মোসলেহ উদ্দিন,উখিয়া(৩০ জুলাই) :: ককসবাজার উখিয়া-টেকনাফের ইয়াবা সিন্ডিকেট ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ইয়াবা পাচার প্রতিরোধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যতোই কঠোর হচ্ছে ততোই পাচারের ধরণ পাল্টাচ্ছে ইয়াবাকারবারী চক্র।
২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে পুলিশ কোষ্টগার্ডের সাথে বন্দুক যুদ্ধে টেকনাফের শীর্ষ ইয়াবা কারবারি জাকু ও ফরিদ সহ ৬ জন নিহত হওয়ার পর ইয়াবা পাচার সাময়িক স্থমিত হলেও সাম্প্রতিক সময়ে ইয়াবা পাচার বেড়েছে ভয়ানক আকারে।
গত এক মাসে সড়ক পথে পাচারকালে র্যাব-পুলিশ ও ডিবির সদস্যরা প্রায় ৩ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে। এসময় আটক করা হয়েছে ৬ জন ইয়াবা পাচারকারীকে। জব্দ করা হয়েছে শরণার্থী ক্যাম্পের রোগীর পরিবহনে নিয়োজিত এনজিও সংস্থা আরটিএমআই এর নিয়ন্ত্রণাধীন এ্যাম্বুলেন্স।
র্যাব-পুলিশ- ডিবি’র সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ২৯ জুলাই শনিবার বিকেল ৪ টার দিকে পাচারকারী সিন্ডিকেটের ২ জন সক্রিয় সদস্য উখিয়া একরাম মার্কেটস্থ মিষ্টিঘরে অন্যান্য কাস্টমারদের আদলে মহিলাদের ভ্যানেটি ব্যাগের মাধ্যমে ইয়াবার চালান হাত বদল করছিল।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কক্সবাজার র্যাব-৭ এর সদস্যরা অভিনব কায়দায় অভিযান চালিয়ে কুতুপালং গ্রামের গুরা মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ নুরুল বশর (২৭) ও মন্ডু নাগপুরা গ্রামের মৃত আমান উল্লাহর ছেলে মোঃ মামুনুর রশিদ (৩২) কে হাতে নাতে আটক করে।
র্যাব-৭ এর কোম্পানী কমান্ডার রুহুলী আমিন জানান, আটককৃতদের হাতে থাকা ভ্যানেটি ব্যাগ থেকে ৫৬ লক্ষ টাকা মূল্যের ১৪ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। একই দিন সন্ধ্যা ৭ টার দিকে শরণার্থী ক্যাম্পের চিকিৎসা কাজে ব্যবহৃত এনজিও সংস্থা আরটিএমআই এর একটি এ্যাম্বুলেন্স কক্সবাজার যাওয়ার পথে উখিয়া থানা পুলিশ গাড়ীতে সন্দেহজনক তল্লাসী চালায়।
এসময় এ্যাম্বুলেন্সে রোগী থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে পুলিশের নিয়ন্ত্রণে গাড়ীটি কক্সবাজার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রোগী হস্তান্তরের পর এ্যাম্বুলেন্স খানা উখিয়া থানা কম্পাউন্ডে পার্কিং করে তল্লাসী চালানো হলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মাঈন উদ্দিন জানান, গাড়ীর টুল বক্সে অভিনব কায়দায় লুকিয়ে রাখা ১৫ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে সাতকানিয়া উপজেলার কালু মিয়ার পুত্র মাহামুদুল হক প্রকাশ রানা (৩২) ও টেকনাফ উপজেলা মোছনী গ্রামের আবুল হোছনের ছেলে বাদশা মিয়া (৩৫) সহ ২ জন ইয়াবা পাচারকারীকে।
পুলিশ আরো জানান, গাড়ীটি মোছনী শরণার্থী ক্যাম্প থেকে রোগী নিয়ে কক্সবাজার যাচ্ছিল। এর আগে গত ১৫ জুলাই ভোর রাতে বালুখালী হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা টেকনাফ থেকে আসা একটি খালি ট্রাকে তল্লাসী চালিয়ে আড়াই লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে।
এসময় যশোর জেলার সারসা থানার আব্দুল মজিদের ছেলে মিন্টু আলী (২৭) ও একই জেলার কালী আলী গ্রামের মশিউর আলমের ছেলে দেলোয়ার হোসেন (২৩) কে আটক করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) কায় কিসলু জানান, আটক আসামীরা হ্নীলা ও টেকনাফের বেশ কয়েকজন শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ীর নাম উল্লেখ করে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
Posted ১২:০৩ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ৩১ জুলাই ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta