সাইফুল ইসলাম(১৮ আগস্ট) :: কক্সবাজার শহরের বেশিরভাগ রাস্তা ও ফুটপাত অসাধু ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীদের দখলে চলে গেছে। বাধ্য হয়ে পথচারিসহ পর্যটকেরা রাস্তায় চলাচল করছে ঝুঁকি নিয়ে।এ কারণে রাস্তায় যানজটসহ প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট বড় অসংখ্য দূর্ঘটনা। এমনকি প্রাণ হারানোর ঘটনাও ঘটছে মাঝে মধ্যে।
পৌরসভা ও প্রশাসনের নজরদারিতে মাঝে মধ্যে উচ্ছেদ অভিযান চোঁখে পড়ে। তবে ১/২ দিনের ব্যবধানে আবারও ফুটপাত দখল করে ব্যবসা ফেদে বসে তারা।
ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীদে দাবি, তারা প্রত্যেকেই নাকি কিছু ব্যক্তিকে টাকা দিয়ে এ ব্যবসা করে আসছে।
যারা শহরের বড় বাজারের ইজারা নিয়েছে তাদের পক্ষে থেকে একজন লোক এসে ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সর্বনি¤œ ২০ টাকা থেকে শুরু করে ১’শ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মাঝে মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হলেও আসার পরপরেই ফের বসে যায় ওই সব ভ্রাম্যমান দোকানী। জনবল সংকট ও আর্থিক কারণে বারবার উচ্ছেদ অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না প্রশাসনের।
এরপরেও কয়েকদিনের মধ্যেই যারা রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে ব্যবসা আসছে তাদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা বলে জানা যায়।
পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ই আগষ্ট পৌরসভার নতুন মেয়র মুজিবুর রহমান আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহন শেষ করছেন মাত্র। ইতোমধ্যেই রাস্তার উন্নয়নসহ ফুটপাতের অনেক কাজ হয়েছে। শপথের দিন রাতেই পৌরসভা সংলগ্ন ফুটপাতের অবস্থা বদলে গেছে। আস্তে আস্তে সবেই করা হবে।
শহর ঘুরে দেখা যায়, শহরের প্রাণকেন্দ্র পৌরসভার সামনে ও পেছনে রাস্তার দু’ধারে ব্যবসায়িরা ফুটপাত দখল করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
এছাড়াও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিচে আদালত চত্বরের রাস্তার উপরে, পেট্রোল পাম্পের সামনে রাস্তার দু’ধারে, আইবিরোডের উপরে, কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন রাস্তার দুই পাশেসহ গোটা শহরজুড়ে প্রধান সড়কসহ অলিগলিতে ভ্রাম্যমান দোকানীর সয়লাভের কারণে যানজট ও জনদূর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে।
তাছাড়া যত্রতত্র ইজিবাইক ও রিক্সার কারনে রাস্তা সংকুচিত হয়ে যায়। এসব ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীদের কারণে রাস্তার দু’ধার দিয়ে যেতে না পেরে বাধ্য হয়ে রাস্তার মাঝ দিয়ে যাওয়ার সময় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে ।
এদিকে রাস্তায় যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং ও কাউন্টার কারণেও যানজট লেগেই থাকে।
জানা যায়, গাড়ি পার্কিংয়ের সুনির্দিষ্ট জায়গা থাকার পরেও নিয়ম না মেনে নিজেদের ফায়দা হাসিলের জন্য কটেজ ও হোটেলের সামনে গাড়ি পার্কিং করা হচ্ছে। অবৈধভাবে গাড়ি পার্কিংয়ের ফলে একশ্রেণীর লোকজন লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে পর্যটক ও স্থানীয় লোকজন।
অব্যবস্থাপনার কারনে দূর-দূরান্ত থেকে আসা পর্যটক ও পথচারীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন। এভাবে চলতে থাকলে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সুনাম ক্ষুন্ন হবে বলে জানান, স্থানীয় লোকজন ও বেড়াতে আসা পর্যটকরা।
মো. ছলিম উল্লাহ নামে এক কটেজ ম্যানেজার জানান, কটেজ ও হোটেলের সামনে বাস বা কার পার্কিং করায় পর্যটকদের অনেক অসুবিধা হচ্ছে। এবং পর্যটন নগরীর সৌন্দর্য্যও ব্যাঘাত ঘটছে।
পর্যটক বাবুল খন্দকার জানান, একদিকে কটেজ ও হোটেল এর সামনে গাড়ি পার্কিং অন্যদিকে রাস্তার আশপাশে ভ্রাম্যমান দোকানীর কারণে সড়কের মধ্যে যানজট লেগে থাকে। এতে একটি বিরক্তিকর বিষয় হয়ে দাড়াচ্ছে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে। সবদিকে ভালো লাগলেও রাস্তায় চলাচলে চরম বিরক্তিকর হয়ে উঠছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, “শহরে ফুটপাত দখল করে ভ্রাম্যমান ব্যবসাটি দীর্ঘদিনের সমস্যা। আমিতো মাত্র শপথ নিয়েছি, আস্তে ধিরে দখল হয়ে যাওয়া ফুটপাত উদ্ধার ও সরু সড়ক প্রশস্থ করণের মাধ্যমে উন্নয়নসহ সবকিছুই করা হবে। আগামী ৬ মাসের মধ্যে বেশিরভাগ সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।”
Posted ৭:১৬ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৮ আগস্ট ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta