বুধবার ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বুধবার ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

কক্সবাজারে ভারী বর্ষণে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত : পাহাড় ধ্বস ও ঢলের পানিতে দুইজনের মৃত্যু

মঙ্গলবার, ০৪ জুলাই ২০১৭
1224 ভিউ
কক্সবাজারে ভারী বর্ষণে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত : পাহাড় ধ্বস ও ঢলের পানিতে দুইজনের মৃত্যু

কক্সবাংলা রিপোর্ট(৪ জুলাই) :: কক্সবাজারে গত চারদিন ধরে চলা টানা ভারী বর্ষণে আবারও জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।জেলার বাকঁখালী নদী ও মাতামুহুরী নদীতে উজান থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে পড়ায় নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে প্রবাহিত হচ্ছে।এর মধ্যে সদরের ঈদগাও,রামু ও চকরিয়া উপজেলার বেশির ভাগ নিমাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। এ অবস্থার কারনে জেলার লক্ষাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এতে করে শত শত ঘরবাড়ি পানিবন্দি হওয়ার পাশাপাশি দূর্ভোগ আর দূর্গতি বেড়েই চলছে দাবি করেছেন জনপ্রতিনিধিরা।আর এসব এলাকাকে বন্যাদূর্গত এলাকা ঘোষনার দাবী জানিয়েছে সাধারণ লোকজন।

এদিকে ভারী বর্ষনে কক্সবাজার সদর উপজেলার ইসলামাবাদে ঢলের পানিতে পড়ে এক নূরানী মাদ্রাসায় পড়–য়া শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।এছাড়া মহেশখালীতে ভারী বর্ষনে পাহাড় ধবসে মোঃ মোনার আলম (৩৮) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে পৃথক ঘটনা দুটি ঘটে।

অপরদিকে জেলায় টানা ভারী বর্ষণে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলোর মাটি দূর্বল হয়ে পড়েছে। সোমবার বিকাল থেকে বিভিন্নস্থানে ছোট ছোট পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটছে। দিনরাত থেমে থেমে চলা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের এ বৃষ্টিপাতে দূর্বল হয়ে পড়া পাহাড়গুলোতে এখন বড় ধরনের ধসের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। আর ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকলে যে কোনো মুহূর্তে ভয়াবহ পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটতে পারে, ছোট ছোট পাহাড় ধস তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কক্সবাজার জেলায় গত চারদিন ধরে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে সুর্যের মুখ দেখা যায়নি। এরই মাঝে মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরুহয়েছে ছোট ছোট পাহাড় ধস। এরেই মধ্যে মহেশখালীতে পাহাড় ধবসে মোঃ মোনার আলম (৩৮) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনাটি ঘটে।

এছাড়া সোমবার শহরের ঘোনারপাড়া, বৈদ্যঘোনা, কলাতলী, পাহাড়তলী, শহরতলীর দরিয়ানগর, কলাতলী, ইসলামনগর, লারপাড়া, সদরের ঝিলংজা, পিএমখালী, ঈদগাঁও, ভারুয়াখালী, রামুর খুনিয়াপালং, কাউয়ারখোপ, রশিদনগর, দক্ষিণ মিঠাছড়ি, গর্জনীয়া, মহেশখালীর ছোট মহেশখালী, কালামারছড়া ও শাপলাপুর, চকরিয়ার ডুলাহাজারা, খুটাখালী, মানিকপুর, ফাঁসিয়াখালী, উখিয়ার জালিয়াপালং, ইনানী, কুতুপালং, বালুখালী, টেকনাফ সদর, বাহারছড়া, হোয়াইক্যং ও হ্নীলাসহ বিভিন্নস্থানে ছোট ছোট পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে।

প্রত্যদর্শীরা জানান,বিকাল সাড়ে ৩টায় বৃষ্টি কিছু ক্ষণের জন্য থামলে দরিয়া নগরে বানরের পাহাড়ে প্রায় ৭০ ফুট উঁচু থেকে পর পর বড় বড় কয়েক টুকরা মাটি বিকট শব্দে পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি ছড়ায় ধসে পড়ে। এসময় আশেপাশের বাসিন্দাদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গতবছর উপর্যপুরি ভূমিকম্পের ফলে বানরের পাহাড়ে ফাটল ধরেছিল।এছাড়া দরিয়া নগর ও মেরিন ড্রাইভসহ কক্সবাজারের বিভিন্নস্থানের অধিকাংশ পাহাড় ঝুঁকির মুখে রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এসব পাহাড়ে রয়েছে হাজার হাজার বসতি। যে কোনো সময় পাহাড় ধসের ভয়াবহতার শিকার হতে পারে এসব পাহাড়ের বাসিন্দারা।

এদিকে সোমবার দুপুরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত পাহাড় নিধন ও ঝুঁকিপূর্ণ বসতবাড়ি-সংক্রান্ত এক জরুরি সভায় জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, পাহাড় নিধন ও অসংখ্য বসতবাড়ি তৈরির ফলে শহরের লাইট হাউস, সার্কিট হাউস পাহাড়, বাদশাঘোনা, দক্ষিণ ঘোনাপাড়া, বৈদ্যঘোনা, সাহিত্যিকা পল্লীসহ বেশ কয়েকটি পাহাড়ি এলাকা মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে। উচ্ছেদের মাধ্যমে পাহাড়গুলো ঝুঁকিমুক্ত করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।তিনি ঝুঁকিতে লোকজনকে দ্রুত সরিয়ে আনা দরকার উল্লেখ করে বলেন, তিন দিন ধরে কক্সবাজারে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের পাহাড়ধস হতে পারে। কিন্তু কোনো লোক পাহাড় ছাড়তে রাজি হচ্ছে না।

জানা যায়,গত মাসের মাঝমাঝি সময়ে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানে পাহাড় ধসে প্রায় দুইশ’ মানুষের প্রাণহানির পর কক্সবাজারে প্রশাসন ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে বসতি সরানোর কাজ শুরু করেছে। কিন্তু ঈদের ছুটি ও টানা বৃষ্টিপাতের কারণে বর্তমানে এসব কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে সারাদিন পৌরসভার উদ্যোগে মাইকিং করে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করা হয়েছে।

কক্সবাজার পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র মাহবুবুর রহমান বলেন,চার দিনের‘টানা বর্ষণের কারণে কক্সবাজারে পাহাড় ধসের ঝুঁকি বেড়েছে। জনগণকে এ বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে সরে যেতে বার বার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এরপরও কেউ সরে না যাওয়ায় বাধ্য হয়ে অতি ঝুঁকিপূর্ণ বসতিগুলো সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে এ কাজে বিঘ্ন ঘটছে বলে জনগণকে মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য,কক্সবাজার শহরের ছোটবড় ১২টি সরকারি পাহাড়ে অবৈধভাবে তৈরি হয়েছে ১২ হাজার বসতবাড়ি। এসব ঘরে থাকছে অন্তত দেড় লাখ মানুষ। প্রভাবশালীরা সরকারি জমির দখলস্বত্ব ঠিক রাখতে ভাসমান লোকজনকে ওই সমস্ত ঘরবাড়িতে রাখছে। প্রবল বর্ষণে পাহাড়ধস ও প্রাণহানি রোধে এসব ঘরবাড়ি দ্রুত উচ্ছেদ প্রয়োজন মনে করছেন সংশ্লিষ্ঠরা।

1224 ভিউ

Posted ৭:২৬ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৪ জুলাই ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com