১৯৪৪ সালের ১ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন এ বি এম মহিউদ্দীন চৌধুরী। চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার গহিরা গ্রামে তার জন্ম। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
১৯৯৪ সাল থেকে শুরু করে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তিনি তিন দফায় বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগর ও বন্দর নগরী চট্টগ্রামের সিটি মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। সেই নির্বাচনেও দেখা গেছে জনগণের শক্তি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তখন বিরোধি দলে থাকা সত্বেও তিনি বিজয়ী হন জনতার ভোটে।
ভোটের পরই সেবার রাস্তায় নেমে আসে সাধারণ জনগণ। সেদিন বাস বা কারের মতো ট্রান্সপোর্ট নিষিদ্ধ করা হলে মানুষ পায়ে হেঁটে শহরে চলে আসে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টায় শহরে কারফিউ জারি করা হয়। তারপরও জনগণের দাবির কাছে কাতে মেয়র ঘোষণা করতে বাধ্য হয় এবং তার প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা সবার সামনে উন্মুক্ত করা হয়।
নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা বলেন, সেদিন জনগণ পথে না নামলে ক্ষমতাসীন দল নির্বাচনের ফল বদলে দিতে পারতো।
১৯৯৪ সালে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন এ বি এম মহিউদ্দীন। ২০০৫ সালের মেয়র নির্বাচনে তিনি ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মন্ত্রী মীর নাসিরকে পরাজিত করে তৃতীয়বারের মতো চট্টগ্রামের মেয়র নির্বাচিত হন। পাশাপাশি প্রতিপক্ষের তুলনায় ভোটের ব্যবধানও উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পায়।
দিয়েছেন অনেক, পেয়েছেন ভালোবাসা
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কম কাজ করেননি সদ্য প্রয়াত চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের এই মেয়রের দীর্ঘ কর্মজীবনে চট্টগ্রামে পরিবর্তন এনেছেন অনেকখানি।
চট্টগ্রামে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময় চট্টগ্রামে পাঁচটি ম্যাটার্নিটি ক্লিনিক তৈরি করেন তিনি। এসব হাসপাতালে নবজাতকের যত্ন ও আধুনিক গাইনোকলিজাল সুবিধা নিশ্চিত করা হয়। দুজন গাইনী পরামর্শক ও একদল ডাক্তারের দ্বারা এসব হাসপাতাল পর্যবেক্ষণ করা হয়।
এ বি এম মহিউদ্দিন চ্যেধুরী দেশের প্রথম মেয়র ছিলেন যার অধীনে কোনো ব্যক্তিগত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেটার নাম প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি, যেটা স্পন্সর করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন।
মহিউদ্দিন চৌধুরী দায়িত্ব নেওয়ার পর কলেজ, কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার, মিডওয়াইফ ট্রেনিং সেন্টার, হেলথকেয়ার টেকনোলজি ট্রেনিং সেন্টার, সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করানোর মতো ৮টি রাত্রীকালীন কলেজ খোলা হয় চট্টগ্রামে। সিটি কর্পোরেশনে হিন্দু শিক্ষার্থীদের জন্য আটটি হিন্দু ধর্ম শিক্ষা সেন্টারও গড়া হয়।
চট্টগ্রাম বাসীকে তিনি দিয়ে গেছেন অনেককিছু। বিনিময়ে তিনি পেযেছেন চট্টগ্রামবাসীর ভালোবাসা। সেটা টের পাওয়া যায় নির্বাচনের সময়গুলোতে।
তার করা নির্বাচনের সময়েও দেখা গেছে জনগণের শক্তি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তখন বিরোধি দলে থাকা সত্বেও তিনি বিজয়ী হন জনতার ভোটে।
ভোটের পরই সেবার রাস্তায় নেমে আসে সাধারণ জনগণ। সেদিন বাস বা কারের মতো ট্রান্সপোর্ট নিষিদ্ধ করা হলে মানুষ পায়ে হেঁটে শহরে চলে আসে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টায় শহরে কারফিউ জারি করা হয়। জনগণ সারারাত শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান ধর্মঘট করে। পরদিন সকালে জনগণের দাবির কাছে তাকে মেয়র ঘোষণা করতে বাধ্য হয় এবং তার প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা সবার সামনে উন্মুক্ত করা হয়।
নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা বলেন, সেদিন জনগণ পথে না নামলে ক্ষমতাসীন দল নির্বাচনের ফল বদলে দিতে পারতো।