কক্সবাংলা ডটকম(১৪ ডিসেম্বর) :: মেহেদী হাসান মিরাজসহ স্বাগতিক বোলারদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে শাই হোপের সামনে। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে শুধু এটুকু বললে খুবই অবিচার করা হবে স্বাগতিক বোলারদের প্রতি; বিপজ্জনক হোপকে জুটি বাঁধার সুযোগই দেননি তারা। হোপ বুক চিতিয়ে দাঁড়ালেও ‘টিম গেমে’ বাংলাদেশ বোলারদের আলোয় ম্লান সফরকারীরা।
৫০ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ১৯৮ রান। ইনিংসের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত খেলে হোপ অপরাজিত থাকেন ১০৮ রানে। দ্বিতীয় ম্যাচে যেখান থেকে শেষ করেছিলেন, গতকাল সেখান থেকেই যেন শুরু হোপের। মিরপুরে সঙ্গী পেলেও তিন ম্যাচে দুটি সেঞ্চুরি করা ক্যারিবীয় ওপেনারকে সিলেটে নিঃসঙ্গ রাখে বাংলাদেশ বোলিং বিভাগ।
দিনের শুরুতে টস জিতে বোলারদের ওপর আস্থা রাখেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। আস্থার প্রতিদান পেতে দেরি হয়নি। ১৫ রানে প্রথম উইকেট পতন; অতিথিদের স্কোরবোর্ডে শতরান যোগ হওয়ার আগেই প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটেন আরো চার ব্যাটসম্যান।
এক প্রান্তে পেসার মুস্তাফিজুর রহমান, অন্য প্রান্তে মিরাজকে আক্রমণে আনেন অধিনায়ক। দলে তিন স্পেশালিস্ট পেসার থাকার পরও নতুন বল তুলে দেয়ার যথার্থতা প্রমাণ করেছেন মিরাজ। তার ঘূর্ণি বিষে শুরুতেই পথ হারায় ক্যারিবীয়রা। হোপ এক প্রান্ত আগলে রাখার পরও পথ খুঁজে পাননি সফরকারীরা। ১০ ওভারে মাত্র ২৯ রান খরচায় ৪ উইকেট— লাক্কাতুরায় ওয়ানডেতে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং নৈপুণ্য দেখালেন মিরাজ।
উইন্ডিজ ইনিংসে পতন হওয়া প্রথম পাঁচ উইকেটের চারটিই শিকার করেন মিরাজ। শুরুটা করেন চন্দ্রপল হেমরাজের (৯) উইকেট নিয়ে। পয়েন্টে মোহাম্মদ মিঠুনের হাতে ধরা পড়েন ক্যারিবীয় ওপেনার। ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই ড্যারেন ব্রাভো (১০) সরাসরি বোল্ড। তৃতীয় উইকেটে জুটি গড়ার সম্ভাবনা তৈরি করেন হোপ-মারলন স্যামুয়েলস। ৩৯ রান করা এ জুটি জেঁকে বসার আগেই স্যামুয়েলকে শিকারে পরিণত করেন পেসার সাইফউদ্দিন।
উইকেটে আসেন বর্তমান উইন্ডিজ ব্যাটিংয়ের অন্যতম স্তম্ভ শিমরন হেটমায়ের। সফরে মিরাজ দুঃস্বপ্ন থেকে এ ম্যাচেও বেরোতে পারলেন না বামহাতি এ ব্যাটসম্যান। কোনো রান না করেই মিরাজের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন তিনি। দুই টেস্ট ও তিন ওয়ানডে মিলিয়ে সাত ইনিংসে ছয়বারই হেটমায়ারকে শিকারে পরিণত করেছেন মিরাজ। এখানেই থেমে থাকেননি এ অলরাউন্ডার। বিদায়ঘণ্টা বাজালেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েলেরও। ৯ বলের ইনিংসে মাত্র ১ রান করতে সমর্থ হন সফরকারী অধিনায়ক।
মিরাজ টনিকে ততক্ষণে তেতে উঠেছেন সতীর্থ বোলাররাও। তাতে প্রান্ত আগলে রাখা হোপ বিষণ্ন চোখে দেখলেন সঙ্গীদের বিদায় মিছিল। মিরাজের পর বল হাতে নেতৃত্ব দেন অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসান ও মাশরাফি। সাকিবের শিকারে পরিণত হন রোস্টন চেজ (৮) ও ফ্যাবিয়ান অ্যালেন (৬); মাশরাফি নেন কিমো পল (১২) ও কেমার রোচের (৩) উইকেট। উইন্ডিজ ইনিংসে নবম উইকেটের পতন ঘটে ১৭৭ রানে। দশম উইকেট জুটিতে দেবেন্দ্র বিশুকে (৩) নিয়ে লড়াই চালিয়ে যান হোপ। শেষ ৪ ওভার থেকে যোগ হয় ২১ রান। ৪৮তম ওভারের প্রথম বলে সাকিবকে লং-অফের ওপর দিয়ে ছক্কা মেরে তিন অংকের ঘরে পৌঁছান হোপ। তিন ম্যাচে দুই সেঞ্চুরিসহ ২৯৭ রান সংগ্রহ করেছেন এ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান, যা সিরিজ হার এড়ানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না।
গতকাল জয়-পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় বোলারদের প্রশংসায় ভাসান মাশরাফি, ‘তিন ম্যাচেই বোলাররা ভালো করেছে। যদিও স্পিনাররা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে পেসারদের কাজটা সহজ করে দিয়েছিল। সব মিলিয়ে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলতে পেরেছি। এ জয় টি২০ সিরিজে ভালো খেলতে সাহায্য করবে। যদিও ওয়েস্ট ইন্ডিজ এ ফরম্যাটে শক্ত প্রতিপক্ষ। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। তাদের বিপক্ষে সিরিজ জয় করতে হলে সেরাটা খেলতে হবে।’
Posted ২:৫০ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta