দেব দুলাল মিত্র,কক্সবাজার থেকে(৫ সেপ্টেম্বর) :: মায়ামারের রাখাইন রাজ্যে শুধু রোহিঙ্গা মুসলমানদেরই হত্যা করা হচ্ছে না। সেখানে বসবাসরত হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকেও নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। তাদের ওপর চালানো হচ্ছে বর্বরোচিত নির্যাতন। ছেলেদের হত্যার পর মেয়েদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। লুটপাঠ করা হচ্ছে তাদের অর্থ ও সম্পদ। আবার কোন কোন বাড়িতে হানা দিয়ে দূর্বৃত্তরা লোকজনকে ঘরের ভেতরেই বন্দী করে রাখছে। অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে যারা এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ও অমানবিক ঘটনা ঘটাচ্ছে তাদের পরিচয় কেউ জানে না।
সবার মাথা থেকে পা অবধি কালো কাপড়ে আবৃত থাকে। শুধুমাত্র চোখ দুটো দেখা যায়। তারা সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে এসে এভাবেই হত্যা ও নির্যাতন চালাচ্ছে। দুইদিন ধরে পায়ে হেটে পাহাড় ও জঙ্গল ডিঙ্গিয়ে টেকনাফের কুতুপালং এর পশ্চিম হিন্দুপাড়ায় আশ্রয় নেয়া ৫ শতাধিক অসহায় মানুষের সঙ্গে আলাপকালে এই অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অসহায় এসব মানুষের কাছে এখন পর্যন্ত সরকারী কোন ত্রান সামগ্রী পৌছেনি। কেউ খোজও নিতে যায়নি। স্থানীয়ভাবে লোকজন কিছু কিছু সহযোগীতা করে তাদের এরকবেলা খাবারের ব্যবস্থা করছে। তবে তা খুবই অপ্রতুল। বিশেষ করে শিশুদের জন্য কোন দুধের ব্যবস্থা নেই। পরনের কাপড় ছাড়া আর কোন কাপড় নেই। কেউ কেউ আশেপাশের মহিলাদের কাছ থেকে পাওয়া পুরাতন কাপড় নিয়ে শিশুদের ঠান্ডার হাত থেকে রক্ষার চেষ্টা করছেন।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খৃস্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ রোববার এই পরিবারগুলোর খোজ নিতে যায়। পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডেভোকেট রানা দাশগুপ্তর নেতৃত্বে কক্সবাজাররের নেতৃবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন। তারা অসহায় নারী-পুরুষদের মাঝে খাবার ও বস্ত্র বিতরণ করেন।
সরজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, দৈর্ঘ্যে ১০০ ফুট ও প্রস্থে ৮ ফুটের একটি ছাউনির নিচে দুগ্ধপোষ্য শিশু থেকে ৭৫ বছরের বৃদ্ধা পর্যন্ত সবাই আশ্রয় নিয়েছেন। এই ঘরটির মালিক সঞ্জীব শর্মা। কিছুদিন আগে এটি তার পোল্টি ফার্ম ছিল। মুরগি না থাকায় এখন এটি অসহায় মানুষগুলোর শেল্টারহোমে পরিনত হয়েছে। মাটির ওপর কালো রংয়ের পলিথিন বিছিয়ে দেয়া হয়েছে। নানান বয়সী মানুষগুলো এই পলিথিনের ওপড় ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়ে। স্থানীয়দের উদ্যোগে খিচুরীর আয়োজন করা হয়। কঙ্কারসার মানুষগুলোকে এখান থেকেই ভাগে পাওয়া যতসামান্য খাবার দিয়েই উদোরপুর্তি করতে হচ্ছে। রাখাইন রাজ্যে অত্যাচার-নির্যাতন সইতে না পেরে জীবনবাজি রেখে তারা মাতৃভ’মি ছেড়ে চলে এসেছে।
এখানে আশ্রয় নেয়া মংডুর চিকনছড়ির বাসিন্দা মধুরাম শীল জানান, রাখাইন রাজ্যে অরাজকতার শুরুতে মুসলমানদের ওপর নির্যাতন শুরু হলেও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের ওপর কোন হামলা হয়নি। হঠাত একদিন কালো পোষাক পরিহিত ২৫/৩০ জন দূর্বৃত্ত এসে তাদের পাড়া ঘেরাও করে। কাউকে ঘর থেকে বের হতে দেয়নি। এভাবে আরো ৪/৫ দিন চলে যায়। এরই মধ্যে ঘর থেকে কয়েকজনকে ধরে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। পাড়ার ৬০/৭০টি ঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। এরপরই তিনি পরিবারের ১৫ জন সদস্যকে নিয়ে পালিয়ে আসেন। জঙ্গল আর পাহাড়ের ওপর দিয়ে দুইদিন হেটে বাংলাদেশের ভেতওে ঢুকে পড়েন। এরপর কুতুপালংয়ের একটি সেলুনে জিজ্ঞাসা করে পশ্চিম হিন্দু পড়ার খোজ পান। এরপর সেখানে গিয়ে আশ্রয় চান। আশ্রয় দিতে এগিয়ে আনে সঞ্জীব শর্মা।
মধুরাম আরো জানান, ফকিরাবাজাওে তার মেয়ে, জামাতা ও তাদেও পরেবারের লোকজন বসবাস করতো। দূর্বৃত্তরা তাদের সবাইকে মেরে ফেলেছে বলে শুনেছেন।
চিকনছড়ির নিরঞ্জন রুদ্র জানান,তাদের পাড়ায় ৭০টি হিন্দু পরিবারের ৪০০ জন বসবাস করে। গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে কালো কাপড়ে আবৃত অবস্থায় ২০/২৫ জন র্দবৃত্ত আসে। সবাইকে ঘরের ভেতওে থাকতে নির্দেশ দেয় তারা সবাই মগা ও বাংলা ভাষায় কথা বলছিল। তাদের হাতে ধারালো অস্ত্র ও বোমা ছিল। তারা কাউকে মোবাইলফোনে কথা পর্যন্ত বলতে দেয়নি। এর তিনদিন পর পাড়ার ৮৬ জন হিন্দু পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসে। এই দূর্বৃত্তরা ফকিরাবাজারে হিন্দু সম্প্রদায়ের ১০/১৫ জনকে ধারালো ছোরার আঘাতে হত্যা করেছে। ২টি মন্দিও ও ৭০টি বসতঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে। ওই ৭০টি বাড়ির সবাই একসঙ্গে পালিয়ে এসেছে।
২০ বছরের সীমান্ত রুদ্র ও ৮ বছরের নিমাই রুদ্র দুই ভাই। গত শুক্রবার দূবৃত্তরা তাদের বাবা কানু রুদ্রকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। তাদের মা সহ পরিবারের ৪ জন কোনমতে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানান। পিতার শেষকৃত্যটুকু না করতে পারার আক্ষেপ নিয়ে কেদে উঠলেন সীমান্ত।
চিকনছড়ির এলাকার চাষি ভুবন তার ৭ মাস বয়সী ছেলে প্রভিকে কোলে নিয়ে অসহায়ভাবে লোকজনের দিকে তাকিয়েছিলেন। এখানে আসার কারন সর্ম্পকে জানতে চাইলে তিনিও একই কথা বললেন।
৬০ বছরের ননাই জানান, চিকনছড়িতে তার ১৫ কানি জমি আছে। সবকিছু ফেলে তার পরিবারের চারজনকে নিয়ে পালিয়ে এসেছেন। আসার পথে দুইদিন না খেয়ে ছিলেন।
রোচানা নামে এক কিশোরী জানান, দূর্বৃত্তরা তার বোনকে বড় ছোরা দিয়ে কেটে ফেলেছে। বোনের ছেলেটা তার কাছে ছিল। দুধ খাওয়ার জন্য কান্নাকাটি করছিল। তখন মুসলমানরা নিয়ে গেছে আর ফেরত দেয়নি। বাবাকে ধরে নিয়ে গেছে। তার কি পরিনতি হয়েছে তা তিনি জানেন না। পাড়ার কয়েকজনের সঙ্গে দৌড়ে এলাকা ছেড়ে চলে এসেছেন।
রেইকাপাড়া বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তের খুব কাছের একটি গ্রাম। এই গ্রামের বাসিন্দা রেকুবালা শীল জানান, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে কালো কাপড়ের মুখোসধারীরা তাদের পাড়ায় হানা দেয়। সে দৌড়ে বাড়ির পেছন দিক দিয়ে মামার বাড়িতে চলে যায়। সেখান থেকে সীমান্ত টপকে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। দূর্বৃত্তরা পাড়ার ৭৯ জনকে মেরে ফেলেছে। পানিছড়ির সাহেববাজারে শুক্রবার দুপুরের দিকে হামলা হয়। এই পাড়ায় মূলত মগ ও হিন্দুরা বসবাস করে। এখানে বৌদ্ধদের মন্দির জ্বালিয়ে দেয়।
এসব শরনার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাখাইন রাজ্যের হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেক সদস্য এখনো পাহাড়ে পালিয়ে আছে। তারা কিছুটা ভেতরের দিকে অবস্থান করায় সীমান্তের দিকে আসতে পারেনি। তাদের এখন কি অবস্থা কেউ জানে না। আবার রোহিঙ্গা মুসলমানদের সঙ্গে পালিয়ে আসা কিছু হিন্দু নারী-পুরুষ কুতুপালংয়ের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে উঠেছিল। পরবর্তীতে তারা হিন্দুপাড়ার আশ্রয়স্থলের খোজ পেয়ে সেখানেই চলে এসেছে। খোজ পাওয়ার পর কয়েকজন নারীকে রোহিঙ্গা মুসলিম ক্যাম্প থেকেও উদ্ধার করা হয়।
কক্সবাজারের নীলা এলাকার রাধাকৃষ্ণ সেবাশ্রমের অধ্যক্ষ ব্রম্মচারী আত্মানন্দ জানান, মায়ানমার থেকে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয়া হিন্দু নারী-পুরুষদের সঙ্গে পালিয়ে আসার কারণ জানতে তিনি কথা বলেছেন। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন জানিয়েছে, হামলাকারীরা এসে বেশ কয়েকজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এরপর তারা নারীকে চোখ বেধে নিয়ে এসেছে। অনেক নারী নিখোজ রয়েছেন বলে আগতরা তাকে জানিয়েছেন। কারা এবং কেন হিন্দুদের ওপড় এই হামলা চালানো হচ্ছে তা কেউ বুঝতে পারছে না।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বলেন, মায়ানমারে গণহত্যা চলছে। শুধু রোহিঙ্গা মুসলমানদেরই তারা হত্যা করছে না। হিন্দুদের বাড়ি-ঘর, উপাসনালয় জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। ৮৬জন হিন্দুকে হত্যা করা হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এ ধরনের বর্বরোািচত ঘটনার কারনে যারা স্বদেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে, তাদের স্বদেশে ফিরিয়ে নিতে মায়ানমার সরকারকে উপযুক্ত পরিবেশ সৃস্টি করতে হবে। সেখানে যে নারকীয় ঘটনা ঘটেছে তার তদন্ত করা প্রয়োজন। আক্রমনের ধরন এক। বাংলাভাষার সঙ্গে যাদের সম্পৃক্ততা আছে তাদেরকে নিশ্চিন্ন করার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমি মনে করি মুখোষ পড়ে কারা হত্যা, অত্যাচার, নির্যাতন চালাচ্ছে তাদের খুজে বের করা উচিত।
তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, জাতিসংঘের মাধ্যমে পুরো ঘটনার তদন্ত হওয়া উািচত। এবং যারা এই ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী আইনে তাদেরকে কাঠগড়ায় দাড় করাতে হবে।
অনিতা আর রেখার চোখে এখন শুধুই দু:স্বপ্ন
————————————
অনিতা আর রেখার চোখে এখন শুধুই দুস্বপ্ন রাখাইন রাজ্যের মংডুর ফকিরাবাজারে তাদের দুজনের বাড়ি। দেখতে সুশ্রী হওয়ায় ১৫/১৬ বছরের অনিতার বিয়ে হয়েছে কয়েকমাস আগে। তার স্বামী স্থানীয় একটি সেলুনে কাজ করতো। ভালোই চলে আসছিল তাদের সংসার। কিন্তু মগের মুল্লুকের চলমান অরাজকতা তার জীবনকে তছনছ করে দিয়েছে। দূর্বৃতরা তার স্বামীকে ধারালো ছোড়া দিয়ে নির্মর্মভাবে হত্যা করেছে। এরপর সে স্থানীয় অন্যসব হিন্দু পরিবারের সঙ্গে বাংলাদেশে পাড়ি জমায়। এখন তার ঠাই হয়েছে কুতুপালংয়ের পশ্চিম হিন্দু পাড়ার পোল্টিফার্মের ভেরতে।
অনিতা জানায়, তাদের এলাকায় মুসলমানদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন চললেও এতোদিন ধরে হিন্দুরা মোটামুটি নিরাপদেই ছিল। কিন্তু এবার সেনাবাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতনের মাত্রা অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশী আক্রমনাত্মক। তারা অনেক বেশী আগ্রাসী। তবে তারাও হিন্দুদের কিছু বলেনি। হঠাত করেই কিছুদিন যাবত কালো মুখোশ পড়া লোকজনের আর্বিভাব ঘটার পরেই হিন্দু ও বৌদ্ধদের ওপর নির্যাতন নেমে আসে। এই কালো মুখোশধারীরা মংডু এলাকার বিভিন্ন স্থানে বহুজনকে হত্যা করেছে। তারা কি বিদ্রোহী রোহিঙ্গা গ্রুপ নাকি আরাকানের সেনাবাহিনী নাকি বিষেশ কোন বাহিনী তা তারা কেউ জানতে পারেনি। তারা কারা এটাই এখন রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আসা হিন্দু ও মুসলিম রোািহঙ্গাদেও সবার প্রশ্ন।
অনিতা জানায়, সেদিন ছিল শুক্রবার। রাত ৮টার দিকে হঠাত করে এই মুখোশধারীরা এসে তাদের পাড়ায় হামলা চালায়। দূর্বৃত্তরা তার স্বামীকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। অনিতার চোখ বেধে ফেলে। এরপর আর সে তার স্বামীকে দেখেনি। তার স্বামীকে কেটে ফেলেছে। পরবর্তীতে স্থানীয় মুসলমানদের সঙ্গে নিজেকে আবিস্কার করে। তারেদর কেউ কেউ তাকে তাদের সঙ্গে যাওয়ার জন্য জোরাজুড়ি করতে থাকে।
একপর্যায়ে তাদের হাত ধরেই অনিতা বাংলাদেশের রোািহঙ্গা ক্যাম্পে এসে আশ্রয় নেয়। এসময় কেউ কেউ তাকে মুসলিম ধর্ম গ্রহনের জন্য চাপ দিয়েছে। কিন্তু তিনি রাজী হননি। অবশেষে কুতুপালংয়ের স্থানীয় কিছু বাসিন্দার সহায়তায় মুসলিম রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে বের হয়ে পশ্চিম হিন্দু পাড়ায় এসে আশ্রয় পায়।তিনটি সন্তান নিয়ে অনিতার সঙ্গেই দাড়িয়ে ছিল রেখা। রেখারও একই অবস্থা হয়েছে বলে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপাকালে জানান।
রেখা জানান, তার স্বামী ফকিরাবাজার এলাকায় স্বর্ণকারের কাজ করতেন। একই দিন একই ঘটনায় তার সুখের স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে। তার সন্তানরা পিতৃহারা হয়েছে। ঘটনার সময় দূর্বৃত্তরা তার স্বামীকেও তুলে নিয়ে হত্যা করে লাশ পাহাড়ে অথরা নদীতে ফেলে দেয়। সন্তানসহ তার চোখে বেধে ফেলে। তারপর নিজেকে আবিস্কার করেন মুসলিম রোহিঙ্গাদের সঙ্গে। তিনটি সন্তানকে হাতছাড়া করেননি। তাই সন্তানগুলো এখনো তার চোখের সামনে আছে। ক্ষুধার জ্বালায় সন্তানরা কান্নাকাটি করে। কাদতে কাদতে এক সময় ঘুমিয়ে পড়ে।
রেখা আরো জানান, তার জানামতে দূর্বৃত্তরা ফকিারাবাজার এলাকার ৮ জন হিন্দু মহিলার স্বামীতে চোখ বেধে নিয়ে গেছে। এরপর তাদেরকে কেটে কেটে নদীতে ফেলে দেয়া হয়েছে। সে সহ এই ৮ জনই মুসলিম রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বাংলাদেশে এসেছে। তাকেও কেউ কেউ মুসলিম হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু তিনি র্জাী হননি। অবশেষে অনিতার সঙ্গেই তাদেও ৮ জনকে কুতুপালং এলাকার হিন্দুরা উদ্ধার করে। তারা মংডুরেত বসবাসরত বেশ কয়েকটি মগ পরিবারের সদস্যরেদরও মংডু থেকে পালিয়ে আসতে দেখেছেন। তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। মামলামাল লুটপাট করে নিয়ে গেছে।
অনিতা ও রেখা জানেন না কি তাদের ভাগ্যে আছে। তবে তারা জানান, মংডুর পরিস্থিতি একটু ভালো হলেই তারা চলে যাবেন। সেখানে তাদের নিজের জমি আছে। কিন্তকু এবার সেখানের অবস্থা খুবই খারাপ। কতদিনে তারা ফিরে যেতে পারবেন তা জানা নেই।
Posted ৭:২৯ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta