কক্সবাংলা রিপোর্ট(১৭ সেপ্টেম্বর) :: দোহাজারী-কক্সবাজার-গুনদুমে সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ রেলপথের নির্মাণকাজ পেয়েছে চীন ও বাংলাদেশের চার প্রতিষ্ঠান। নির্মাণকাজের দায়িত্ব পাওয়া বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানগুলো হলো তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি ও ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। এ দুই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রকল্পের কাজ যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিআরইসি) ও চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি)।
গতকাল রেলভবনে রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হকের উপস্থিতিতে এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বাংলাদেশের পক্ষে প্রকল্পের পরিচালক মফিজুর রহমান ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে সিআরইসির প্রতিনিধি ঝঙ গুয়াংঝু এবং সিসিইসিসির প্রেসিডেন্ট ঝাও ডিয়ানলঙ চুক্তিপত্রে সই করেন। চুক্তি অনুযায়ী, শুরুর তিন বছরের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করতে হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের তথ্যমতে, দোহাজারী থেকে কক্সবাজার ও সেখান থেকে রামু পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইনের ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় হবে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ৪ হাজার ৯১৯ কোটি ৭ লাখ টাকা ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ১৩ হাজার ১১৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা অর্থায়ন করবে। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত।
প্রকল্পটি দুটি লটে বাস্তবায়ন করা হবে। দোহাজারী থেকে চকরিয়া পর্যন্ত অংশের কাজকে প্রথম লটের আওতায় রাখা হয়েছে। এ কাজটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে চীনের সিআরইসি ও বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন। এ অংশের চুক্তিমূল্য নির্ধারণ হয়েছে ২ হাজার ৬৮৭ কোটি ৯৯ লাখ ৩৪ হাজার টাকা।
চকরিয়া থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত অংশের কাজকে ফেলা হয়েছে দ্বিতীয় লটে। এ অংশের কাজ পেয়েছে চীনের সিসিইসিসি ও বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার। এ অংশের কাজের চুক্তিমূল্য ৩ হাজার ৫০২ কোটি ৫ লাখ ২ হাজার টাকা।
এ প্রকল্পের মাধ্যমে ১০২ কিলোমিটার নতুন ডুয়েল গেজ রেললাইন নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে থাকছে ১৮৪টি ছোট-বড় সেতু, নয়টি স্টেশন ভবন, প্লাটফরম ও শেড। পাশাপাশি সামুদ্রিক ঝিনুকের আদলে কক্সবাজারে একটি দৃষ্টিনন্দন স্টেশন ভবন নির্মাণ করা হবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, সরকার রেল খাতকে গুরুত্ব দেয়ায় বরাদ্দ বেড়েছে। ফলে রেলওয়েতে নতুন নতুন প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে।
দোহাজারী-কক্সবাজার-গুনদুম রেল প্রকল্প সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, রেললাইনটি নির্মিত হলে কক্সবাজারে দেশী-বিদেশী পর্যটকের সংখ্যা বাড়বে। দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার পাশাপাশি লাইনটির মাধ্যমে বাংলাদেশ ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়েতেও যুক্ত হবে।
এ সময় অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব (ভারপ্রাপ্ত) মোফাজ্জেল হোসেন, রেলওয়ের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেনসহ রেলপথ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ রেলওয়ে ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
একই প্রকল্পে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে অস্ট্রেলিয়ার স্মেক ইন্টারন্যাশনাল, কানাডার কানারেইল কনসালট্যান্টস, ফ্রান্সের এসওয়াইএসটিআরএ, বাংলাদেশের এসিই কনসালট্যান্টস ও স্ট্র্যাটেজি কনসালটিং। গত বৃহস্পতিবার পরামর্শক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে রেলওয়ে এ সম্পর্কিত চুক্তি স্বাক্ষর করে। ৬০ মাস মেয়াদি ওই চুক্তি অনুযায়ী, পরামর্শক প্রতিষ্ঠানগুলোর পেছনে রেলওয়ের ব্যয় হবে ৪১৭ কোটি টাকা।
Posted ৪:০১ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta