কক্সবাংলা রিপোর্ট(১৭ মে) :: খুন, ধর্ষণ আর অগ্নিসংযোগের মতো সহিংসতার হাত থেকে প্রাণে বাঁচতে লাখ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারস্থ উখিয়া-টেকনাফের শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। নিজ দেশ ছেড়ে আসা এসব মুসলিম শরণার্থী সব হারালেও নতুন প্রাণের আগমন থেমে নেই।
গত নয় মাসে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু শিবিরগুলোয় ১৬ হাজারেরও বেশি শিশু জন্ম নিয়েছে। সে হিসাবে এসব শিবিরে দৈনিক গড়ে ৬০ শিশু জন্ম নিয়েছে।আর মাসে জন্ম নিচ্ছে অন্তত ১৮০০ শিশু।
জাতিসংঘের শিশু তহবিলের ১৭ মে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউনিসেফ প্রতিনিধি ইদুয়া বেগবেদের বরাত দিয়ে বলা হয়, প্রতিদিন প্রায় ৬০টি করে শিশু এক আতঙ্কজনক পরিবেশে তাদের প্রথম শ্বাস নিচ্ছে। নিজ ভিটেমাটি থেকে দূরে বাস্তুচ্যুতি, সহিংসতা, মানসিক আঘাত ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে ধর্ষণের শিকার হয়ে আসা মায়ের কোলে জন্ম নিচ্ছে তারা।
রাখাইনে গত বছরের আগস্টে সহিংসতা শুরুর পর বাংলাদেশ অভিমুখে উদ্বাস্তুদের নতুন ঢল আসতে শুরু করে। মিয়ানমারের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী প্রদেশটিতে রোহিঙ্গা নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে ব্যাপকহারে ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
কক্সবাজারে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মধ্যে যৌন নিপীড়নের শিকার নারী ও শিশুরাই এখন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি ও অবহেলার মুখে রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ইউনিসেফ বলছে, এদের মধ্যে নারী ও মেয়ে শিশুদেরই বিশেষ সহায়তার প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। যদিও কলঙ্ক ও সামাজিক নিপীড়নের ভয়ে এরা সামনে না-ও এগিয়ে আসতে পারে।
এ বিষয়ে বেগবেদের ভাষ্য হলো, যৌন সহিংসতার কারণে ঠিক কত শিশু জন্ম নিচ্ছে ও নিতে পারে, সে বিষয়ে সঠিক সংখ্যা বের করা একেবারেই অসম্ভব।
ইউনিসেফ জানায়, সেপ্টেম্বরের পর থেকে উদ্বাস্তু শিবিরে জন্ম নেয়া শিশুদের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে জন্ম নিয়েছে মাত্রা ৩ হাজার বা এক-পঞ্চমাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, সহযোগীদের সঙ্গে নিয়ে উদ্বাস্তু শিবিরে জন্মের আগে ও পরে প্রসূতি মা ও শিশুর প্রয়োজনীয় সেবা দিয়ে যাচ্ছে ইউনিসেফ। এছাড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোয় শিশুজন্মের পূর্বকালীন ও পরবর্তী সেবা গ্রহণের জন্য আগত রোহিঙ্গা মায়েদের সংখ্যা বাড়ানোর তাগিদে মাঠ পর্যায়ে ২৫০ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দিয়েছে ইউনিসেফ।
এছাড়া সদ্যোজাত শিশুর আইনসম্মত ও যথাযথ নিবন্ধন প্রক্রিয়ার পক্ষেও প্রচারণা চালানোর প্রয়াস নিয়েছে সংস্থাটি, যাতে করে শিশুদের প্রাপ্য মৌলিক সেবাপ্রাপ্তিতে কোনো ধরনের সমস্যা না হয়।
Posted ২:২৩ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৮ মে ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta