মোসলেহ উদ্দিন,উখিয়া(৩ ডিসেম্বর) :: কক্সবাজারের উখিয়ার থাইংখালী ময়নারঘোনা রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে সন্দেহজনকভাবে অবস্থান করার অভিযোগে উখিয়া থানা পুলিশ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ৫১ ব্যক্তিকে আটক করেছে। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ভবিষ্যতে ক্যাম্পে অনধিকার প্রবেশ না করার শর্তে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে উখিয়া থানা পুলিশ জানিয়েছেন।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ২৫ আগষ্ট মিয়ানমারে সংঘঠিত জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে দলে দলে রোহিঙ্গারা সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে এদেশে পালিয়ে আসতে শুরু করে। সীমান্তরক্ষী বিজিবি সদস্যরা প্রথম দিকে এসব রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশে বাধা প্রদান করে।
পরবর্তীতে সরকার মানবিক দিক বিবেচনা করে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয়,খাদ্য,চিকিৎসাসহ যাবতীয় সেবা প্রদান করে। এ সুযোগে একটি মহল এসব রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশে সহযোগিতা সহ নগদ টাকা ও বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ শুরু করে। ফলে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে।
কুতুপালং রোহিঙ্গা নেতা আবু ছিদ্দিক জানান, সেনা বাহিনী রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম শুরু করলে সন্দেহভাজন একটি মহল গা ঢাকা দিলেও তারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে রোহিঙ্গাদের গোপনে সাহায্য সহযোগিতা দিয়ে আসছে। তারা বিভিন্ন মসজিদে তাবলীগ জামাতের নামে আশ্রয় নিলেও রাতের বেলায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অনৈতিক ঘুরাফিরা ও রোহিঙ্গা আগমনে উৎসাহিত করার বিষয়টি প্রশাসনের নজরে পড়ে।
এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নিকারুজ্জামান বলেন, মসজিদে যে কোন ধরনের অচেনা লোককে রাত যাপন করার জন্য সংশ্লিষ্ঠ মসজিদ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদানের ভিত্তিতে ওই মহলটি বিচ্ছিন্ন ভাবে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখে।
শনিবার ভোর রাতে উখিয়ার ময়নারঘোনা ক্যাম্পে ঢাকার ১০জন, বাগের হাটের ১জন, নরসিংদির ৩জন, চাঁদপুরের ২জন, শরিয়ত পুরের ২জন, কুড়িগ্রামের ২জন, সোনামগঞ্জের ১জন, নওগার ৩জন, যশোরের ২জন, পটোয়াখালীর ১জন, মাগুড়ার ১জন, টাঙ্গাইলের,২জন, রাজশাহীর ৩জন, গোপালগঞ্জের ২জন, নারায়ণগঞ্জের ৪জন, মৌলভী বাজারের ১জন, চট্টগ্রামের ১জন, কুমিল্লার ১জন, নাটোরের ১জন, ময়মনসিংহের ২জন, সিরাগঞ্জের ১জন, ফরিদপুরের ১জন, লক্ষীপুরের ২জন ও নোয়াখালী ১জন সহ দল নেতা মোহাম্মদপুরের মৃত আবু তাহেরের ছেলে আবু ইউছূপ সহ ৫১জনকে আটক করে উখিয়া থানা পুলিশ।
উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ মাকসুদ আলম জানান,তারা গভীর রাতে ক্যাম্পে সন্দেহজনক ভাবে অবস্থান করছিল। গোপন সুত্রের সংবাদের ভিত্তিতে তাদেরকে থানায় নিয়ে আসা হয়। এবং ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ভবিষ্যতে এ ধরনের আচরণ থেকে বিরত থাকার মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
