কক্সবাংলা ডটকম(১ আগস্ট) :: তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এদিন প্রথম ওভারেই বাংলাদেশের দুই ওপেনার আউট। ষষ্ঠ ওভারে চলে যান আরও দুই ব্যাটসম্যান। একাদশ ওভারে থমকে যায় রানের চাকা। পরে বৃষ্টিতে আরও সহজ হয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়।
সেন্ট কিটসে বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে ২০ ওভারে বাংলাদেশ করতে পেরেছিল ১৪৩ রান। বৃষ্টিতে ডাকওয়ার্থ-লুইস আইনে ক্যারিবিয়ানদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১১ ওভারে ৯১। জিতে যায় তারা ১১ বল বাকি রেখেই।
দ্বিতীয় ওভারে তাদের দুটি উইকেট তুলে নিয়ে দারুণভাবে শুরু করে বাংলাদেশ। কিন্তু মারলন স্যামুয়েলসের ঝড় সেই ধাক্কা সামলে নেন। অবশেষে রুবেল হোসেনের প্রথম ওভারে আউট হলেও জয়ের ভিত গড়ে দিয়ে যান এই মারকুটে ব্যাটসম্যান।
মোস্তাফিজুর রহমান তার প্রথম ওভারের দ্বিতীয় ও শেষ বলে এভিন লুইস (২) ও আন্দ্রে ফ্লেচারকে (৭) ফেরান। লুইসের ক্যাচ ধরেন লিটন দাস। পেছনে মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ফ্লেচার। তারপর আন্দ্রে রাসেলকে নিয়ে ৪২ রানের ঝড়ো জুটি গড়েন স্যামুয়েলস। ষষ্ঠ ওভারের চতুর্থ বলে তিনি মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ হন। তার আগে ১৩ বলে দুটি করে চার ও ছয়ে ২৬ রান করেন স্যামুয়েলস। তিনি ফিরলেও রাসেল ঝড় চলতে থাকে। ২১ বলে তার তিনটি করে চার ও ছয়ে ৩৫ রানে জয় পায় ক্যারিবিয়ানরা। অন্য প্রান্তে ১৫ রানে খেলছিলেন রভম্যান পাওয়েল।
এদিন টসের পর নামা বৃষ্টিতে খেলা হয়েছিল দেরিতে। শুরুতে অ্যাশলি নার্সের অফ স্পিন দিয়ে প্রথমবার বোলিং শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পায় দারুণ সাফল্য। ম্যাচের প্রথম বলেই বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে অনায়াসেই স্টাম্পড তামিম ইকবাল।
এই প্রথমবার টি-টোয়েন্টি ম্যাচের প্রথম বলেই স্টাম্পড হলেন কোনো ব্যাটসম্যান। তিনে নামা লিটন দাসও শুরু করেছিলেন প্রথম বলে বাউন্ডারি মেরে। পরের বলে তার সিঙ্গেলে স্ট্রাইক পেলেন সৌম্য সরকার। সামনে খেলার বল পেছনে খেলে হলেন বোল্ড।
ফলে টি-টোয়েন্টিতে এই প্রথম কোনো দলের দুই ওপেনারই আউট হলেন মুখোমুখি প্রথম বলে।
লিটন ও সাকিব আল হাসানের ব্যাটে সেই ধাক্কা অনেকটাই সামাল দিয়েছিল বাংলাদেশ। তৃতীয় ওভারে স্যামুয়েল বদ্রিকে টানা দুটি চার মারেন লিটন। পরের ওভারে আন্দ্রে রাসেলকে চার বলে তিন বাউন্ডারি মারেন সাকিব।
কিন্তু এই দুজনও কাজ অসমাপ্ত রেখে ফেরেন জোড় বেঁধে। ষষ্ঠ ওভারে কিমো পলের শর্ট বলে সীমানায় ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ২১ বলে ২৪ রান করা লিটন। পরের বলে আবারও শর্ট বলেই আপার কাট খেলে সীমানায় কেসরিক উইলিয়ামসের দারুণ ক্যাচের শিকার সাকিব। বাংলাদেশ অধিনায়ক করেছেন ১০ বলে ১৯।
সেখান থেকেই মাহমুদউল্লাহর চোখধাঁধানো প্রতি আক্রমণ। জোড়া উইকেটের পরের ওভারেই চমকে দেন বদ্রির টানা তিন বলে দুটি বাউন্ডারি ও এক ছক্কায়। পরের ওভারে দুর্দান্ত টাইমিংয়ে কিমো পলকে আছড়ে ফেলেন গ্যালারিতে।
আরেক পাশে মুশফিকও শুরু করেছিলেন দারুণ। গড়ে উঠছিল জুটি। ২৪ বলে ৪৭ রানের দারুণ সম্ভাবনাময় সেই জুটির অপমৃত্যু আবারও আপার কাট শটে।
জায়গা বানিয়ে থার্ডম্যান দিয়ে একটি চার মেরেছিলেন মুশফিক। তার জন্য তাই পাতা হয় ফাঁদ, থার্ডম্যান ফিল্ডার একটু সোজাসুজি রেখে শর্ট বল করেন উইলিয়মস। মুশফিক ফাঁদে পা দেন পরের বলেই সেখানে ক্যাচ দিয়ে।
বাকি সময়ে দল এগিয়েছে খুঁড়িয়ে। ইনিংস গড়ার পর্যাপ্ত সময় থাকলেও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি আরিফুল হক। করেছেন ১৮ বলে ১৫।
দল তাকিয়ে তখন মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে। প্রয়োজন ছিল তার শেষ পর্যন্ত থাকা। কিন্তু বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে উইলিয়ামসের স্লোয়ারে যখন বোল্ড হলেন, ইনিংসের বাকি তখনও ২৩ বল। তার ২৭ বলে ৩৫ রানের ইনিংসটা হয়ে থাকল অপূর্ণতার গল্প।
বাংলাদেশের ইনিংসটিও তেমনই। নিখাঁদ ব্যাটিং উইকেটে রান হতে পারত আরও অনেক বেশি।
প্রথম ওভারে দুই উইকেটের পর আর বোলিং পাননি নার্স। পেসারদের দারুণ বোলিংয়ে সেটির প্রয়োজনই হয়নি। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথমবার ৪ উইকেট নিয়েছেন উইলিয়ামস।
সিরিজের শেষ দুটি ম্যাচ হবে ৫ ও ৬ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়।
Posted ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০১ আগস্ট ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta