বিশেষ প্রতিবেদক :: কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে সহিংস পরিস্থিতি তৈরী,ভাংচুর ও সম্পত্তির ক্ষতিসাধনসহ গত এক সপ্তাহের ঘটনায় কক্সবাজার শহরে মোট ৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এসব মামলার সূত্র ধরে অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত পর্যন্ত পুলিশ ৩৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্তি পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, কক্সবাজারে সংঘটিত ঘটনায় ৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আরও ১১ জনসহ এ পর্যন্ত ৩৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মামলায় জড়িতদের শনাক্ত করতে পুলিশ কাজ করছে।
ভিডিও, ছবি দেখে যাদের শনাক্ত হচ্ছে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরুতে কক্সবাজারের সার্বিক র পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক ছিল।
কিন্তু ১৬ জুলাই বেলা ১১ টায় মিছিল করে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম সড়কের লিংক রোড এলাকায় অবস্থান নেয় কক্সবাজার পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী ও শিবির নেতারা।
পুলিশ ওই সময় সড়ক থেকে তাদের সরিয়ে দিলেও এরা মিছিল সহকারে কক্সবাজার সরকারি কলেজে গেইটে যান।
ওখানে আগে থেকে অবস্থান নেয়া ত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ব ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
ওখানে গাড়ি ভাঙচুরও করা হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর আন্দোলনকারীরা আবারও অবস্থান নেন লিংক রোড এলাকায়। আবারও পুলিশ তাদের সরিয়ে দেন।
কিন্তু আন্দোলনকারীরা ওখান থেকে বিকেল ৪ টায় মিছিল সহকারে কক্সবাজার শহরে আসে।
তারা শহরের লাল দিঘীর পাড় এলাকায় গিয়ে যেখানে অবস্থিত জেলা আওয়ামী লীগ, জাসদ ও জাতীয় পার্টির কার্যালয় ভাঙচুর করে।
কুপিয়ে ও মারধরে আহত করা হয় ছাত্রলীগের ৪ নেতাকে।
একই সময় পাশের একটি মসজিদেও ভাঙচুর করে তারা।
ওই ঘটনার পর বুধবার উভয়পক্ষ মিছিল ও সভা করে কর্মসূচি শেষ করে।
কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর চালানো হয় তান্ডব।
সন্ধ্যার পর আন্দোলনকারীরা মিছিল সহকারে বাস টার্মিনাল হয়ে গাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর, বোমা বিস্ফোরণ করতে করতে আসতে থাকে শহরের দিকে।
এ খবরে লালদিঘীর পাড় এলাকায় জড়ো হন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মী।
মিছিলটি ওই এলাকায় পৌঁছার সাথে সাথেই উভয়পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়।
একের পর এক গুলি বর্ষণ, হাত বোমার বিস্ফোরণে সংঘর্ষ চলতে থাকে।
রাত ৯ টার দিকে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনে।
ওই সময় লালদিঘীর পাড় এলাকায় অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ।
আন্দোলনকারীরা অবস্থান নেন ফজল মার্কেট এলাকায়।
এক পর্যায়ে পুলিশ-বিজিবি, রযাবের সাথেও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয় আন্দোলনকারীদের।
ওই দিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সময় লাগে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত।
ওই দিনের ঘটনায় একজনের মৃত্যু ও আহত হন আরও ৩৭ জন।
শুক্রবার সন্ধ্যার পর আবার শহরের প্রধান সড়কের বার্মিজ মার্কের্ট, টেকপাড়া, তারাবানিয়ার ছড়া, রুমালিয়ারছড়া, আলীজাহান এলাকায় অবস্থান নেন এরা।
মধ্যরাত পর্যন্ত গাড়ি ভাঙচুর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো হয়।
এদিকে কক্সবাজার জেলা বিএনপি নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, পুলিশের পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলায় বিএনপি’র অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে। এখন গ্রেপ্তার অভিযান চালানো হচ্ছে। এ কারণে বিএনপি’র অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা বাড়িছাড়া। প্রতি রাতে তল্লাশির নামে নেতাকর্মীদের পরিবারকে হেনস্তা করা হচ্ছে। সিনিয়র নেতাদের বাসায় তল্লাশি না হলেও ওয়ার্ড নেতা ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাদের বাসায় বাসায় অভিযান ও তল্লাশি হচ্ছে।
Posted ৩:৪৪ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta