রাবিজুল ইসলাম মোস্তাক(১৪ ডিসেম্বর) :: দেশীয় পর্যটনের রাজধানী কক্সবাজারের মূল্যবান ও জন গুরুত্বপূর্ণ সম্পদে শকুনের দৃষ্টি পড়েছে। ওয়াল্ড লং বিচের তকমাধারী সাগর সৈকতের আশা-পাশের জায়গা ও স্থাপনাকে টার্গেট করে এগুচ্ছে সুযোগ সন্ধানী অসাধু চক্র। এরই ধারাবাহিকায় দেশীয় পর্যটনের প্রধানতম সম্পদ ঐতিহ্যবাহি হোটেল শৈবালকে পানির দামে কুক্ষিগত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে সংঘবন্ধ একটি চক্র।
কক্সবাজারের সচেতন মানুষ বেঁচে থাকতে ১৬ কোটি মানুষের কয়েক হাজার কোটি টাকার এ সম্পদ কখনো অন্যায় ভাবে অন্যত্র হস্তান্তর করতে দেবোনা। ১৪ ডিসেম্বর কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মুখ শৈবাল রক্ষা আন্দোলন আয়োজিত বিশাল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে কক্সবাজারের বিশিষ্টজনরা একথা বলেন।
এতে বক্তাগণ আরও বলেন- কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী জেলে পার্ক, শিশুর সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের তীর্থ কেন্দ্র শিশু একাডেমী জেলার ৩০ হাজার ডায়াবেটিস রোগীর চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র ডায়াবেটিকস হাসপাতালের মূল্যবান জায়গা এখন হুমকির মুখে, আরক্ষিত। অথচ জেলে পার্কে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ৭১ রনাঙ্গণের সিপাহসালার সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া জাতির উদ্দেশ্যে নাতি নির্ধারণী বক্তব্য রেখেছিলেন।
বক্তাগণ কক্সবাজারের নাজিরার টেক থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সী-বীচ লাগোয়া সব মূল্যবান ভূমি ও সম্পদ রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তহক্ষেপ কামনা করেছেন
এদিকে মানব বন্ধনে সুজনের জেলা সভাপতি প্রফেসর এম.এ বারী বলেন,শৈবাল হোটেল কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। একই সাথে এই সরকারি হোটেল ও তার নয়নাভিরাম পরিবেশ কক্সবাজারের গুরুত্বপূর্ণ ঐহিত্য। এই মহা মূল্যবান সম্পদটি নামমাত্র মূল্যের বিনিময়ে কোনো পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশীপের হাতে তোলে দেয়া যাবে না। যদি তা করা হয় তাহলে এটা কক্সবাজারের মানুষ নেবে না। যেকোনো ভাই এই অপচেষ্টাকে প্রতিহত করবে কক্সবাজারের মানুষ।
বক্তারা আরো বলেন, আনুমানিক পাঁচ হাজার কোটি টাকা সম্পাদক শৈবাল হোটেলকে মাত্রা ৬০ কোটি টাকায় লিজ দেয়া কোনো ভাবেই মেনে নেয়া যাবে না। অত্যন্ত গোপনে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে কিছু দুর্নীতিবাজ আমলা। এটা মানুষ জেনে গেছে। শুধু শৈবাল হোটেল নয়; কক্সবাজারের আরো মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ লুট হয়ে যাচ্ছে। এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। কক্সবাজারবাসী তা হতে দেবে না।
ইঞ্জিনিয়ার কানন পালের সভাপতিত্বে, পরিকল্পিত কক্সবাজারের সমন্বয়ক আবদুল আলীম নোবেলের সমন্বয়ে ও তেল-গ্যাস-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির জেলা সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ কলিমের সঞ্চালনায় আয়োজিত উক্ত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সুজনের জেলা সভাপতি প্রফেসর আবদুল বারী, প্রবীণ সাংবাদিক মুহম্মদ নূরুল ইসলাম, সাংবাদিক মুহাম্মদ আলী জিন্নাত, সাংবাদিক শামসুল হক শারেক, সেক্টরস কমান্ডার ফোরাম-৭১ এর নেতা সোলতান মাহমুদ, কক্সবাজার পৌরসভার কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম, কক্সবাজার সোসাইটির সভাপতি কমরেড গিয়াস উদ্দীন, সাংবাদিক এম.আর মাহবুব, দীপক শর্মা দীপু, আমানুল হক বাবুল, এইচএম নজরুল ইসলাম, শিক্ষক নেতা তাহমিদুলু মুনতাসির, যুবনেতা নাজিম উদ্দীন, কমিউনিস্টপার্টির নেতা অনিল দত্ত, এড. আহছান উল্লাহ, আজিজ রাসেল।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক সরওয়ার আজম মানিক, মো. জুনাইদ, চঞ্চল দাশ গুপ্ত, মাহবুবুর রহমান, আহসান সুমন, প্রিন্সিপাল শাহাদাত হোসেন আল কাদেরী, মো. ইউনুছ, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সদর উপজেলা সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, সিয়াম মাহমুদ সোহেল, জুয়েল দে, কণ্ঠশিল্পী মোরশেদ, আয়াছ মাহমুদ রনি, ইসা রুহুল্লাহ রাহুল, মো. সোহেল, রাসেদুল আরাফাত, ইন্সট্রাক্টর নূরুল আমিন, মিনহাজ চৌধুরী, রুবেল হোসেন, দিদারুল আলম দিদার, মাহফুজুর রহমান, মিজানুর রহমান মিজান প্রমুখ। মানববন্ধনে একাত্মতা প্রকাশ করে অংশ নেন পরিকল্পিত কক্সবাজার আন্দোলন, কক্সবাজার সোসাইটি, বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদ ও শৈবাল আন্দোলন।
প্রসঙ্গত, কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পের প্রধান আকর্ষণ পাঁচ হাজার কোটি টাকার সম্পদ শৈবাল হোটেলটি মাত্র ৬০ কোটি টাকায় ওরিয়ন গ্রুপ নামে এক বিতর্কিত কোম্পানিকে লিজ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ডায়বেটিক হাসপাতাল, শিশু একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমিসহ আরো বেশ গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ অসাধু প্রক্রিয়ায় হাতছাড়া হতে যাচ্ছে।
Posted ১:৫৫ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta