কক্সবাংলা ডটকম(২৫ ফেব্রুয়ারী) :: কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের ৬ মাস পূর্ণ হয়েছে আজ রোববার। ধীর গতিতে চলছে তাদের প্রত্যাবাসন শুরুর কাজ। আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা বলছে, শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হলেই নিজ দেশে ফেরত যাবে তারা।
গত বছরের আগস্ট মাসের তৃতীয় সপ্তাহে সেনা চৌকিতে হামলার অজুহাতে রোহিঙ্গা দমন শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। প্রাণ বাঁচাতে ২৬ আগস্ট থেকে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিতে শুরু রোহিঙ্গাদের। বন্ধুর পথ পেরিয়ে কক্সবাজার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে নতুন করে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় দশ লাখ।
প্রাথমিক ধাক্কা শেষে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে আলোচনার পথ ধরে ধীরে ধীরে সেই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার অপেক্ষায়। তবে এখনো নিজেদের স্থায়ী ঠিকানাকে নিরাপদ মনে করছে না কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা।
যতদিন ধর্মের উপর ভিত্তি করে বৈষম্য না কমবে ততদিন তাদের প্রত্যাবাসন সম্ভব নয়, অভিযোগ আশ্রয় নেয়াদের। চাষযোগ্য ভূমি, বসত ভিটা ফেরত, শিশুদের পড়াশোনা ও কাজের উপযুক্ত নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করলে ফিরে যেতে চায় তারা।
নতুন-পুরাতন মিলিয়ে বর্তমানে উখিয়া-টেকনাফে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা ১২টি অস্থায়ী ক্যাম্পে ১ লাখ ৬৫ হাজার ঝুপড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭ লাখ মানুষ। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এ ঘটনায় খুঁজে পেয়েছে মানবতাবিরোধী অপরাধের আলামত।
মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি আর ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স নিজস্ব অনুসন্ধানের মধ্য দিয়ে তুলে এনেছে নারকীয় হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের ভয়াবহ বাস্তবতা। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। রাখাইনের সহিংসতাকে জাতিগত নিধন আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ। তবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সরকার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, তারা জঙ্গি সংগঠন আরকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) দমনে অভিযান চালিয়েছে।
Posted ৩:৩২ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta