কক্সবাংলা রিপোর্ট(১৪ সেপ্টেম্বর) :: কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩০টি ক্যাম্পে নতুন করে আসা সাত লাখ রোহিঙ্গা ছাড়াও আগে থেকে ছিল মিয়ানমারের প্রায় চার লাখ মানুষ।
কক্সবাজারের ৩০টি ক্যাম্পে আশ্রিত এসব রোহিঙ্গার মধ্যে অনাথ শিশু প্রায় ৪০ হাজার।
এদের মধ্যে আট হাজারের বেশি শিশুর পিতা-মাতা এমনকি পরিবারের কোনো সদস্য নেই। নিকটাত্মীয় ছাড়াই ভিন্ন ভিন্ন পরিবারে বেড়ে উঠছে এসব শিশু। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এদের দেখভাল করছে।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নতুন করে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে নিবন্ধনকৃত অনাথ শিশু মোট ৩৯ হাজার ৮৪১ জন।
এর মধ্যে ১৯ হাজার ৫৯ জন ছেলেশিশু। মেয়েশিশু ২০ হাজার ৭৮২ জন। পরিবারের কারো সন্ধান মেলেনি এমন শিশু ৮ হাজার ৩৯১ জন। সমাজসেবা অধিদপ্তরের জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, স্বজনহীন শিশুদের লালন-পালনের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তর ও ইউনিসেফের যৌথ উদ্যোগে জুন থেকে বিভিন্ন পরিবারকে অর্থসহায়তা দেয়া হচ্ছে।
প্রতি মাসে একেকজন শিশুর তত্ত্বাবধান ও সুরক্ষার জন্য ২ হাজার টাকা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া শিশুদের খাদ্য ও চিকিৎসা সুবিধাও দেয়া হয়।
ইউনিসেফ আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিলেও প্রকল্পটি ব্যবস্থাপনা ও তদারকি করছে সমাজসেবা অধিদপ্তর। প্রাথমিকভাবে সাত হাজার শিশুকে এসব সহায়তা দেয়া হলেও বাকিদেরও এ কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
সমাজসেবা অধিদপ্তর চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী বলেন, সমাজসেবা অধিদপ্তর জরিপের মাধ্যমে পিতা-মাতা ও স্বজনহীন শিশুদের তালিকা তৈরি করেছে। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে তাদের সহায়তার চেষ্টা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ইউনিসেফের সঙ্গে ছয় মাসের একটি চুক্তি হয়েছে সরকারের।
চুক্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত শিশুদের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দেয়া হবে। চুক্তির মেয়াদ শেষে প্রকল্পটির সময়সীমা বৃদ্ধি অথবা নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে স্বজনহীন অনাথ শিশুদের নিরাপদে বসবাসের পরিবেশ তৈরি করা হবে।
রোহিঙ্গাদের নিয়ে কর্মরত বেসরকারি সংস্থার কর্মীরা জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অনাথ শিশুরাই সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে। এদের অনেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। পিতা-মাতা ও পরিবারের কেউ না থাকায় এসব শিশু মানসিক আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
শিশুদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে বেসরকারি সংস্থার পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন প্রকল্প নেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, ক্যাম্পের ভেতরেই স্বজনহীন নিঃসঙ্গ শিশুদের বিশেষ পরিচর্যার জন্য একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এসব শিশুর জন্য বিশেষ স্কুল ও চিকিৎসা ব্যবস্থার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
Posted ৪:০৩ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta