বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

আটলান্টিক মহাসাগরে কেন ধ্বংস হল ‘টাইটান’ ডুবোজাহাজ

শনিবার, ২৪ জুন ২০২৩
46 ভিউ
আটলান্টিক মহাসাগরে কেন ধ্বংস হল ‘টাইটান’ ডুবোজাহাজ

কক্সবাংলা ডটকম :: টাইটানিকের মতোই সলিলসমাধি হল টাইটান-এর। অতলান্তিকের গভীরে টাইটানিকের ধ্বংসাবাশেষ দেখতে গিয়ে এই ডুবোজাহাজের ভিতরে চিরঘুমে ঘুমিয়ে পড়লেন অভিযাত্রীরা। বৃহস্পতিবার দূর নিয়ন্ত্রিত বা রিমোট কন্ট্রোল্ড একটি যান টাইটানিকের সূচালো অগ্রভাগ বা বো-এর থেকে ১৬০০ ফুট (৫০০ মিটার) দূরে একটি ডুবোজাহাজের ধ্বংসাবশেষ চিহ্নিত করে। মার্কিন উপকূলরক্ষী বাহিনী নিশ্চিত করে এটাই টাইটান ডুবোজাহাজের ভগ্নাবশেষ। কেন শেষ হয়ে গেল টাইটান? ধ্বংসাবশেষ পরীক্ষা করে মার্কিন উপকূলরক্ষীর তরফে জানানো হয়েছে দুর্ঘটনার কারণ ‘catastrophic implosion’৷ অর্থাৎ, বিপর্যয়ে চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে গিয়েছে ডুবোজাহাজ টাইটান৷ বিশেষজ্ঞদের ধারণা, মহাসাগরের গভীরে জলস্তম্ভের চাপেই এই পরিণতি টাইটানের৷

‘ওশনগেট’ অভিযাত্রী সংস্থার পরিচালিত ২১ ফুট বা ৬.৫ মিটারের ডুবোযানটি রবিবার অবতরণ করতে শুরু করে৷ কিন্তু দু’ ঘণ্টার মধ্যে সেটির সঙ্গে সব সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়৷ যাত্রা শুরুর সময় যানটিতে ৯৬ ঘণ্টার মতো অক্সিজেন মজুত ছিল৷ কিন্তু যাত্রা শুরু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ডুবোজাহাজের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়৷ সাগরের জলরাশিতে হারিয়ে যাওয়া সেই ডুবোযানের সওয়ারি ছিলেন বিশ্বের তিন ধনকুবের৷ তাঁদের মধ্যেই অন্যতম পাকিস্তানের শিল্পপতি শাহজাদা দাউদ৷ তিনি ও তাঁর ছেলে সুলেমান ছিলেন ওই জলযানে৷ পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে উত্তর অতলান্তিকের গভীরে টাইটানিকের ধ্বংসস্তূপ দেখতে গিয়েছিলেন সপুত্র শাহজাদা৷

আমেরিকা ও ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করা শাহজাদা দাউদের সংস্থা ‘এনগ্রো’ পাকিস্তানের নামী কর্পোরেট সংস্থাগুলির মধ্যে অন্যতম৷ তাঁর বাবা হুসেইন দাউদও নিয়মিত থাকতেন ধনী পাকিস্তানি তালিকায়৷ এছাড়াও ওই যানে ছিলেন ব্রিটিশ ধনকুবের হ্যামিশ হার্ডিং৷ উড়ান শিল্পে তাঁর নাম ও সংস্থা প্রথম সারির একটি প্রতিষ্ঠান৷ দুঃসাহসিক অভিযানে অংশ নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে তাঁর নামের পাশে উজ্জ্বল একাধিক গিনেস রেকর্ড৷ বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যবাসী ৫৮ বছর বয়সি হার্ডিং এর আগে পাঁচ বছর ছিলেন বেঙ্গালুরুতেও৷ তাঁর সংস্থা দুবাই ও লন্ডনে বিমান কেনাবেচা করে৷

এই তিন যাত্রী ছাড়া ওই ডুবো যানে ছিলেন দুজন ক্রু সদস্য৷ তাঁদের মধ্যে পল অঁরি নার্গিওলেট একজন অভিজ্ঞ ডাইভার এবং টাইটানিক ধ্বংসাবশেষ বিশেষজ্ঞ৷ পঞ্চম ব্যক্তি হলেন ওই অভিযাত্রী সংস্থার সিইও স্টকটন রাশ৷ নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো মার্কিন উপকূলরক্ষী বাহিনীর তরফ থেকে৷ তবে তাঁদের দেহ উদ্ধার করে আনা খুবই প্রতিকূল ও কঠিন কাজ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷

কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ড উপকূলে ‘টাইটান’-এর সন্ধানে অতলান্তিকে চিরুনি তল্লাশি চালায় মার্কিন ও কানাডিয়ান উপকূলরক্ষীবাহিনী৷ তাঁদের তরফে জানানো হয়েছে প্রায় ৭৬০০ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে চলে তল্লাশি৷ শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার খুঁজে পাওয়া যায় টাইটান ডুবোজাহাজকে৷ মার্কিন টেলিভিশন সাংবাদিক মাইক রিজ গত বছর ‘টাইটান’-এ করে দেখতে গিয়েছিলেন ‘টাইটানিক’-এর ধ্বংসাবশেষ৷ জানিয়েছেন, ‘‘জলের গভীরে যাওয়া মাত্র কম্পাস কাজ করা বন্ধ করে দেয়৷ সেখানে বোঁ বোঁ করে ঘুরতে থাকে কম্পাসের কাঁটা৷ আমরা অন্ধের মতো নামছিলাম সমুদ্রের নীচে৷ শুধু জানতাম এখানে কোথাও একটা টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে৷’’

টাইটানে অন্যের ছেড়ে দেওয়া সিটে বসে ছেলেকে নিয়ে তলিয়ে গেলেন ধনকুবের

চার বছর আগে ভয়ঙ্কর বিমানকাণ্ডে রক্ষা পেলেও এড়াতে পারলেন না অতল জলে বিপদ৷ অতলান্তিকের গভীরে প্রাণ হারালেন পাকিস্তানি ধনকুবের শাহজাদা দাউদ৷ সঙ্গে ছিলেন তাঁর ছেলে সুলেমানও৷ টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে টাইটান ডুবোজাহাজে সওয়ার হয়েছিলেন পিতাপুত্র৷

অতলান্তিকের অতলে হারিয়ে গেল টাইটান। যে টাইটানিক দর্শনের জন্য এত ঘনঘটা, সেই জাহাজের মতোই করুণ পরিণতি ডুবোযানের। এই টাইটানেই সওয়ার হওয়ার কথা ছিল লাস ভেগাসের বিনিয়োগকারী জে ব্লুম এবং তাঁর ছেলের। বলা ভাল, ভাগ্যের জোরেই এক প্রকার প্রাণে বাঁচলেন তাঁরা।

ওশিয়ানগেটের (যে কোম্পানি ওই ডুবোযান তৈরি করে) সিইও স্টকটন রাশ বিগত এক বছর ধরে জে-কে টাইটানে সওয়ার হওয়ার জন্য রাজি করিয়েছিলেন। স্টকটনের কথায় খানিক প্রভাবিতও হয়েছিলেন তিনি। অতলান্তিকে গভীরে থাকা টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে আগ্রহী ছিলেন তাঁর ২০ বছরের ছেলেও। তবে শেষমেশ পিছিয়ে আসেন তাঁরা।

টাইটান আদৌ কতটা সুরক্ষিত, তা নিয়ে জে-র মনে খানিক সঙ্কোচ ছিল। তাই শেষ মুহূর্তে তিনি সেই অভিযান থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। সময়ের অভাবে অজুহাত দেখিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি। এর পরেই জে এবং তাঁর ছেলের জন্য সংরক্ষিত টিকিট পান পাকিস্তানি ধনকুবের শাহজাদা দাউদ এবং সুলেমান দাউদ। টাইটানিকের ভগ্নাবশেষ দেখতে গিয়ে চিরনিদ্রায় ঘুমিয়ে পড়েন তাঁরা।

সপ্তাহ দুয়েক আগে এক পথ দুর্ঘটনায় কাছের বন্ধুকে হারান জে। তার পরেই যেন আরও সাবধানী হয়ে ওঠেন তিনি। যে সব জিনিসপত্র দিয়ে টাইটান তৈরি এবং চালানো হয়েছে, তা জে-র কাছে বিশেষ ঠিক বলে মনে হয়নি। যার ফলে শেষ পর্যন্ত টাইটানে সওয়ার হননি তিনি।

প্রসঙ্গত, ১৯১২ সালের ১৪ এপ্রিল মধ্যরাতে হিমশৈলে ধাক্কা মেরে তার প্রথম যাত্রাতেই ইংল্যান্ড থেকে নিউইয়র্কের পথে উত্তর অতলান্তিকে ডুবে যায় তৎকালীন অন্যতম বিলাসবহুল যাত্রিবাহী জাহাজ টাইটানিক। অন্তত ২২২৪ জন যাত্রীর মধ্যে মৃত্যু হয় ১৫০০-র বেশি মানুষের। ১৯৮৫ সালে কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ড উপকূল থেকে ৪০০ মাইল দূরে মহাসাগরের প্রায় ৪ কিলোমিটার গভীরে খুঁজে পাওয়া যায় টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ৷ তার পর থেকেই পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে সেই জায়গা৷ ওশনগেট আকাশছোঁয়া অর্থের বিনিময়ে সেই সুযোগ দিচ্ছিল পর্যটকদের৷ ২০২১ এবং ২০২২ সালেও সে যাত্রা সম্পূর্ণ করেছিল৷ কিন্তু পাঁচ দুঃসাহসীকে নিয়ে এই ডুবোজাহাজের তৃতীয় যাত্রা অসমাপ্তই থেকে গেল৷ শেষশয্যা হিসেবে বেছে নিল অতল অতলান্তিককেই৷

46 ভিউ

Posted ৫:৩৮ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৪ জুন ২০২৩

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com