কক্সবাংলা ডটকম(২ জুন) :: আগামী অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দের পরিমাণ চলতি অর্থবছরের চেয়ে ২ দশমিক ৯ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা খাতে মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫০ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছর ছিল ৪৯ হাজার ১০ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ২২ হাজার ২২ কোটি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ২৮ হাজার ৪১০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ ছিল জিডিপির ২ দশমিক ৫ শতাংশ। আর নতুন বাজেটে তা কিছুটা বেড়ে জিডিপির ২ দশমিক ৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। যদিও শিক্ষা খাতে জিডিপির কমপক্ষে ৪ থেকে ৬ শতাংশ ও মোট বাজেটের ২০ শতাংশ বরাদ্দের সুপারিশ রয়েছে ইউনেস্কোর।
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) খাতওয়ারি বিভাজনেও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা খাতে উন্নয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১৪ হাজার ৯১৭ কোটি টাকা, যা এডিপির ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা খাতে উন্নয়ন বরাদ্দ ছিল ১১ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা, যা ছিল এডিপির ১০ দশমিক ৫২ শতাংশ। সে হিসাবে আকারে বাড়লেও শতাংশের হিসাবে এ বছর শিক্ষা খাতে উন্নয়ন বরাদ্দ কমেছে।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুুল মুহিত বলেন, শিক্ষাকে দারিদ্র্য বিমোচন ও উন্নয়নের অন্যতম প্রধান কৌশল হিসেবে বিবেচনা করে সরকার এ খাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে আসছে। দিন বদলের সনদ ও রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতি আমরা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করছি। আমরা প্রথমেই চেষ্টা করেছি শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণে। পরবর্তী অগ্রাধিকার হচ্ছে প্রশিক্ষিত শিক্ষক গড়ে তোলা।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষকদের বেতন-ভাতা অনবরত বাড়ানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ১২০টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ২৮৫টি বেসরকারি কলেজ সরকারীকরণের কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে চলছে। সার্বিক শিক্ষা খাতের মানোন্নয়নে অবকাঠামো নির্মাণ ও সংস্কার এবং শিক্ষক প্রশিক্ষণসহ চলমান কার্যক্রম আমরা অব্যাহত রাখব।
পাশাপাশি মাধ্যমিক, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষাসহ উচ্চশিক্ষার প্রসার ও উত্কর্ষসাধনে চলমান কার্যক্রমও অব্যাহত থাকবে। এ লক্ষ্যে একটি পাঁচ বছর মেয়াদি প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। এতে সম্ভাব্য বিনিয়োগের পরিমাণ হবে প্রায় ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। তবে এ কথা অনস্বীকার্য যে, শিক্ষার মানোন্নয়ন সময়সাপেক্ষ বিষয়।’
শিক্ষা খাতের বরাদ্দ গত বছরের তুলনায় বেশি হলেও এ খাতে অর্থ বরাদ্দ আরো বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করেন শিক্ষাবিদরা। এছাড়া বাজেট বাস্তবায়নে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলেও মনে করেন তারা।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, শিক্ষা খাতে উন্নয়ন বরাদ্দ বাড়ানো হলেও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় তা অনেক কম। এছাড়া আমাদের দেশে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অন্তরায় হলো দুর্নীতি। তাই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যবহারে সুশাসন নিশ্চিত করায় সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। অন্যথায় অর্থব্যয়ের সুফল পাবে না সাধারণ মানুষ।
Posted ৩:১৫ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০২ জুন ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta