শাহিদ মোস্তফা শাহিদ,সদর(৬ ফেব্রুয়ারি) :: কক্সবাজার সদরের উপকূলীয় ইউনিয়ন পোকখালীর পূর্ব গোমাতলীতে অবস্থিত শত কোটি টাকার চিংড়ি ঘের দখলে নিতে বিবাদমান ২টি গ্রুপ বিপুল পরিমান অস্ত্র মজুদ করে রাখছে বলে খবর পাওয়া গেছে।ব্যবহার হয়ে আসছে অবৈধ এ অস্ত্রের, ঝনঝনানি গুলিবিনিময় হচ্ছে নিয়মিত ।
গত বছরে এপ্রিল-মে মাসে পুলিশ ও র্যাব অভিযান চালিয়ে ১২টি অস্ত্র উদ্ধার করেছিল। এসময় আটক করা হয়েছিল ৫ জনকে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বর্ণিত এলাকায় অবস্থিত হাফেজ মিয়া ঘোনা নামক অর্ধশত কোটি টাকার চিংড়ি ঘের দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ২টি পক্ষ। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এ বিরোধের জের ধরে ঘটছে গোলাগুলি, হানাহানি, খুনসহ হরেক রকম অপরাধ কর্মকান্ড।
আর এতে বলির পাঠা হওয়ার শংকায় রয়েছে নিরহ চাষারা।অতিথিতের ন্যায় লবন মাঠ দখলে ব্যর্থ হয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসাতে পারে বলে জানান নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় প্রভাবশালী ২ ব্যক্তির চিংড়ি ঘের ও লবন মাঠ দখল নিতে চলে আসা বিরোধের জের ধরে ৪ ফেব্রুয়ারী থেকে অধ্যবধি ৬ ফেব্রুয়ারী বিকাল ৩ টা পর্যন্ত থেমে থেমে গুলিবিনিময় হয়েছে।
আতংকিত হয়ে পড়ছে স্থানীয় লোকজন,ভয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছে না কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা।
সরেজমিন তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় খন্ড খন্ড কয়েকটি গ্রুপ সক্রিয় হয়ে উঠেছে।কেউ প্রতিবাদ করলে নেমে আসে নির্যাতন,মামলা ,হামলা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে ,একই এলাকার সেলিম উদ্দীন ও হানিফসহ এলাকার কয়েকজনের একটি সিন্ডিকিট রয়েছে।মুলত তাদের নেতৃত্বে চলছে রাম রাজত্ব।এদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার ছোট ভাই।
অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, হাফেজ মিয়া নামক চিংড়ি ঘেরটি দখলে নিতে স্থানীয় পূর্ব গোমাতলীর সেলিম উদ্দীনের নেতৃত্বে ১৬০ সদস্যের একটি গ্রুপ শপথ নিয়েছে যে কোন উপায়ে ঘেরটি দখলে নিতে।
সে হিসাবে তার ভাই ইদ্রিস ও হানিফসহ আরো কয়েকজন মিলে নদী পথে মহেশখালীর কালারমারছড়া থেকে বোট বোঝাই করে প্রচুর পরিমাণ অস্ত্র উত্তর গোমাতলী ঘাটে খালাস করে।
এর পর থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে এসব অস্ত্র। তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে চিংড়ি ঘেরের প্রকৃত মালিক দাবীদারের একটি গ্রুপও অস্ত্র মজুদ করে রেখেছে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে চুক্তির মাধ্যমে অস্ত্র দিয়ে তাকে ফাঁসিয়ে দিচ্ছে।
অভিযোগ উঠেছে উক্ত সেলিমের নেতৃত্বে এলাকায় চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, চিংড়ি ও চর দখলসহ নানা অপরাধ ঘটে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললে নেমে আসে মিথ্যা মামলা ও অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর ঘটনা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, উক্ত মামলাবাজ ও সন্ত্রাসী সেলিম উল্লাাহকে আটক পূর্বক আইনের আওতায় এনে রিমান্ড মঞ্জুর করলে ব্যাপক অস্ত্রের সন্ধান পাওয়া যাবে।
এমনকি তার বাড়ীর পাশর্^বর্তী যে পুকুর, জলাশয়,চিংড়ি ঘের গুলোর প্রহরী বাসা ও নাসি গুলো রয়েছে সেখানে অভিযান চালালে ব্যাপক অস্ত্রের সন্ধান মিলবে বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক ব্যক্তি।
এসব অভিযোগের বিষয়ে সেলিম উল্লাহর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এদিকে সচেতন এলাকাবাসীর দাবী, চিরুনী অভিযানের মাধ্যমে এলাকায় সে সমস্ত অপরাধী রয়েছে তাদেরকে আটক পূর্বক অস্ত্র উদ্ধার করতে প্রশাসনের জরুরী হস্থক্ষেপ কামনা করেন।
জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর মডেল থানার নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বলেন বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে ইতিমধ্যে উভয় পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছে। গুলাগুলি চিরতরে নির্মূল করতে পুলিশ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য,উক্ত চিংড়ি ঘের দখল নিয়ে ১৯৯৩-৯৪ সালে তিনজন লোক মারা গিয়েছিল।সে থেকে অধ্যবধি আহত হয়েছে শতাধিক লোক।
Posted ৯:৪৩ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta