জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের দূত নিক্কি হ্যালি বুধবার বলেছেন যে তিনি নয়া দিল্লি ও ওয়াশিংটনের মধ্যে অংশীদারিত্ব সুদৃঢ় করতে ভারত সফর করছেন। সন্ত্রাসদমন ও সামরিক খাতসহ ভারত-মার্কিন বিভিন্ন পর্যায়ে সুযোগগুলোর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
জাতিসংঘে দূত নিযুক্ত হওয়ার পর এটাই হ্যালির প্রথম ভারত সফর। তিনি জোর দিয়ে বলেন, মানুষের স্বাধীনতা ও তাদের অধিকারগুলোর মতোই ধর্মীয় স্বাধীনতাটি গুরুত্বপূর্ণ।
ভারতীয় বংশোদ্ভুত আমেরিকান হ্যালির সঙ্গে ভারতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেনেথ জাস্টার বুধবার মোগল সম্রাট হুমায়ুনের সমাধি পরিদর্শন করেন। হ্যালি তার সফরকে বাড়িতে ফিরে আসা হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘ভারতে আসতে পেরে আমি আন্তরিকভাবে খুশি। আমার কল্পনার মতোই দেশটি সুন্দর। বাড়িতে ফিরতে পারা সবসময়ই আনন্দের। আমার বাবা-মা বলেছে যে এই সময় যাওয়া হবে পাগলামী কারণ এখন খুবই গরম।’
ভারত-মার্কিন সম্পর্কের শক্তিমত্তা সম্পর্কে বলতে গিয়ে হ্যালি উল্লেখ করেন, দুটি দেশের গণতন্ত্রই পুরনো, তারা জনগণ, স্বাধীনতা ও সুযোগের মূল্যবোধগুলো ভাগাভাগি করছে।
হ্যালি বলেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে অনেক অভিন্ন বিষয় রয়েছে এবং দুই দেশের বন্ধুত্বকে সুদৃঢ় করা তার সফরের লক্ষ্য।
তিনি বলেন, ‘এই সময়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ হওয়ার মতো অনেক কারণ দেখতে পাচ্ছি আমরা। ভারতের প্রতি আমাদের ভালোবাসা, ভারত ও যু্ক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্বের প্রতি আমাদের বিশ্বাস এবং আমাদের সম্পর্ক আরো শক্তিশালি করা ইচ্ছা তা সুদৃঢ় করতেই আমি এসেছি।’
হুমায়ুনের সমাধি সংরক্ষণ হলো ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত মূল্যবোধগুলো স্বরণ করিয়ে দেয়া- এ কথা উল্লেখ করে হ্যালি বলেন, ‘আমরা সংস্কৃতিকে কতটা মূল্য দেই এবং ভারত সংস্কৃতিকে কতটা মূল্য দেয় হুমায়ুনের সমাধি তা মনে করিয়ে দিচ্ছে। আমরা কোথা থেকে এসেছি তা মনে করিয়ে দেয় এসব সংরক্ষিত স্থাপনা। ভবিষ্যতের জন্য এগুলোকে সংরক্ষণ করতে হবে আমাদের।’
বৃহস্পতিবার হ্যালি ভারতের বিভিন্ন ধর্মীয় স্থাপনা পরিদর্শন করবেন বল কথা রয়েছে।
ধর্মীয় স্বাধীনতার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, অধিকার ও জনগণের স্বাধীনতার মতোই ‘ধর্মীয় স্বাধীনতাও গুরুত্বপূর্ণ বলে আমরা মনে করি।’
ভারতে দুই দিনের সফরকালে হ্যালি দেশটির সিনিয়র কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী নেতা ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাত করবেন। তিনি ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ‘শক্তিশালী মৈত্রিবন্ধনটি’ তুলে ধরছেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের একজন হ্যালির সঙ্গে ভারতীয় কর্মকর্তাদের আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র-ভারত কৌশলগত সম্পর্ক এবং বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনসহ বিভিন্ন বিষয় উঠে আসতে পারে।
পাঞ্জাবের এক শিখ পরিবারের কন্যা হ্যালিই প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভুত ব্যক্তি যিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনে মন্ত্রির পদমর্যাদায় কাজ করছেন।