কক্সবাংলা রিপোর্ট(৩০ জুলাই) :: কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় মাতারবাড়িতে প্রস্তাবিত কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয়ভাগের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে জাপান।চলতি আগস্ট মাসে এই কাজ শুরু হবে।আশা করা হচ্ছে, আগামী ২০২৪ সালে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। জাপানের ৫টি কোম্পানি এ প্রকল্পে নানা সরঞ্জামাদি সরবরাহ করবে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে সুমিতোমো করপোরেশন, আইএইচআই, তোশিবা এবং পেন্ট-ওসেন কনস্ট্রাকশন।
নিক্কেই এশিয়ান রিভিউ এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ অন্যতম সহযোগী সংস্থা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি- জাইকা এই প্রকল্পের জন্য ৪৫১ কোটি ডলার অর্থ সহায়তা দিচ্ছে। ৫ কোম্পানির মধ্যে আইএইচআই বয়লার সরবরাহ করবে তোশিবা ও তোশিবা প্লান্ট সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিস টারবাইন, পাওয়ার জেনারেটর ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ করবে।
এছাড়া পেন্টা-ওসেন কনস্ট্রাকশন পোর্ট নির্মাণ করবে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা হবে ১২০০ মেগাওয়াট। এটি হবে বাংলাদেশের অন্যতম বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র,যা দেশের মোট চাহিদার ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ সররবাহ করবে।এ প্রকল্পে ব্যবহার করা হবে আল্ট্রা সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি। যা থার্মাল পাওয়ার প্লান্টের চেয়ে ২০ শতাংশ কম কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন করবে।
জানা যায়,কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর মাতারবাড়িতে নির্মিতব্য ১২০০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ধাপের কাজ শেষ হয়েছে।আগস্টে দ্বিতীয় ধাপের কাজ শুরু করা গেলে ২০২৪ সালের মধ্যে শেষ করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল পদ্ধতিতে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে পরিবেশের ক্ষতি হবে না,পাশাপাশি জাতীয় গ্রিডে বড় ধরনের বিদ্যুৎ যোগানে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
অপরদিকে মূল প্রকল্পের প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য গত ২৯ জুন জাইকার সাথে বাংলাদেশ সরকারের ১০ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ইয়েন বা ৭৭৫ কোটি টাকা ঋণের চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।
সম্প্রতি মাতারবাড়ি প্রকল্পের প্রাথমিক ক্রয়ের জন্য চলতি মাসেই টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ২০১৪ সালে ৩৬ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করে সরকার।সে সময় সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়, এই প্রকল্পে ২৯ হাজার কোটি টাকা দেবে জাইকা।
ভৌগলিক দৃষ্টিকোণ থেকে বঙ্গোপসাগর থেকে কক্সবাজারের মহেশখালী চ্যানেল হয়ে কুহেলিয়া নদীর তীরেই ৭ হাজার ৬শ ৫৬ একর জমিতে মাতারবাড়িতে জাপানের সহায়তায় আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির সমন্বয়ে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে জমি অধিগ্রহণ,নদীর চ্যানেল ড্রেজিং, প্রশাসনিক ভবন নির্মাণসহ প্রথম ধাপের কাজ প্রায় শেষ।এখন মূল প্রকল্পের জাপানের সুমিটোমো ও মারুবিনি করপোরেশনের দেয়া ২টি দরপত্রের আর্থিক মূল্যায়নের কাজ চলছে।
২০১৪ সালে পাস হওয়া এ প্রকল্প ৩৬ হাজার কোটি টাকার মধ্যে জাইকা দেবে ২৯ হাজার কোটি টাকা আর বাংলাদেশ সরকার ব্যয় করবে ৫ হাজার কোটি টাকা। সরকারের বড় প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম এই কক্সবাজারের মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এখানে কাজ চলছে পুরোদমে।এর থেকে যে বিদ্যুৎ আসবে তা শুধু জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে না চট্টগ্রামের শিল্প কারখানা সহ মিরসরাইয়ে যে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে তাতেও ব্যবহার করা হবে বলে জানা গেছে সংশ্লিষ্ট সূত্রে।
Posted ১২:৪৩ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ৩১ জুলাই ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta