শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

কক্সবাজার শহরের মোহাজেরপাড়ায় পাহার কেটে দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা

রবিবার, ০৯ জুলাই ২০১৭
1278 ভিউ
কক্সবাজার শহরের মোহাজেরপাড়ায় পাহার কেটে দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা

বিশেষ প্রতিবেদক(৯ জুলাই) :: কক্সবাজার শহরের হিলটপ সার্কিট হাউস থেকে প্রায় ৫০০ গজ পূর্ব দিকে ‘মোহাজেরপাড়া পাহাড়’। প্রায় ১৪ একরজুড়ে এ পাহাড়ের অবস্থান। উচ্চতা ১৯০ ফুট। পরিবেশ অধিদপ্তর, ভূমি কার্যালয় ও জনপ্রতিনিধিদের হিসাবে পাহাড় ঘিরে অবৈধ স্থাপনার সংখ্যা দুই শতাধিক। এসব স্থাপনায় রয়েছে পানি ও বিদ্যুতের সংযোগ। পাহাড়চূড়ায় ওঠানামার জন্য তৈরি করা হয়েছে পাকা সিঁড়িও।

গত মঙ্গলবার সকালে মোহাজেরপাড়া পাহাড়ে গিয়ে দেখা যায়, পাহাড়টির চারদিকে অসংখ্য স্থাপনা। রয়েছে বেড়া, টিনশেড, আধাপাকা ও পাকা স্থাপনা। পাহাড়ের খাদে, ঢালুতে তৈরি করা হয়েছে এসব স্থাপনা। এর মধ্যে চলছে কয়েকটি বহুতল ভবনের নির্মাণকাজ। এমনকি পাহাড়ের ১৫০ ফুট উঁচুতেও তৈরি হয়েছে ১৫টির মতো ঘরবাড়ি। পাহাড়ের নিচের দিক থেকে ২০-৩০ ফুট উঁচুতে তৈরি হচ্ছে একটি বহুতল ভবন। ইতিমধ্যে ভবনটির তিনতলা পর্যন্ত নির্মাণ করা হয়েছে।

পাহাড়ে বসবাস করা লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাইফুদ্দিন নামের এক ব্যক্তিসহ তিনজন মিলে যৌথভাবে বহুতল ভবনটি নির্মাণ করছেন। ভবনের দ্বিতীয় তলায় কথা হয় সাইফুদ্দিনের স্ত্রী রোজিনা শারমিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ২০১৫ সালে পাহাড়ের নিচের এই জায়গা একতলা একটি ভবনসহ কিনে নিয়েছেন তাঁর স্বামী সাইফুদ্দিনসহ তিনজন। আটতলা পর্যন্ত ভবনটি তোলা হবে।

রোজিনা শারমিন বলেন, ভবনসহ পাহাড়ি জমিটি রেজিস্ট্রি হয়নি। সরকারি জমি বিধায় নোটারিমূলে স্থানীয় এক ব্যক্তি থেকে কেনা হয়েছে।

বহুতল ভবনটির পূর্ব ও উত্তর পাশে ১০০ গজ দূরত্বে ৮০ ফুট উঁচু পাহাড়ের ওপর তৈরি হচ্ছে আরও একটি পাকা ভবন। ইতিমধ্যে ভবনটি দোতলা পর্যন্ত নির্মাণ করা হয়েছে। ভবনটি নির্মাণ করছেন রওশন আলী নামের এক ব্যক্তি। পাহাড়ের সঙ্গে ঘেঁষাঘেঁষি করে ভবনটি নির্মাণ করায় ঝুঁকির মুখে পড়েছে নির্মাণাধীন ভবনটি। গতকালের প্রবল বর্ষণে পাহাড়ের দুটি খণ্ড ধসে ভবনের পাশে পড়েছে।

সরকারি পাহাড় কেটে ভবন নির্মাণ প্রসঙ্গে রওশন আলী (৪৫) বলেন, তিনি মোটা অঙ্কের টাকায় পাহাড়ের দখলস্বত্ব কিনে ভবনটি নির্মাণ করেছেন। পাহাড়ে আগে যাঁরা ঘরবাড়ি তৈরি করেছেন, তাঁদের এ পর্যন্ত কিছুই হয়নি। তাই তিনিও ভবনের বিপরীতে টাকা খরচ করতে দ্বিধা করছেন না।

একইভাবে ওই পাহাড়ে পাকা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে আরও অন্তত ১১টি। ভবনগুলো নির্মাণের জন্য সেখানে ব্যাপকভাবে পাহাড় কাটা হচ্ছে। একটার সঙ্গে আরেকটা ঘেঁষাঘেঁষি করে অসংখ্য অবকাঠামো তৈরি হওয়ায় পাহাড়টি ঝুঁকির মুখে পড়েছে। কয়েক দিনের টানা বর্ষণের কারণে ফাটল অংশ দিয়ে পানি ঢোকে পাহাড়ের খণ্ড ধসে পড়ছে। ভারসাম্য হারিয়ে পাহাড়টি ধসে পড়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয় ব্যক্তিরা।

কক্সবাজার ভূমি কার্যালয় সূত্র জানায়, মোহাজেরপাড়ার সরকারি পাহাড়টি কক্সবাজার মৌজার ১ নম্বর খাস খতিয়ানের ৩৬২০ দাগের অন্তর্ভুক্ত। এর আয়তন ১৩ একর ৭১ শতক। ইতিমধ্যে পাহাড়টির ১১ একরের মতো জমি দখল করে তৈরি হয়েছে দুই শতাধিক দালানকোঠা, ঘরবাড়িসহ নানা অবকাঠামো। রাজনৈতিক প্রভাবশালী ও জনপ্রতিনিধিরা দখল-বেদখলে জড়িত থাকায় পাহাড় থেকে কাউকে উচ্ছেদ করা যাচ্ছে না। বন্ধ হচ্ছে না পাহাড়নিধন ও ঘরবাড়ি নির্মাণযজ্ঞ।

কক্সবাজার সহকারী কমিশনার (ভূমি) পঙ্কজ বড়ুয়া বলেন, কক্সবাজারে সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে মোহাজেরপাড়া পাহাড়টি। পাহাড়ধস ও প্রাণহানি ঠেকাতে গত সোমবার মোহাজেরপাড়ার পাহাড়ে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। তখন পাঁচটি নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের আংশিক ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আরও পাঁচটি ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গত জুন মাসে এই পাহাড় থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল আরও ২৫টি অবৈধ বসতি। তিনি বলেন, এই পাহাড়ের মালিক সরকার। পাহাড় কেটে ঘরবাড়ি তৈরি নিষিদ্ধ।

পাহাড়টি পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন। অবৈধ স্থাপনায় সেবাপ্রতিষ্ঠানের সংযোগ দেওয়ার বিষয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাবেদ কায়সার বলেন, পৌরসভা সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। তাই পাহাড়ের বসতিতে ওঠানামার জন্য একাধিক পাকা সিঁড়ি তৈরি, ঘরবাড়িতে থাকা লোকজনের জন্য খাওয়ার পানি সরবরাহ ও বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, মাথা গোঁজার ঠাঁই না পেয়ে লোকজন সরকারি পাহাড়ে ঘরবাড়ি তৈরি করে বসতি করছে। ইতিমধ্যে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি গড়ে উঠেছে। পাহাড় থেকে লোকজনকে উচ্ছেদ করলে তারা বিপদে পড়বে।

পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের সহকারী পরিচালক সরদার শরিফুল ইসলাম কয়েক দিন আগে মোহাজেরপাড়া পাহাড়ে যান। তিনি বলেন, মোহাজেরপাড়া পাহাড়ের অবস্থা ভয়াবহ। দালানকোঠার ভারে প্রবল বর্ষণে ভারসাম্য হারিয়ে পাহাড়টি যেকোনো মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে। পাহাড় কেটে যাঁরা বহুতল ভবন তৈরি করেছেন, তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।

1278 ভিউ

Posted ৯:২১ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৯ জুলাই ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com