কক্সবাংলা ডটকম(১ ফেব্রুয়ারি) :: চীন সফরের অভিজ্ঞতা নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর লেখা বই ‘আমার দেখা নয়া চীন’র মোড়ক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা ‘আমার দেখা নয়াচীন’ বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।
‘আমার দেখা নয়া চীন’র মোড়ক উন্মোচন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারাগারে খাতা সেন্সর করে দেয়া হতো। সেই সেন্সরের সিল থেকে আমরা জানতে পারি এটি ১৯৫৪ সালে লেখা। মলাটটি অনেকটা চীনা অক্ষরের মতো করে লেখা। মনোগ্রামটি পিকাসোর তৈরি করা।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৫২ সালে বঙ্গবন্ধু চীনে শান্তি সম্মলনে গিয়েছিলেন। পূর্ববঙ্গ থেকে প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে তিনি আমন্ত্রিত ছিলেন। সেখানে যাবার পথটি, কীভাবে গিয়েছেন তার বিস্তারিত বর্ণনা আছে। বিশেষভাবে লক্ষণীয়, এই বইতেই লেখা আছে- তিনি শান্তি সম্মেলনে বাংলা ভাষায় বক্তৃতা দিয়েছিলেন। মনোজ বসু তার বইতে এ কথা লিখেছেন। এসবই বইটিতে পাওয়া যাবে।
মুজিববর্ষ সামনে রেখে এবারের বাঙালির প্রাণের মেলা অমর একুশে গ্রন্থমেলা উৎসর্গ করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। মেলার প্রথম দিন থেকেই বাংলা একাডেমির স্টলে মিলবে চীন সফরের অভিজ্ঞতা নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমাসের লেখা ‘আমার দেখা নয়া চীন’ বইটি।
‘আমার দেখা নয়া চীন’ বঙ্গবন্ধুর লেখা তৃতীয় বই। এর আগে বঙ্গবন্ধুর লেখা দুটি বই ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ প্রকাশিত হয়েছে।
অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছাত্রজীবনে অমর একুশে গ্রন্থমেলায় নিয়মিত আসতাম। বর্তমানে সরকার প্রধান হওয়াতে সেটি আর হয়ে উঠছে না। ছাত্র জীবনের সেই স্বাধীনতা এখন আর নেই।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একুশের এই বইমেলা- গ্রন্থমেলা বলেন আর বইমেলা বলেন, বইমেলা বলতেই একটু আপন আপন মনে হয় বেশি। এই বইমেলা বা গ্রন্থমেলা এটা আমাদের প্রাণের মেলা।
আগের মতো বইমেলায় ঘুরতে না পারার কষ্টের জানিয়ে তিনি বলেন, এই একটা দুঃখ থেকে যাচ্ছে। এখন আর সেই স্বাধীনতা নেই। আগে দিনের পর দিন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বইমেলায় ঘুরে বেড়াতাম। তারপরও আমি বলবো এই বইমেলা এলেই ভালো লাগে।
দেশে লেখক-প্রকাশক-পাঠকদের সবচেয়ে বড় আয়োজন অমর একুশের গ্রন্থমেলা।
বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রায় ৮ লাখ বর্গফুট জায়গায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবারের বই মেলা।
এবার সমগ্র মেলা প্রাঙ্গণে মুজিববর্ষ উদযাপনের ছোঁয়া লেগেছে। নানন্দিকভাবে সাজানো হয়েছে এবারের মেলা প্রাঙ্গণ। মুজিববর্ষ উপলক্ষে এবারের মেলা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে উৎসর্গ করা হয়েছে।
এবারের গ্রন্থমেলায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২৬টি প্রতিষ্ঠানকে ১৭৯টি স্টল ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৩৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৯৪টি স্টলসহ মোট ৫৬০টি প্রতিষ্ঠানকে ৮৭৩টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাংলা একাডেমিসহ ৩৩টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে ৩৪টি প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
লিটল ম্যাগাজিন চত্বর স্থানান্তরিত হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে। ১৫২টি লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ ছাড়াও ৬টি উন্মুক্ত স্টল রাখা হয়েছে।
২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই অমর একুশে গ্রন্থমেলা।
ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে মেলা। আর ছুটির দিনে মেলা খোলা থাকবে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত এ গ্রন্থমেলা খোলা থাকবে।
প্রতিদিন বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে জাতির পিতাকে নিয়ে ২৫টি বই প্রকাশ করেছে বাংলা একাডেমি। নতুন এসব বই নিয়েও আলোচনা করা হবে।
এছাড়াও প্রতিদিন সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ উদ্বোধনের পাশাপাশি এ অনুষ্ঠান থেকে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা ‘আমার দেখা নয়াচীন’ বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখেন।
উদ্বোধনী এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, সচিব মো: আবু হেনা মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির (বাপুস) সভাপতি আরিফ হোসেন ছোটন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী।
Posted ১০:৪৪ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta