বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

এইচএসসির ফলে দশ বছর পর ধস যে কারণে

রবিবার, ২৩ জুলাই ২০১৭
464 ভিউ
এইচএসসির ফলে দশ বছর পর ধস যে কারণে

কক্সবাংলা ডটকম(২৩ জুলাই) :: ২০০৭ সালে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৬৫ দশমিক ৬০ শতাংশের ওপরে। এর পরের বছর এক লাফে ১১ শতাংশ বেড়ে পাসের হার দাঁড়ায় ৭৬ দশমিক ১৯ শতাংশে। এরপর টানা ৯ বছর ক্রমাগত পাসের হার বাড়তে থাকে। কিন্তু ২০১৭ সালে এসে সেই হারে ছেদ পড়লো। দশ বছর পর বড় ধরনের ধস নেমে এবার পাসের হার দাঁড়িয়েছে ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশে।

অনুসন্ধানে এই ফল বিপর্যয়ের বেশ কিছু কারণ জানতে পেরেছেন শিক্ষাবোর্ড সংশ্লিষ্টরা। শিক্ষাবোর্ড কর্মকর্তারা এমনকি শিক্ষামন্ত্রী নিজেও খাতা মূল্যায়ন পদ্ধতির পরিবর্তনকেই পাসের হার কমার প্রধান কারণ হিসেবে দেখছেন। এছাড়া, কেউ কেউ সব বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্ন প্রণয়নকেও দায়ী করছেন।

শিক্ষাবিদদের দাবি,শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে দুর্বলতা রয়েছে। অন্যদিকে, সৃজনশীলে ১০ নম্বর বাড়িয়ে এমসিকিউতে ১০ নম্বর কমানোকেই ফল বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে দাঁড় করাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

গত দশ বছরের ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়,২০১৬ সালে পাসের হার ছিল ৭৪ দশমিক ৭০ শতাংশ,২০১৫ সালে ৬৯ দশমিক ৬০,২০১৪ সালে ৭৮ দশমিক ৩৩,২০১৩ সালে ৭৪ দশমিক ৩০,২০১২ সালে ৭৮ দশমিক ৬৭, ২০১১ সালে ৭৫ দশমিক ০৮,২০১০ সালে ৭৪ দশমিক ২৮,২০০৯ সালে ৭২ দশমিক ৭৮,২০০৮ সালে ৭৬ দশমিক ১৯ এবং ২০০৭ সালে পাসের হার ছিল ৬৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। কিন্তু এবার শুধু পাসের হারই নয়,  গত কয়েক বছরের তুলনায় জিপিএ-৫ এর সংখ্যা সবচেয়ে কম।

প্রতিবছর ফল প্রকাশের পর শিক্ষাবোর্ড সংশ্লিষ্টরা তা পর্যালোচনা করে থাকেন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এ বছরের ফল পর্যালোচনা সভার আয়োজন হতে পারে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এমন ফল বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে খাতা মূল্যায়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তনকেই সামনে আনছেন তারা। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদও এটিকে  প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

ফল প্রকাশের পর সংবাদ সম্মেলন তিনি বলেন,‘পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন পদ্ধতি গত এসএসসি পরীক্ষার সময় পরিবর্তন করা হয়েছিল। তাতে পাসের হার কিছু কমেছিল। সেই পদ্ধতি এবার এইচএসসিতে প্রয়োগ করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন,‘সবচেয়ে বড় কথা আমরা শিক্ষার মান অর্জনের চেষ্টা করছি। শিক্ষকদের মধ্যে তো সমস্যা আছে। এটি কাটিয়ে উঠতে চেষ্টা করছি। মান বেড়েছে,তবে গুণগত মান বৃদ্ধি করা বড় চ্যালেঞ্জ। এটি শুধু বাংলাদেশের নয়, সারা বিশ্বের চ্যালেঞ্জ। আমরা সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে,সব বোর্ডেই মানবিক বিভাগের ফল খারাপ। এর মধ্যে কুমিল্লা ও যশোর বোর্ডে রেকর্ডসংখ্যক শিক্ষার্থী কেবল ইংরেজি বিষয়ে ফেল করেছে। ফলে পাসের হার ও একই সঙ্গে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমেছে। কুমিল্লা বোর্ডে ইংরেজিতে ফেল সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৩৮ শতাংশ। অন্যদিকে যশোর বোর্ডে ৩৭ শতাংশ শিক্ষার্থী ইংরেজিতে পাস করতে পারেনি।

যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধবচন্দ্র রুদ্র বলেন,‘যশোর বোর্ডে ইংরেজি বিষয়ে শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি খারাপ করেছে। এর কারণেই সামগ্রিক ফলে এর প্রভাব পড়েছে।’ কুমিল্লা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কায়সার আহমেদও ইংরেজিতে ফেলকেই প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন,‘কুমিল্লা বোর্ডে সব বিষয়ে পাসের হার ৮০ শতাংশে বেশি। কিন্তু ইংরেজিতে অন্যান্য বোর্ডের চেয়ে ৩৮ শতাংশ কম শিক্ষার্থী পাস করেছে।’

ইংরেজিতেই বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ফেল করার বিষয়ে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন,‘আমি মনে করি ফল বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ ইংরেজিতে ফেল করা। আর ইংরেজিতে ফেল করার পেছনের কারণ হচ্ছে- আগের পাঠ্যবই ছিল মুখস্থ নির্ভর। কেউ ভালোভাবে না বুঝে মুখস্থ করলেও ভালো ফল পেত। কিন্তু এবার সেই সুযোগ কম ছিল।’

তিনি আরও বলেন,‘সাধারণত যেসব শিক্ষক ভালো ইংরেজি পারেন তারা মফস্বলে শিক্ষকতা করতে চান না। ফলে মফস্বলে ভালো ইংরেজির শিক্ষকের অভাব রয়েছে। এটাও ফল বিপর্যয়ের কারণ বলে মনে করি।’ তবে কুমিল্লা বোর্ডে ইংরেজিতে অস্বাভাবিক ফল বিপর্যয়ের কারণ কি তা শিক্ষাবোর্ডকে অনুসন্ধান করার অনুরোধ করেন তিনি।

সব মিলিয়েই এবার সারা দেশে পাসের হার গত দশ বছরের তুলনায় কম। এর ব্যাখ্যায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘এ বছর নতুন পদ্ধতিতে খাতা মূল্যায়ন করা হয়েছে। বোর্ড থেকে পরীক্ষকদের মডেল উত্তর ও নম্বর প্রদানে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছিল। আগে যেমন পরীক্ষকরা নিজের ইচ্ছায় নম্বর কম-বেশি দিতে পারতন, এবার সেটা হয়নি।’

তিনি আরও বলেন,‘প্রধান পরীক্ষকদের ওপর এবার অনেক চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে। মোট খাতার ১২ শতাংশ প্রধান পরীক্ষকদের বাধ্যতামূলকভাবে দেখতে হয়েছে। তাকে নিজের দেখা খাতার নম্বরও পাঠাতে হয়েছে। ক্রস চেক করার জন্য ওই ১২ শতাংশ খাতা আমরা আবার তৃতীয়পক্ষ দিয়ে মূল্যায়ন করিয়েছি। এছাড়া, পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে সরকারের কঠোর অবস্থানও কিছুটা প্রভাব ফেলেছে।’ সব বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্ন হওয়াকেও একটি কারণ হিসেবে মনে করেন।

বোর্ড সংশ্লিষ্টরা জানান,এবার ফল খারাপ হওয়ার পেছনে রয়েছে, ২৬টি বিষয়ে ৫০টি পত্রের সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণ। গত বছর ১৯টি বিষয়ের ৩৬টি পত্রের সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা হয়েছিল। এবার প্রায় প্রতিটি পত্রের সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা হয়েছে। এছাড়া, সৃজনশীলে ১০ নম্বর বাড়িয়ে এমসিকিউ-এ ১০ নম্বর কমানো হয়েছে।

রাজধানীর নামী প্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী রাইসা তাবাসসুম বলে,‘সৃজনশীলে ১০ নম্বর বাড়িয়ে সময় কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে এমসিকিউতে ১০ নম্বর কমানো হয়েছে।’ সিলেবাস পরিবর্তনকেও ফেল করার অন্যতম কারণ বলে মনে করে সে।

464 ভিউ

Posted ১০:৩৮ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৩ জুলাই ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com