বিষেশ প্রতিবেদক(১৭ নভেম্বর) :: পর্যটন নগরী কক্সবাজার জেলায় সংসদীয় আসন ৪টি। এসব আসনে কারা পাচ্ছেন নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।
শহরের সর্বত্রই একদিকে আওয়ামী লীগ তথা মহাজোট এর প্রার্থী কারা? অন্যদিকে বিএনপি তথা ঐক্যজোট থেকে কারা প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন পাচ্ছেন এ নিয়ে কৌঁতুহলী মানুষের আগ্রহের শেষ নেই।
ইতোমধ্যেই ৪টি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে প্রায় শতাধিক প্রার্থী মনোনয়ন ফরম দলীয় দপ্তরে জমা দিয়েছেন। আগামী ২দিনের মধ্যেই মনোনয়ন প্রাপ্তদের নাম ঘোষণা হতে পারে বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তবে দলীয় একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে কক্সাজারের ৪টি আসনে ২টি’তে পরিবর্তন ছাড়া অন্য আসনে আগের প্রার্থীরাই মনোনয়ন পেতে পারেন।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন জানিয়েছেন, ‘কক্সবাজারের ৪ আসনে শতাধিক ব্যক্তি মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন। ফরম নেওয়ার অধিকার সবারই আছে। তবে মাননীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দিবেন তার পক্ষেই সবাইকে সম্মিলিতভাবে বিজয়ী করতে নির্দেশনা দিয়েছেন নেত্রী।’
কক্সবাজারের ৪টি আসনে আওয়ামী লীগ তথা মহাজোটে কারা মনোনয়ন পেতে পারেন, ইতোমধ্যেই তার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সে অনুযায়ী এখানে সম্ভাব্য মনোনীতদের একটি তালিকা তুলে ধরা হলো। যা আমাদের রাজনৈতিক প্রতিবেদকের অনুসন্ধানীতে ওঠে এসেছে। অপরদিকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের পক্ষে স্ব স্ব জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন ভাগিয়ে নিতে।
তথ্যসুত্রে জানা যায়, পুর্বের মতো কক্সবাজারের সংসদীয় ৪টি আসনের ৩টিই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দেবেন ও ১টি’তে জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিতে পারেন। তবে জাপা যদি একক ভাবে নির্বাচন করে ভিন্ন হবে চিত্র। সুতরাং বদল হচ্ছে কক্সবাজার সদর-৩ আসন ও কক্সবাজার-৪।
কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া):
——————
এ আসন থেকে ২০ জনের মতো মনোমনয়নপত্র জমা দিয়েছেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ¦ সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপি, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এডভোকেট আমজাদ হোসেন, রেজাউল করিম, চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম, জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক ড. আশরাফুল ইসলাম সজিব সহ প্রমূখ।
জানা গেছে এ আসনটি চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলমকে দেয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে মহাজোটে সমঝোতা হলে জাপার আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইলিয়াছ’কে ছেড়ে দেবেন। সেক্ষেত্রে জাফর আলমকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করার গ্রীণ সিগনাল দেবে আ:লীগ এ ধরনের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া):
———————–
এ আসন থেকে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন ড.আনচারুল করিম, জেলা আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, জেলা আ’লীগের উপ প্রচার সম্পাদক আশেক উল্লাহ রফিক, জেলা আ’লীগ নেতা অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, মহেশখালী উপজেলা আ’লীগের সভাপতি আনোয়ার পাশা চৌধুরী সহ ১৭জন মতো। তবে মনোনয়নে এগিয়ে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক। তিনি পুনরায় নৌকার টিকেট পেতে পারেন।
কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু):
——————
এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন ২৪ জনের উপরে। সেখানে এক পরিবারে তিন জন করে ৩ পরিবারের ৯ জন প্রার্থী রয়েছেন। তবে নানা কারণে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক সাইমুম সরওয়ার কমল মনোনয়ন পেতে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে।
এ আসনে জেলা মহিলা আ’লীগের সভানেত্রী কানিজ ফাতেমা মোস্তাক নয়তো কউক চেয়ারম্যান লে: কর্ণেল(অব) ফোরকান আহমদ পেতে পারেন নৌকার টিকেট। এ ধরনের আভাস আসছে কেন্দ্র হতে। বড় বা ছোট নয়, যাকে মনোনয়ন দেবে দল তাকে বিজয়ী করতে কড়া নির্দেশনা দিয়েছেন দলের সভানেত্রীর।
কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ):
———————
আসন থেকে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন বর্তমান এমপি আবদুর রহমান বদি, সাবেক এমপি টেকনাফ উপজেলা আ’লীগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী, উখিয়া উপজেলা আ’লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী,জেলা যুবলীগ সভাপতি সোহেল আহামদ বাহাদুর ও টেকনাফ আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশর কাউন্সিলর ,জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহ্ আলম ওরফে রাজা শাহ আলম সহ ২১ জনের মতো।
নানা কারণে বির্তকিত এমপি বদি মনোনয়ন পেতে বেগ পেতে পারেন। সেক্ষেত্রে মনোনয়ন পেতে এগিয়ে থাকবেন উপজেলা আ’লীগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী, উখিয়া উপজেলা আ’লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী ও জেলা যুবলীগ সভাপতি সোহেল আহামদ বাহাদুর । এদের যেকোন একজন নৌকার টিকেটে চমক নিয়ে আসতে পারেন।
সেক্ষেত্রে এ আসনটি উন্মোক্ত করে দিয়ে এমপি বদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করার সবুজ সংকেত দিতে পারে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড।
উল্লেখ্য, কক্সবাজারের ৪টি আসনে যে সব বাকি মহিলা সদস্যরা মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন তারা মূলত পরবর্তী সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি হতে নিজেদের পাকাপোক্ত করণে রাজনৈতিক কৌশলে এগুচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রবীণ রাজনীতিবিদরা।
