কক্সবাংলা ডটকম(৬ জুলাই) :: ভারত আগামী দুই মাসের মধ্যে ফ্রান্সের কাছ থেকে পঞ্চম প্রজন্মের রাফাল জঙ্গিবিমানের প্রথম সরবরাহ পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রথম মেয়াদে এই জঙ্গিবিমান কেনায় দুর্নীতি নিয়ে ব্যাপক হৈ চৈ হয়েছে।তবে বিতর্ক যতই থাকুক, রাফালেই ভরসা রাখছে কেন্দ্র। প্রথম দফায় ফ্রান্সে তৈরি ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান আসবে। তার পরে ভারতে আরও শ’খানেক রাফাল যুদ্ধবিমান তৈরি করে বিমানবাহিনীকে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। অত্যাধুনিক এ বিমানগুলো ভারতের যুদ্ধবিমানবহরে আলাদা মাত্রা যোগ করবে। বিশেষ করে প্রতিবেশি পাকিস্তান ও চীনের পক্ষ থেকে ভারত যে মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে, সেটা মোকাবেলার জন্য ভারতের বিমান বাহিনীকে শক্তি যোগাবে রাফাল জেট বিমান।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন,ফ্রান্স থেকে কেনা পঞ্চম প্রজন্মের উচ্চ প্রযুক্তির অত্যাধুনিক এ বিমানগুলো ভারতের যুদ্ধবিমানবহরে আলাদা মাত্রা যোগ করবে।আর ৩৬টি রাফালের সঙ্গে থাকবে ‘মিটিয়োর’ ক্ষেপণাস্ত্র।যা শব্দের চার গুণ জোরে ছোটে। ১০০ কিলোমিটারের বেশি দূরের শত্রু-বিমান ধ্বংস করতে পারে। রাফালকে অত্যন্ত দক্ষ বহুমুখি যুদ্ধবিমান বলা হয়। খুব সম্প্রতি সিরিয়া এবং ইরাকে আইএস এর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি বোম্বিং মিশন পরিচালনা করা হয় এই বিমান দিয়ে। এছাড়া লিবিয়া এবং আফগানিস্তানে বিমান হামলাতেও এটি ব্যবহার করা হয়েছিল।
ভারতে নিযুক্ত ফরাসী রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার জিয়েগলার শুক্রবার বলেন যে, আগামী দুই মাসের মধ্যে ‘সঠিক সময়েই’ ভারতকে রাফাল জঙ্গিবিমান সরবরাহ করা হবে। আগামী দুই বছরের মধ্যে ভারতকে ৩৬টি রাফাল জঙ্গিবিমানের সবগুলো সরবরাহ করে হবে বলেও জানান তিনি। এসব বিমানকে চমৎকার উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত বলেন, এগুলো পেলে ভারতীয় বিমানবাহিনীর সক্ষমতা অনেক বেড়ে যাবে।
গত ৫০ বছর ধরে ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে গড়ে ওঠা সহযোগিতার সম্পর্কের প্রশংসা করেন তিনি। রাফাল জঙ্গিবিমান সম্পর্কে ফরাসী রাষ্ট্রদূত বলেন, এটি একটি চমৎকার জঙ্গিবিমান। ভারত এটি বেছে নেয়ায় আমরা সম্মানিত বোধ করছে। এটি আইএএফ’র সামর্থ অনেক বাড়াবে বলে আমি মনে করি। ভারতে রাফাল নিয়ে বিতর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিতর্কে আমার আগ্রহ নেই। আমি ফলাফলে আগ্রহী। আসল কথা হলো আগামী দুই মাসের মধ্যে প্রথম রাফাল ভারতে এসে পৌছবে। এতে আমি গর্বিত।
উল্লেখ্য বিজেপির নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সমরাস্ত্র আমদানিকারক দেশ হিসেবে ভারত বেশ কয়েকটি বড় অস্ত্র আমদানি চুক্তি করে।এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মোদি সরকার ভারতের সামরিক উচ্চাভিলাসের লক্ষ্যে ফ্রান্সভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ড্যাসল্ট অ্যাভিয়েশনের কাছ থেকে ৩৬টি রাফাল জঙ্গিবিমান কিনতে ৮৮০ কোটি ডলারের বড় মাপের চুক্তি করে।যা গত কয়েক দশকের মধ্যে প্রতিরক্ষা খাতে অন্যতম চুক্তি এটি।
ভারতের বিমান বাহিনীতে মাত্র ৩৩টি স্কোয়াড্রন জঙ্গিবিমান রয়েছে।তবে চীন এবং পাকিস্তানের মোকাবেলা করতে হলে তার দরকার ৪৫ স্কোয়াড্রন। যেখানে সীমান্ত বিরোধ তো বহুদিন থেকেই চলে আসছে সঙ্গে রয়েছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র পাকিস্তান। তাছাড়া পাকিস্তান ও চীনের পক্ষ থেকে ভারত যে মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে, সেটা মোকাবেলার জন্য ভারতের বিমান বাহিনীকে শক্তি যোগাবে রাফাল জেট বিমান।
Posted ৩:২১ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৬ জুলাই ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta