কক্সবাংলা রিপোর্ট(১৫ ডিসেম্বর) :: কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ‘বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প’ এলাকায় সিঙ্গেল পয়েন্ট মোরিং (এসপিএম) প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে টানাপড়েন দেখা দিয়েছে।
নৌ মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পে’ অর্থায়ন করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। সংস্থাটি ওই এলাকায় জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের এসপিএম প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে আপত্তি জানায়। তারপরও এ প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেছে জ্বালানি মন্ত্রণালয়।
নৌ মন্ত্রণালয় বরাবর এক চিঠিতে জাইকা জানিয়েছে, এসপিএম প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে বন্দর চ্যানেলের নিচ দিয়ে আড়াআড়িভাবে একটি পাইপলাইন বসাতে হবে। এতে ওই এলাকায় আসা দেশি-বিদেশি জাহাজের নিরাপদ চলাচল বাধাগ্রস্ত হবে।
এছাড়া মৎস্য আহরণ এলাকা সংরক্ষণসহ বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করবে। এতে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
এ জন্য প্রকল্পের কাজ শুরুর আগে জ্বালানি মন্ত্রণালয়কে নৌ মন্ত্রণালয় থেকে অনাপত্তিপত্র নেওয়ার পরামর্শ দেয় জাইকা। আর এ অনাপত্তিপত্র নিয়েই নৌ মন্ত্রণালয় এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে টানাপড়েন শুরু হয়।
জানা গেছে, প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে একাধিকবার নৌ মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তিপত্র চেয়ে আবেদন করে জ্বালানি মন্ত্রণালয়। কিন্তু নৌ মন্ত্রণালয় কোনও উত্তর না দেওয়ায় প্রকল্পের কাজ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জ্বালানি মন্ত্রণালয়।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন বংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)।
এ বিষয়ে গত ২২ নভেম্বর জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় জানায়, মহেশখালীর মাতারবাড়ি এলাকায় বন্দর উন্নয়নের কার্যক্রম চলমান আছে। জাইকা এ প্রকল্পে অর্থায়ন করেছ।
বন্দর এলাকায় জাইকার ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনও শেষ করা হয়েছে। জাইকার একটি প্রতিনিধিদল খুব শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবে। ডিসেম্বরে মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের বিষয়ে তারা অ্যাপ্রাইজাইল মিশন পরিচালনা করবে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, জাইকার সমীক্ষায় বলা হয়েছে, অনুমোদিত নকশায় এসপিএম প্রকল্পের পাইপলাইনটি প্রস্তাবিত মাতারবাড়ি বন্দরের চ্যানেল আড়াআড়িভাবে দেখানো আছে। জাইকার প্রতিনিধিদল বিভিন্ন সময় মৌখিক ও লিখিতভাবে পাইপলাইনটি নির্মাণ না করার অনুরোধ জানিয়েছে।
এ বিষয়ে চলতি বছরের ১১ অক্টোবর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে চিঠিও দেওয়া হয়।
এ অবস্থায় প্রকল্প গ্রহণ, স্থাপনা নির্মাণ ও সি টার্মনাল স্থাপনের আগে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে অনাপত্তিপত্র বা ছাড়পত্র নিতে পুনরায় অনুরোধ জানানো হয়।
এ প্রসঙ্গে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, ‘বিষয়টি খুবই টেকনিক্যাল। জাইকাও আপত্তি দিয়েছে। কাজেই দুই মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করেই প্রকল্পের কাজগুলো এগিয়ে নেওয়া উচিত।’
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তাও জানান, ‘বিষয়টি নিয়ে আলাপ আলোচনা চলছে। সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।’
Posted ৩:৩০ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta