরিক আহত হয়েছেন।
গত ৩ বছরই এই দিনটিকে ঘিরে দুই দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ছিল উত্তপ্ত। ২০১৫ সালে ভয়ঙ্কর জ্বালাও-পোড়াও, পেট্রলবোমা আর ৯২ দিনের অবরোধে থমকে ছিল জনজীবন। সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের দাবিতে ৯২ দিন গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়েই অবস্থান করেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সেই সঙ্গে লাগাতার অবরোধ-হরতালে জিম্মি ছিল গোটা দেশ।
অবরুদ্ধ একমাসে নির্মমতার বলি হন ৬২ জন। গত বছরও এই দিনটিকে ঘিরে দুই দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ছিল উত্তপ্ত। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোরতায় গত বছর কোনো অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি।
এবারো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ৫ জানুয়ারি :
সদ্যবিদায়ী ২০১৭ ছিল রাজনীতিতে ঘর গোছানোর বছর। আর চলতি ২০১৮ সাল নির্বাচনের বছর। স্থিতিশীল রাজনীতির কারণে নির্বিঘ্নে বছর পার হতেই আবারো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ঠাঁই পেয়েছে ৫ জানুয়ারি। সবার দৃষ্টি এখন রাজনীতিতে। একদিকে সরকারি দলের মাঠে থাকার ঘোষণা আর অন্যদিকে বিএনপির মাঠ দখলের লড়াই- শেষ মুহ‚র্তে রাজনীতির জল কোথায় গড়াবে, এ নিয়ে শঙ্কা অনেকেরই।
দেশব্যাপী এই কর্মসূচিতেও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা অংশগ্রহণ করবেন।ওবায়দুল কাদের এ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ঘোষিত কর্মসূচি যথাযথভাবে পালনের জন্য দেশের সব জেলা, মহানগর, উপজেলা ও থানা আওয়ামী লীগসহ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। দেশের সর্বস্তরের জনগণকে গণতন্ত্রের বিজয়ের এই ঐতিহাসিক দিনটি উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপনের জন্যও অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
Posted ১২:৪৯ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৫ জানুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta