মঙ্গলবার ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

মঙ্গলবার ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

ইউরোপে অনুপ্রবেশকারী ৯৩ হাজার শরণার্থী ফিরিয়ে আনার চাপে বাংলাদেশ

রবিবার, ০২ জুলাই ২০১৭
1293 ভিউ
ইউরোপে অনুপ্রবেশকারী ৯৩ হাজার শরণার্থী ফিরিয়ে আনার চাপে বাংলাদেশ

কক্সবাংলা ডটকম(২ জুলাই) :: ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গত আট বছরে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছেন ৯৩ হাজারের বেশি বাংলাদেশী। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোয় শরণার্থী হিসেবে রয়েছেন তারা। অনেকে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। ইউরোপে অনুপ্রবেশকারী এসব নাগরিককে ফিরিয়ে আনার চাপে রয়েছে বাংলাদেশ। তা না হলে বাংলাদেশীদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া কঠোর করার কথা জানিয়েছে ইইউ।

ইউরোপে অনুপ্রবেশকারী বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় কমিশনের (ইসি) পরিসংখ্যান অধিদপ্তর ইউরোস্ট্যাট। সংস্থাটির তথ্য বলছে, ইইউভুক্ত দেশগুলোয় ২০০৮ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত অবৈধভাবে প্রবেশ করেছেন মোট ৯৩ হাজার ৪৩৫ জন বাংলাদেশী।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবেশ করেন ২০১৫ সালে, ২১ হাজার ৪৬০ জন। এরপর সবচেয়ে বেশি অনুপ্রবেশ করেন ২০১২ সালে। ওই বছর ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবৈধভাবে পাড়ি দেন ১৫ হাজার ৩৬০ জন বাংলাদেশী। ২০১৪ সালেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশী ইউরোপে প্রবেশ করেন। ওই বছর সংখ্যাটি ছিল ১০ হাজার ১৩৫।

এর বাইরে ২০০৮ সালে ৭ হাজার ৮৫, ২০০৯ সালে ৮ হাজার ৮৭০, ২০১০ সালে ৯ হাজার ৭৭৫, ২০১১ সালে ১১ হাজার ২৬০ ও ২০১৩ সালে ৯ হাজার ৪৯০ জন বাংলাদেশী ইইউভুক্ত দেশগুলোয় অনুপ্রবেশ করেন। ইউরোপের দেশগুলোয় প্রবেশের পর বিভিন্ন সময় তারা আটকও হয়েছেন।

এসব বাংলাদেশীসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ইউরোপে অনুপ্রবেশকারী অবৈধ অভিবাসীদের ফিরিয়ে নিতে চাপ সৃষ্টি করছে ইইউ। গত মাসের শেষ দিকে এ-সংক্রান্ত একটি সিদ্ধান্তও নেয় ইইউ। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যেসব দেশ তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানাবে, সেসব দেশের নাগরিকদের জন্য ইইউর ভিসা সীমিত করা হবে। ইউরোপে বাড়তে থাকা শরণার্থীর চাপ সামলাতেই এ উদ্যোগ বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশীদের অবস্থান রয়েছে। আর নিজ দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে তাদের সম্প্রতি নতুন শর্তটি আমরা দেখেছি। বাংলাদেশের অবস্থান হলো তথ্য যাচাই করে নিজ দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনা।

ইউরোস্ট্যাটের হিসাবে ইইউর ২৮টি দেশে অবৈধ বাংলাদেশীর সংখ্যা ৯৩ হাজার হলেও প্রকৃতপক্ষে তা আরো বেশি হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। ইইউভুক্ত একটি দেশের ঢাকাস্থ এক কূটনীতিক বলেন, ২০১৬ ও চলতি বছরের হালনাগাদ তথ্য এখনো হাতে পাওয়া যায়নি। এগুলো পেলে ইউরোপে বাংলাদেশী অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যা আরো বেশি হবে। ২০১৫ সাল পর্যন্ত যে তথ্য পাওয়া গেছে, তা কেবল যারা আটক হয়েছেন বা বসবাসের জন্য বৈধতা খুঁজছেন তাদের হিসাব। এদের অবস্থানই নিশ্চিত হওয়া গেছে। এদের অনেককে বিতাড়িত করা হলেও কোনো না কোনো পন্থায় তারা আবার ইউরোপে ফিরে গেছেন।

ইউরোপ থেকে বিতাড়িত নাগরিকদের যে তালিকা ইউরোস্ট্যাট তৈরি করেছে, তাতে শুধু ২০১৪ ও ২০১৫ সালের তথ্য রয়েছে। ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুযায়ী, এ দুই বছর ১০ থেকে ১৩ হাজার বাংলাদেশীকে ইইউ থেকে বিতাড়ন করা হয়েছে। বিতাড়িত এসব

বাংলাদেশী কোথায় গেছেন, তার কোনো তথ্য সংস্থাটির ওয়েবসাইটে দেয়া নেই। তবে যেসব নাগরিক ইউরোপ থেকে বিতাড়িত হয়ে নিজ দেশে ফিরে গেছেন, তাদের তালিকা দিয়েছে সংস্থাটি। এ তালিকায় বাংলাদেশের নাম নেই।

অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশীদের অনেকেই সমুদ্রপথে ইতালি হয়ে ইউরোপের অন্যান্য দেশে প্রবেশ করেছেন। অবৈধ অভিবাসন বন্ধে পথটি বন্ধ করেছে ইইউ। পাশাপাশি অনুপ্রবেশকারী অভিবাসীর চাপ সামলাতে নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়ার সঙ্গে ভিসা সীমিত করার শর্ত জুড়ে দিয়েছে।

ঢালাওভাবে সবাইকে ফেরত পাঠিয়ে দিলে তা অযৌক্তিক হবে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) পরিচালক ড. সি আর আবরার।

তিনি বলেন, প্রথমে দেখতে হবে, এসব বাংলাদেশী সেখানে কী মর্যাদায় রয়েছেন। রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা একটি অধিকার। ফলে যারা রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন, তাদের মামলা সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এরপর যদি তাদের সেখানে থাকার অধিকার না থাকে, তবে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। তবে দেখতে হবে, ন্যূনতম প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে কিনা।

ভিসা সীমিত করার বিষয়ে তিনি বলেন, ইউরোপের সঙ্গে আমাদের বড় ব্যবসা রয়েছে। তাই ভিসা সীমিত হলে ব্যবসায়িকভাবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব। এক্ষেত্রে কূটনৈতিকভাবে সক্রিয় থাকতে হবে। ইউরোপের বাজারে অল্প দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন রয়েছে। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় যেহেতু সেখানে যাওয়া যায় না, তাই অন্য পন্থায় মানুষ সেখানে গিয়ে উপস্থিত হয়। এক্ষেত্রে ইইউকে শ্রমিক নিয়োগের আনুষ্ঠানিক চ্যানেল তৈরি করতে হবে।

অভিবাসন নিয়ে ইইউর সদস্য দেশ জার্মানিতে চলছে দশম গ্লোবাল ফোরাম ফর মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (জিএফএমডি) সম্মেলন। গত ২৮ জুন শুরু হওয়া এ সম্মেলনে বাংলাদেশও অংশ নিচ্ছে। সম্মেলনে এ সমস্যার একটি সমাধান হবে বলে মনে করছেন অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রামের (ওকাপ) নির্বাহী পরিচালক ওমর ফারুক চৌধুরী।

অবৈধভাবে থাকা বাংলাদেশীদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্যও। গত মার্চে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তরের পারমানেন্ট আন্ডার সেক্রেটারি সাইমন ম্যাকডোনাল্ড বাংলাদেশ সফরকালে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বিষয়টি তোলেন। একইভাবে জার্মানিতে বিভিন্ন উপায়ে অনুপ্রবেশ করা প্রায় ৫০০ বাংলাদেশীকে ফিরিয়ে নেয়ার কথা আগেই জানিয়েছে দেশটি। পর্যায়ক্রমে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে এসব বাংলাদেশীকে ফিরিয়েও আনছে সরকার।

1293 ভিউ

Posted ২:১২ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০২ জুলাই ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com