বুধবার ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বুধবার ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে ভূমিধস ও বন্যার ঝুঁকি বাড়ছে

সোমবার, ১৫ জুলাই ২০১৯
153 ভিউ
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে ভূমিধস ও বন্যার ঝুঁকি বাড়ছে

কক্সবাংলা রিপোর্ট(১৫ জুলাই) :: জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে প্রবল বর্ষায় কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গার আশ্রয় শিবিরগুলোতে ভূমিধস ও বন্যার ঝুঁকি বাড়ছে। গত ১২ দিনে প্রায় ২৫ হাজার রোহিঙ্গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঢলের পানিতে ভেসে গিয়ে দুটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

গত তিন দিনে কক্সবাজারে বৃষ্টি হয়েছে প্রায় ২৫০ মিলিমিটার। জুলাই মাসে এই জেলায় গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১ হাজার মিলিমিটারের বেশি। এই বৃষ্টি একসময় বন-পাহাড়ঘেরা টেকনাফ ও উখিয়ায় তেমন কোনো মানবিক সংকট তৈরি করত না। গত বছর থেকে বর্ষা এলেই উখিয়া ও টেকনাফে ভূমিধস ও বন্যা দেখা দেয়।

গেলবারের চেয়ে এবারের বর্ষায় এই দুর্যোগের ঝুঁকি বেশি বলে মনে করছে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে দায়িত্ব পালনকারী দেশি-বিদেশি সংস্থাগুলো।

রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন পর্যায়ের আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সমন্বয়কারী ইন্টার সার্ভিস কো-অর্ডিনেশন গ্রুপের (আইএসসিজি) হিসাবে গত বছর পুরো বর্ষা মৌসুমে ৫৫ হাজার রোহিঙ্গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এই সময়ে অন্যত্র ৬ হাজার ২০০ রোহিঙ্গাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

এ বছর এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গার সংখ্যা ৪৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া ৫ হাজার ৬০০ রোহিঙ্গাকে।

জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরগুলো পরিদর্শন শেষে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে গত বৃহস্পতিবার দেওয়া বক্তব্যে বলেন, রোহিঙ্গা শিবিরগুলো বর্ষায় আরও বিপদগ্রস্ত হতে পারে। বর্ষার ওই বিপদ থেকে তাদের রক্ষা করতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে আরও সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) থেকে ৯ জুলাই রোহিঙ্গা শিবিরগুলোর শিশুদের ঝুঁকি পরিস্থিতি নিয়ে আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

তাতে দেখা গেছে, বৃষ্টি ও বন্যার কারণে রোহিঙ্গা শিশুদের ৮৬৮টি শিক্ষাকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর সেখানে যাওয়ার সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

রোহিঙ্গা শিবিরের ৭০ হাজার ১৬০ জন শিশুর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। বন্যায় ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়া ৪ হাজার রোহিঙ্গাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।এ বছর ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গার সংখ্যা ৪৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সরকারের শরণার্থী ও ত্রাণ কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম প্রথম আলোকে বলেন, সাধারণত বর্ষায় রোহিঙ্গা শিবিরগুলোর অবস্থার কিছুটা অবনতি হয়। ইতিমধ্যে ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ বর্ষার কারণে কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

নানা ধরনের প্রতিরক্ষামূলক অবকাঠামো নির্মাণ করায় এবার বর্ষায় ভূমিধসের আশঙ্কা কম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা ৪০০ ঘর নির্মাণ করে রেখেছি। যেগুলোতে জরুরি পরিস্থিতিতে বন্যায় ঝুঁকিপূর্ণ রোহিঙ্গাদের সরিয়ে এনে রাখা যাবে।’

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, আগামী দুই দিন কক্সবাজারে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় বেশি হতে পারে।একারণে এ জেলায় ভূমিধসের আশঙ্কাও রয়েছে বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।

জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছরের ২৫ আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে সাড়ে ৬ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। নতুন ও পুরোনো মিলিয়ে বর্তমানে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে।

গত বছরের মার্চে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গা শিবিরের অবস্থা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল।

তাতে বলা হয়েছে, কক্সবাজারে বিভিন্ন শিবিরে আশ্রয় নেওয়া সাড়ে ৬ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে ৮০ হাজার বন্যা ও ২৩ হাজার ভূমিধসের মারাত্মক ঝুঁকিতে আছে। মাঝারি ঝুঁকিতে আছে আরও ১ লাখ রোহিঙ্গা।

গত বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগবিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের করা ‘বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরের বন্যা ও ভূমিধসের প্রভাব বিশ্লেষণ’ শীর্ষক এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ১ লাখ ২ হাজার ৩৩ রোহিঙ্গাকে মে-জুনের মধ্যে নিরাপদ স্থানে সরাতে না পারলে সেখানে বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে।

ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের ৫৪ শতাংশই হচ্ছে শিশু এবং ৪ শতাংশ বয়স্ক। বন্যা ও ভূমিধসের সময় তারা সবচেয়ে বেশি বিপদের মুখে থাকবে।

এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক হ‌ুমায়ূন আখতার বলেন, কক্সবাজার অঞ্চলে যে পাহাড়গুলোতে রোহিঙ্গা শিবিরগুলো গড়ে উঠেছে, সেখানকার মাটিতে বালুর পরিমাণ বেশি। একসময় বনভূমি থাকা ওই পাহাড়গুলোর প্রায় সব গাছ কেটে ফেলায় মাটি এমনিতেই আলগা হয়ে আছে। ফলে সেখানে যেকোনো সময় বড় ধরনের পাহাড়ধসের ঝুঁকি থাকতে পারে।

153 ভিউ

Posted ৭:৫৪ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৫ জুলাই ২০১৯

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com