শহিদুল ইসলাম,উখিয়া(২৯ অক্টোবর) :: মিয়ানমার পালানো রোহিঙ্গারা দিন -দিন হিংস্র হয়ে উঠছে। একের পর এক অপকর্ম সংঘটিত করে চলছে।
শুক্রবার রাতে কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী ১নং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে নলকূপ বসানো নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় রোহিঙ্গারা। এতে স্থানীয় চার বাংলাদেশি আহত হন।একই রাতে রামুর খুনিয়াপালং ইউনিয়নে আবদুল জব্বার নামে এক বাংলাদেশি যুবককে কুপিয়ে হত্যা করে রোহিঙ্গা যুবক হাফেজ মোস্তফা।
পরে হাফেজ মোস্তফাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে স্থানীয়রা।টেকনাফে নয়াপাড়া শরণার্থী ক্যাম্পের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কবির হোসেনের উপরও রোহিঙ্গারা হামলা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে হামলাকারী ছৈয়দ আহমদকে আটক করে পুলিশ।
এছাড়া গত দুই মাসে নতুন করে আসা রোহিঙ্গারা নিজেদের মধ্যে মারামারিতে জড়িয়ে দুই শতাধিক আহত হয়েছে বলেও জানা গেছে।এরআগে গত বছরের ১৩ মে টেকনাফের নয়াপাড়া শরণার্থী ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে আনসার কমান্ডারকে হত্যা করে অস্ত্র লুট করে নিয়ে গিয়েছিল রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা।এই বছরের শুরুর দিকে র্যাব নাইক্ষ্যংছড়ির জঙ্গলে দুই দফা অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে আনসার ক্যাম্পের লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধার করে। এসময় শীর্ষ ৪ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে আটক করে র্যাব।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, রোহিঙ্গাদের সুষ্ঠু সমাধানের মাধ্যমে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা এখন জরুরি। তা না হলে আগামী দিনগুলোতে সংঘাত-সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে পারে রোহিঙ্গারা।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের বলেন, নতুন করে আসা রোহিঙ্গাদের চাপে স্থানীয়রা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। এখানে দু-তিনশ’ পরিবারের গ্রাম ঘিরে হাজার হাজার রোহিঙ্গা পরিবার আবাস গড়ে তুলেছে। স্থানীয়রা বলতে গেলে সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে।
পুলিশের উখিয়া-টেকনাফ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাউ মার্মা জানিয়েছেন, পালিয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গারা ক্যাম্পের ভেতরে বেকার দিন কাটাচ্ছে। প্রতিদিন অভিযোগ আসছে- রোহিঙ্গারা স্থানীয়দের গাছপালা কেটে ফেলেছে।
স্থানীয়দের জায়গা দখল করে রোহিঙ্গারা ঘরবাড়ি নির্মাণ করছে।তিনি বলেন, এনিয়ে স্থানীয় ও রোহিঙ্গাদের ভেতরে দিন দিন বিরোধ সৃষ্টি হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণে প্রতিটি রোহিঙ্গা শিবিরের আলাদা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র স্থাপন করা প্রয়োজন বলেও মনে করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
তবে স্থানীয়রা ক্ষুদ্ধ কন্ঠে বলেন, প্রশাসনের তরফ থেকে দিনের বিকাল ৫টার পর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঢোকা নিষেধ। কিন্তু রোহিঙ্গারা দিবারাত্রি গ্রামের আনাচে -কানাচে অবাধ বিচরণ করছে, তাদের জন্য কি দেশের আইন নাই? এমন প্রশ্ন তুলেন।
Posted ৭:৫৯ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৯ অক্টোবর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta