কক্সবংলা ডটকম(১৪ জানুয়ারি) :: ইভ্যালির কাছে গ্রাহকদের সবার পাওনাই পরিশোধ করা হবে বলে জানিয়েছেন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির সিইও মোহাম্মদ রাসেল।
একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, পুরনো গ্রাহক ও মার্চেন্টদের লেনদেন কিংবা অর্ডার সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য দুই মাসের মধ্যে ইভ্যালির নতুন অ্যাপের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হবে।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেলে ইভ্যালির প্রধান কার্যালয় থেকে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এমন ঘোষণা দেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মাদ রাসেল।
এছাড়া আগামী মে মাস থেকে চেকসহ পুরাতন সকল দেনার টাকা পরিশোধ করা শুরু করা হবে বলেও জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রাসেল বলেন, আমরা প্রথম দিন থেকেই গ্রাহক ও মার্চেন্ট থেকে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। প্রথম ক্যাম্পেইনে আমরা ৮০ হাজার অর্ডারের বিপরীতে দুই লক্ষাধিক পণ্যের অর্ডার পেয়েছি। প্রথম ক্যাম্পেইন থেকেই আমরা মুনাফা করতে শুরু করেছি। আমরা চলতি মাসে গেটওয়েতে থাকা গ্রাহকের টাকা ফেরত দেবো।
ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী বলেন, মুনাফার টাকা দিয়ে আগামী মে মাস থেকে চেকসহ পুরাতন সকল দেনার টাকা পরিশোধ করতে শুরু করবো। অর্ডারের ক্রমানুযায়ী সকল গ্রাহকের মূল টাকা ধাপে ধাপে পরিশোধ করা হবে। খুব তাড়াতাড়ি গ্রাহকরা তাদের পুরাতন ডাটা দেখতে পারবেন। এ সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
রাসেল বলেন, ইভ্যালির নতুন ব্যবসায়ীক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সকল পণ্য সিওডিতে (ক্যাশ অন ডেলিভারি) দিচ্ছি। আগে গ্রাহকরা পণ্য পাওয়ার আগেই সরাসরি ইভ্যালিকে টাকা পরিশোধ করত। কিন্তু এবার ক্যাশ অন ডেলিভারি হওয়ায় গ্রাহকের কোনো ঝুঁকি নেই।
এ ছাড়া গ্রাহকের পরিশোধ করা পণ্যের মূল্য এখন থেকে সরাসরি বিক্রেতার কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। ফলে বিক্রেতারও কোনো বাকি পড়ার ঝুঁকি নেই। মার্চেন্ট থেকে ই-কুরিয়ার সরাসরি পণ্য নিয়ে গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, আগে গ্রাহক পণ্য হাতে বুঝে পাবে এরপর মূল্য পরিশোধ করবে। এখানে অর্ডার নেওয়া ছাড়া কোনো কার্যক্রমে ইভ্যালি অংশ নিচ্ছে না। ফলে আমরা আরো স্বচ্ছতার সঙ্গে গ্রাহকের কাছে দ্রুত পণ্য পৌঁছে দিতে পারছি।
অন্য একটি প্রশ্নের জবাবে রাসেল বলেন, আগে বেশিরভাগ পণ্যই লোকসানে বিক্রি করা হতো।
রাসেল দাবি করেন, এবার প্রায় সব পণ্যে সামান্য পরিমাণ লাভ রাখা হয়েছে। এই লাভের অর্থ দিয়ে কোম্পানির মাসিক ব্যয় মেটানো সম্ভব হবে। এজন্য ইভ্যালিকে নতুন করে কোনো দেনায় পড়তে হবে না।
একইসঙ্গে লাভের পরিমাণ বাড়ছে বলে দ্রুত পুরাতন বকেয়ার টাকা ফেরত দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।
ইভ্যালির এ কর্ণধার বলেন, গুণগত মানের কারণে গ্রাহকের কোনো পণ্য পছন্দ না হলে সরাসরি ফেরত নেবে ইভ্যালি।
এ ক্ষেত্রে কুরিয়ার চার্জসহ সম্পূর্ণ অর্থ গ্রাহককে ফেরত দেওয়া হবে। ইভ্যালির নিবন্ধিত কোনো সেলারের পণ্য গুণগত মানে উত্তীর্ণ হতে ব্যর্থ হলে তাদের প্ল্যাটফরম থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে ২০১৮ সালে ইভ্যালি প্রতিষ্ঠা করে হইচই ফেলে দেন মো. রাসেল। মাত্র দুই বছরের মধ্যে দেশের শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠে ইভ্যালি।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম শিকদারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার রাতে রাজধানীর বনানী এলাকা থেকে মঞ্জুরকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানায় গুলশান থানা-পুলিশ।
পুলিশ বলছে, গ্রাহকের করা শতাধিক প্রতারণার মামলায় মঞ্জুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপকমিশনার রিফাত রহমান শামীম রোববার বলেন, আলেশা মার্টের চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মঞ্জুরের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনেও মামলা আছে। এই মামলার বাদী পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সিআইডির তথ্যমতে, ২০২০ সালের ২৬ জুলাই আলেশা মার্ট যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদপ্তর থেকে নিবন্ধন পায়।
প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালের ১০ নভেম্বর ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স নেয়। আনুষ্ঠানিকভাবে আলেশা মার্টের যাত্রা শুরু হয় ২০২১ সালের ৭ জানুয়ারি।
যাত্রা শুরুর পর কম মূল্যে মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক পণ্য সরবরাহের জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নেয় প্রতিষ্ঠানটি।
তবে বহু গ্রাহককে পণ্য না দিয়ে কিংবা টাকা ফেরত না দিয়ে ই-কমার্স ব্যবসার আড়ালে প্রতারণার মাধ্যমে তারা টাকা পাচার (মানি লন্ডারিং) করে বলে দাবি সিআইডির।
সিআইডি বলছে, চারটি বেসরকারি ব্যাংকে আলেশা মার্টের চারটি ব্যাংক হিসাব থেকে ৪২১ কোটি টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান মঞ্জুর ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ৩১ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদ কেনা হয়েছে। ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি থেকে ২৫ আগস্টের মধ্যে এই সম্পদ কেনা হয়।
মঞ্জুরের ২০২০-২১ অর্থবছরের আয়কর বিবরণীর তথ্য তুলে ধরে সিআইডি বলছে, বেতন ও আনুষঙ্গিক মিলে তাঁর আয় ছিল মাত্র ১৩ লাখ ৯০ হাজার। অথচ সাত মাসের ব্যবধানে তিনি ৩১ কোটি টাকার সম্পদ কেনেন।
Posted ১২:০২ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২৪
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta