সংবাদ বিজ্ঞপ্তি(২৮ অক্টোবর) :: পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের দুঃশাসনে সারা দুনিয়ার মানুষ আজ চরম সংকটে নিপতিত। পুঁজিবাদ তার নিজস্ব নৈতিকতাকেই সর্বত্র ছড়িয়ে দিয়েছে। এই নৈতিকতা মনুষ্যত্বের মর্যাদা দেয় না; মুনাফা চেনে, ভোগলালসায় অস্থির থাকে, মানবিক বিবেচনাগুলোকে পদদলিত করে। এর থেকে মানুষ মুক্তি চায়। দেশে দেশে এ নিয়ে আন্দোলন সংগ্রামও চলছে। কিন্তু সা¤্রাজ্যবাদ নিজেদের শোষণ ও বৈষম্যমূলক পুঁজিবাদী ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার জন্য ধর্মীয় মৌলবাদকে ব্যবহার করছে। ব্যবহার করছে মাদক ও ভোগবাদী সংস্কৃতিকে।
সা¤্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদের দুঃশাসন থেকে মুক্তির একমাত্র পথ সমাজতন্ত্র। বৈজ্ঞানিক নিয়মে পুঁজিবাদের বিনাশ হবে। পুঁজিবাদের বিনাশ মানে ব্যক্তি মালিকানার সমাপ্তি। আগামীর ভবিষ্যৎ হচ্ছে ব্যক্তি মালিকানার পৃথিবীর পরিবর্তে সামাজিক মালিকানার মানবিক বিশ্ব গড়ার।
শনিবার বিকাল ৪টায় কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে মহান অক্টোবর বিপ্লবের শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে কক্সবাজার জেলা উদযাপন পরিষদ কমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির উপদেষ্টা, প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা কমরেড মনজুরুল আহসান খান এসব কথা বলেন।
মহান অক্টোবর অক্টোবর বিপ্লব শতবর্ষ উদযাপন পরিষদ, কক্সবাজারের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) কক্সবাজার জেলার সভাপতি কমরেড দিলীপ দাশের সভাপতিত্বে সভার উদ্বোধন ঘোষণা করেন কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ, সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন নেতা, প্রবীণ শিক্ষাবিদ প্রফেসর সিরাজুল মোস্তফা।
মহান অক্টোবর অক্টোবর বিপ্লব শতবর্ষ উদযাপন পরিষদ, কক্সবাজারের যুগ্ন আহ্বায়ক কলিম উল্লাহ কলিমের সঞ্চালনায় ও সদস্য সচিব দিলীপ দাশের স্বাগত বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে শুরু আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন কমরেড সমীর পাল, জাসদ (আম্বিয়া) নেতা- স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী গণআন্দোলনের সৈনিক একে ফরিদ আহমদ, এডভোকেট ফরিদুল আলম, ইঞ্জিনিয়ার বদিউল আলম, কমরেড অনিল দত্ত, কমরেড গিয়াস উদ্দিন, উদীচীর সাবেক সভাপতি সাংবাদিক মোহাম্মদ আলী জিন্নাত, কক্সবাজার জেলা উদীচীর সভাপতি কল্যাণ পাল, মহান অক্টোবর বিপ্লব শতবর্ষ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক আবুল কাসেম বাবু, কক্সবাজার জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি অর্পণ বড়–য়া প্রমুখ।
সভায় দেশের প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা সিপিবির উপদেষ্টা কমরেড মনজুরুল আহসান খান বলেন- রুশ বিপ্লব মানব মুক্তির ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ঘটনা। এ বিপ্লব মানুষের মুক্তির দিশা নির্দেশ করেছে। ঔপনিবেশিক শোষণে নিপীড়িত জাতিসমূহকে শোষণের নিগড় ভাঙ্গতে অনুপ্রাণিত ও সমর্থন জুগিয়েছে রুশ বিপ্লব এবং তার রাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়ন। ৭০ বছর স্থায়ী হবার পর সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা যে পতন ঘটেছে, তা সমাজতন্ত্রের পতন নয়, ধাপে ধাপে সমাজতন্ত্রের চিন্তা থেকে সরে আসার ফল।
ছিল বাইরে থেকে পুঁজিবাদীদের উৎপাত, অবরোধ ও আক্রমণ। সোভিয়েতের পতনের ফলে সারা পৃথিবীর মানুষকে আজ চরম মূল্য দিতে হচ্ছে। মানুষের ক্ষোভ ও দুর্দশা জানিয়ে দিচ্ছে সভ্যতা কোন বর্বরতায় গিয়ে পৌঁছেছে। এ ব্যবস্থা চললে পৃথিবীর ধ্বংসই ঠেকিয়ে রাখা অসম্ভব হবে। বলা হচ্ছে নৈতিকতার অধঃপতন ঘটেছে। কিন্তু আসল সত্য হলো এই যে, পুঁজিবাদ তার নিজস্ব নৈতিকতাকেই সর্বত্র ছড়িয়ে দিয়েছে। এই নৈতিকতা মনুষ্যত্বের মর্যাদা দেয় না; মুনাফা চেনে, ভোগলালসায় অস্থির থাকে, মানবিক বিবেচনাগুলোকে পদদলিত করে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি মায়ানমারে যখন গণহত্যা চলছে, প্রাণভয়ে রোহিঙ্গারা পালিয়ে আসছে বাংলাদেশে, সেই সময় চীন দাঁড়িয়েছে পীড়নকারী মিয়ানমার সরকারের পক্ষে। রাশিয়ার আচরণও একই রকম। যে ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে, সেও দাঁড়িয়েছে মিয়ানমারের পক্ষে। কারণ একই- পুঁজিবাদী স্বার্থ।
Posted ১১:১৪ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta