শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

এশিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও চীনকে একই পথে এনেছেন ট্রাম্প

মঙ্গলবার, ২০ মার্চ ২০১৮
359 ভিউ
এশিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও চীনকে একই পথে এনেছেন ট্রাম্প

কক্সবাংলা ডটকম(১৯ মার্চ) :: ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণাকালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধ চালানোর সামর্থ্য নিয়ে সন্দেহ ছিল। এমনকি যারা তাকে পছন্দ করত, তারাও এই ভেবে চিন্তিত ছিল যে জীবন ঝুঁকিতে থাকলে তিনি অনিশ্চয়তায় দোলা খাবেন।

পরমাণু অস্ত্রসম্ভারকে সর্বোত্তমভাবে পরিচালনা করতে পারবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্পের চেয়ে ২২ পয়েন্ট বেশি পেয়েছিলেন হিলারি ক্লিনটন।

এখন আমেরিকানরা হঠাৎ করেই ট্রাম্পকে যুদ্ধে দেখতে পাচ্ছেন। যুদ্ধটা শুরু হচ্ছে বাণিজ্য দিয়ে।

যুক্তরাষ্ট্র আক্ষরিকভাবেই ভারত ও চীন উভয়কেই ‘বাণিজ্য যুদ্ধে’ টেনে এনেছেন। স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির সামনে বন্ধুর পথ রয়েছে।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ভারতের মার্কেন্ডাইজ এক্সপোর্টস ফর ইন্ডিয়া স্কিমের মতো ভর্তুকিপ্রাপ্ত রফতানি কর্মসূচিকে চ্যালেঞ্জ করেছেন ট্রাম্প। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, এ ধরনের উদ্যোগ অসম ক্ষেত্র তৈরি করে মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য ক্ষতির কারণ হচ্ছে।

তারা ভারতের সাথে বিষয়টি মেটানোর জন্য বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটির দ্বারস্থ হয়েছে। দুই দেশ যদি আলোচনার মাধ্যমে উভয়ের কাছে গ্রহণযোগ্য কোনো সমধানে পৌঁছাতে না পারে, তবে যুক্তরাষ্ট্র হয়তো বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য ডব্লিউটিও বিরোধ নিষ্পত্তি প্যানেলের কাছে যাবে।

ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কোনো বাণিজ্য যুদ্ধ আছে কিনা এই প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী রিতা তিওতিয়া নয়া দিল্লিতে বলেন, এমন কাজ উভয় দেশের জন্য হবে বেশ দায়িত্বহীন বিষয়। কারণ উভয় দেশই একে অন্যের বাজারে রফতানির মতো অনেক পণ্য আছে।

ট্রাম্পও গত জানুয়ারিতে ওয়াশিং মেশিন ও সোলার প্যানেলের ওপর কর আরোপ করার নির্বাহী আদেশে সই করে চীনের জন্য বেশ সমস্যার সৃষ্টি করেছেন।

চীনের পক্ষ থেকে কঠিন পাল্টা আঘাত আসতে পারে। কারণ, দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যের পরিমাণ বিপুল এবং রফতানির জন্য আমেরিকান কৃষকেরা চীনের ওপর নির্ভরশীল।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই গবাদি পশুকে খাওয়ানো কাজে ব্যবহৃত মার্কিন শস্য সরগামের আমদানি কোটা নির্ধারণ করা যায় কিনা তা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে।

ট্রাম্প স্টিল ও অ্যালমুনিয়ামের ওপর কর বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করার পর থেকেই সর্বাত্মক বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। চীন একে সংরক্ষণবাদী পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করে তীব্র সমালোচনা করেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র যে শুল্কের কথা ঘোষণা করেছে, তা অনুমানের চেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে।

বাণিজ্যের পরিমাণ কম থাকায় বর্তমানে ভারতের জন্য ক্ষতি কম হলেও অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে তা অভ্যন্তরীণ বাজারেও অনুভূত হবে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সিনিয়র কর্মকর্তারা বলছেন, এই উত্তেজনা থেকে ফায়দা হাসিলের জন্য তৈরি ভারত।

ট্রাম্প চীনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দেওয়ায় প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের প্রয়োজন ভারতের বিশাল বাজারের। তবে চীন যদি তার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে চায়, তবে তা দিল্লিকে ভূ-রাজনৈতিক সুবিধা দেবে।

ভারতীয় জনতা পার্টির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেশাদ্রি শেরি বলেন, চীনের উৎপাদন শক্তির জন্য প্রয়োজন বাজার। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র আর চীনা বাজার থাকছে না। এই পর্যায়ে অর্থনৈতিক মন্দা কামনা করবে না চীন। মন্দা প্রেসিডেন্ট শির জন্য রাজনৈতিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হবে। তাদের প্রয়োজন বড় বাজারের। আর এশিয়ায় ভারতই হলো বৃহত্তম বাজার।

বিরোধী কংগ্রেস দলীয় আইনপ্রণেতা ও ভারতীয় পার্লামেন্টারি স্থায়ী কমিটির পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির প্রধান শশী থারুর বলেছেন, চীন-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা উভয় দেশকেই ভারতের দিকে ধাবিত করবে।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন একমত হতে না পারলে এশিয়ার বড় খেলোয়াড় হিসেবে ভারতের দিকে ক্রমবর্ধমান হারে ঝুঁকবে যুক্তরাষ্ট্র। আর মার্কিন বাজারে সমস্যার সৃষ্টি হলে ভারতসহ তার বাজার বৈচিত্র্যমুখী করবে।

এখন দুই এশিয়ান জায়ান্ট অভিন্ন শত্রুর সামনে পড়ায় বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে কিনা তাই দেখার বিষয়।

সিকিম-ভুটান-ভারত ত্রিভুজে দোকলাম সঙ্কট সত্ত্বেও চীন ও ভারত একে অপরের কাছাকাছি যাওয়ার আলামত ফুটে ওঠেছে।

আগামী সপ্তাহগুলোতে উচ্চপর্যায়ের সফর হতে যাচ্ছে। চীন ও ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্ররা ‘ইতিবাচক প্রাপ্তির’ ওপর জোর দিচ্ছেন।

ভারতে দালাই লামার আগমনের ৬০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান এড়ানোর জন্য সব শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়ার খবর পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর তিব্বতি নির্বাসিত সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা ৩১ মার্চ থেকে ১০ ডিসেম্বরের অনুষ্ঠানটি দিল্লি থেকে সরিয়ে হিমাচল প্রদেশে নিয়ে যাবে।

নির্বাসিত সরকারের পরিচালিত এনজিও সেন্ট্রাল তিব্বত অ্যাডমিনেস্ট্রেশন ভারত সরকারের কাছ থেকে কোনো ধরনের নির্দেশনা পাওয়ার খবর অস্বীকার করেছে। তবে দিল্লিতে চীন পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মোদি সরকারের নতুন সার্কুলারে তারা অবাক হয়ে গেছেন। কারণ এই সরকার কিভাবে ‘তিব্বত কার্ড’ খেলতে চায়, তারা তা দেখেছেন।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে ৪ মার্চ খবর প্রকাশিত হয়েছে, মন্ত্রি পরিষদ সচিব পি কে সিনহা একটি গোপন সার্কুলার জারি করে আগামী কয়েক মাসে প্রবাসী তিব্বত সরকারের আয়োজিত অনুষ্ঠানে হাজির না হতে রাজনীতিবিদ ও আমলাদের ‘নিরুৎসাহিত করেছেন।

ভারত ও চীন শিগগিরই উচ্চ পর্যায়ের অর্থনৈতিক শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে যাচ্ছে। এতে উভয় দেশই বিশ্বায়নের প্রতি জোরালো আহ্বান জানাবে, ট্রাম্পের কারণে নিজ নিজ দেশের ক্ষতি থেকে নিজেদের রক্ষা করার ওপর গুরুত্ব দেবে।

এশিয়ার, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার অপেক্ষাকৃত ছোট দেশগুলো চীন-ভারত সমঝোতার দিকে তাকিয়ে আছে। ভারত ও চীন প্রতিযোগিতা ও সঙ্ঘাতের পথে না গিয়ে সহযোগিতার দিকে এগিয়ে গেলে নেপাল, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমার উপকৃত হবে। এশিয়ার এই দুই জায়ান্ট যদি বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ ও লুক ইস্ট নীতিতে একমতে পৌঁছে, তবে ছোট দেশগুলো অবশ্যই বিপুল অবকাঠামো বিনিয়োগ থেকে উপকৃত হবে।

তবে প্রথমে উভয় দেশকেই হিমালয় অঞ্চলের বিরোধপূর্ণ এলাকা সামরিক শক্তি প্রদর্শন কমিয়ে আনতে হবে, ব্যাপকভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে প্রতিটি সেক্টরে সীমানা চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি করতে হবে।

এটা করা হলে নির্বাচনের আগে মোদি তার সবচেয়ে বড় সাফল্যটি পাবেন, এটি হবে তার টুপিতে (তিনি অবশ্য পাগড়ি পরতেই পছন্দ করেন) বৃহত্তম পালক।

আর পাকিস্তানকে কার্যকরভাবে সংযত রাখতে সক্ষম চীন পারবে তাকে ভারতের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে বাধ্য করতে।

অনন্তকাল ধরে রণদামামার চেয়ে এটিই হবে ভারতের জন্য অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য। কারণ রণদামামায় অস্ত্র বিক্রির মাধ্যমে কেবল ওয়াশিংটনের মন খুশি হয়, পকেট ভারী হয়।

359 ভিউ

Posted ১:৫৯ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২০ মার্চ ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com