বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

কক্সবাজারে তহবিল সংকটে IOM : রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যসেবা বন্ধের আশঙ্কা

বুধবার, ০৬ জুন ২০১৮
335 ভিউ
কক্সবাজারে তহবিল সংকটে IOM : রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যসেবা বন্ধের আশঙ্কা

কক্সবাংলা রিপোর্ট(৬ জুন) :: ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর পক্ষ থেকে ৪ লাখেরও বেশি চিকিৎসাসেবা দেওয়া হলেও এখন তহবিল সংকটে পড়েছে সংস্থাটি। জরুরি ভিত্তিতে সহায়তা না পেলে এ সেবা বন্ধ করে দিতে হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে তারা। এতে প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুগুলোও ঠেকানো সম্ভব হবে না বলে সতর্ক করেছে আইওএম।

বুধবার (৬ জুন) সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এসব কথা জানা গেছে।

গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭ লাখ মানুষ। তারা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।

২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গা সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত কক্সবাজারে ৪ লাখেরও বেশি পরামর্শসেবা দিয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা (আইওএম)। সংস্থার চিকিৎসাকর্মীরা রোহিঙ্গা এবং স্থানীয় রোগীদের এসব সেবা দিয়েছেন।

গর্ভাবস্থাজনিত জটিলতা থেকে শুরু করে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত-সবাইকে চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন তারা। আইওএম-এর ক্লিনিকগুলোতে দেওয়া পরামর্শসেবা গ্রহণকারীদের মধ্যে অনেক শিশুও রয়েছে। প্রতি ১০টির মধ্যে ১টি পরামর্শসেবা দেওয়া হয়েছে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুকে।

গত চার মাসে আইওএম-এর কর্মীরা প্রতিদিন ৭০০ জন স্থানীয় ও রোহিঙ্গা নারীকে তাদের সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে সহায়তা দিয়েছেন। সিজারের ব্যবস্থাও ছিল। শুধু মে মাসেই আইওএম-এর অর্থায়নকৃত সার্জিক্যাল ফ্যাসিলিটির আওতায় সিজারের মাধ্যমে ১০ জনের জন্ম হয়েছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বৃষ্টির কারণে রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বেড়েছে। চিকিৎসাকর্মীদের ধারণা, তাদেরকে আরও অনেক মানুষকে চিকিৎসা দিতে হবে। তবে জরুরি আর্থিক সহায়তা পেলে শিগগিরই এসব সেবা কর্মসূচি বন্ধ করতে হবে বলে আশঙ্কা করছে আইওএম।

কক্সবাজারে নিয়োজিত আইওএম-এর ইমারজেন্সি কো-অর্ডিনেটর ম্যানুয়েল পেরিরা বলেন, ‘রোগ নিরাময়ের লক্ষ্যে নয় মাসে ৪ লাখ পরামর্শ সেবাপ্রদান বেশ উল্লেখযোগ্য অর্জন। তবে জরুরি তহবিল ছাড়া আমরা তা আর চালাতে পারব না। যদি তা হয়, তবে আসন্ন মাসগুলোতে লাখো মানুষ চিকিৎসার অভাবে থাকবে এবং চোখের সামনে অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু দেখব আমরা।’

কক্সবাজার জেলার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আব্দুস সালাম বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয়দের স্বাস্থ্যসংক্রান্ত ইস্যুগুলো মোকাবিলায় আইওএম ব্যাপক কাজকর্ম করছে। আগস্টে রোহিঙ্গাদের ঢল শুরুর পর ওই এলাকার স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় সরকারকে সহযোগিতার জন্য আমরা তাদের অবদানের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করছি।’

আব্দুস সালাম বলেন, ‘আইওএম রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্থানীয় কমিউনিটির জন্য হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করেছে। তারা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোকেও শক্তিশালী করেছে। আইওএম-এর সহযোগিতা ছাড়া আমরা কক্সবাজারের স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় এতোটা সফল হতাম না।’

আইওএম-এর কুতুপালং এক্সটেনশন প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সেন্টার (পিএইচসিসি)-কে কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরের জন্য ডেলিভারি সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হবে। প্রতিদিন ২০০ জনেরও বেশি রোগীকে এখানে সেবা দেওয়া হয়। মে মাসে এক গর্ভবতী মায়ের জটিলতা দেখা দিলে আইওএম-এর স্বাস্থ্যকর্মীরা তাকে তার বাড়ি থেকে পিএইচসিসিতে নিয়ে আসেন। পিএইচসিসিতে পৌঁছানোর পর সেখানকার মেডিক্যাল কর্মকতারা শনাক্ত করেন, ওই নারী অবস্ট্রাক্টেড লেবার জটিলতায় ভুগছেন।

মেডিক্যাল কর্মকর্তারা তখন আইওএম-এর ইমার্জেন্সি হটলাইনে ফোন করে অ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে বলেন। অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছানোর পর পরই তাকে আইওএম-এর তহবিলে পরিচালিত সার্জিক্যাল ফ্যাসিলিটিতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে তার সিজার হয়। সেদিন এ জীবন-সুরক্ষামুলক সেবা পাওয়ার কারণে সুস্থভাবে বাড়িতে ফিরেছিলেন মা ও শিশু।

আইওএম-এর ক্লিনিক ও মেডিক্যাল কর্মীরা জরুরি রোগীদেরকে অ্যাম্বুলেন্সে করে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। প্রি-এ্যাকলেমশিয়া, প্রচণ্ড অপুষ্টি, গুরুতর গর্ভাবস্থাজনিত জটিলতা, হৃদরোগ এবং তীব্র জ্বরের ক্ষেত্রে এ উপায়ে সেবা দেওয়া হয়ে থাকে।

রোহিঙ্গা ঢল শুরু হওয়ার আগে থেকে কুতুপালং পিএইচসিসিতে কাজ করছেন ডা. রাইসুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা স্রোত শুরু হওয়ার পর থেকে অনেকে গুলির আঘাত, শরীর পুড়ে যাওয়া, বিস্ফোরণের শিকার হওয়া এবং লৈঙ্গিক সহিংসতাসহ বিভিন্ন আঘাত নিয়ে এখানে এসেছেন। এ ধরনের ঘটনা এখন কমে এসেছে। তবে রোগীদের সংখ্যা কমতে দেখছি না আমরা।’

২০১৭ সালের নভেম্বরে রোহিঙ্গা শিবিরে ডিপথেরিয়ার প্রকোপ ঠেকাতে আইওএম-এর চিকিৎসাকর্মীরা মধ্যমণি হিসেবে কাজ করেছেন। রোগের বিস্তার ঠেকাতে তাদের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য ছিল।

আইওএম তহবিল সংকটে আছে জানিয়ে কক্সবাজারে সংস্থার জরুরি স্বাস্থ্যসেবাবিষয়ক সমন্বয়কারী অ্যান্ড্রু এমবালা বলেন, ‘‌আমরা এখন এমন এক শোচনীয় পরিস্থিতিতে আছি যে আমরা যেসব ভঅলো কাজ করছি, শিগগিরই তা স্থবির হয়ে যাবে। কারণ তহবিলের ঘাটতি রয়েছে। আমাদের রোগীদেরকে ভুগতে হবে, চিকিৎসার অভাবে তাদেরকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হবে। জরুরি তহবিল পেলেই কেবল এ করুণ দশা ঠেকানো যাবে।’

335 ভিউ

Posted ৪:১৪ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৬ জুন ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com