শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ২০ জুন চালু হচ্ছে ICU ও HDU সুবিধা : বসছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট

শনিবার, ০৬ জুন ২০২০
276 ভিউ
কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ২০ জুন চালু হচ্ছে ICU ও HDU সুবিধা : বসছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট

কক্সবাংলা রিপোর্ট(৬ জুন) :: করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসায় ২৫০ শয্যার কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ভেন্টিলেটর সুবিধা সহ আগামী ২০জুন থেকে ১০টি আইসিইউ (Intencive care unit) ও  ১০টি এইসডিইউ (High dependency unit) চালু হতে যাচ্ছে।সেই সাথে দেশের প্রথম হাসপাতাল হিসাবে স্থাপিত হচ্ছে লিকুইড সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট।

কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা; মো: মহিউদ্দিন শনিবার সন্ধ্যায় কক্সবাংলাকে বলেন,১০টি আইসিইউ ও ১০টি এইসডিইউ‘র অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ। ৪টি ভেন্টিলেটর হাসপাতালে চলে এসেছে এবং এসি বসে গেছে। ৮ জুনের মধ্যে ৬টি ভেন্টিলেটর,বেড ও যন্ত্রপাতি সংযুক্তির কাজ সম্পন্ করা হবে । আর এসব কিছুর জন্য ৪জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার,১০ জন ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার,২০ জন ট্রেনিংপ্রাপ্ত নার্স এবং টেকনেশিয়ান প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া দেশের প্রথম (জেলা হাসপাতালগুলোর মধ্যে) লিকুইড সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট নির্মাণ সম্পন্ন হলেই কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আইসিইউ খোলা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

নির্মাণাধীন আইসিইউ নির্মাণ কক্ষ

তিনি জানান,লকডাউনের কারণেই আইসিইউ ও এইসডিইউ সরঞ্জামাদি আসতে সময় বেশি লেগেছে। যেহেতু জাতিসংঘের শরনার্থী সংস্থা ইউএনএইসচিআর প্রায় ৪০ কোটি টাকা অর্থ ব্যায় করে এগুলো তৈরী করে দিচ্ছে তাইেএখানে আমাদের করার কিছুই ছিল না।  তিনি আরও জানান,আইসিইউ সহ অন্যান্য চিকিতসার জন্য দেশে প্রথমবারের মত কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে স্থাপন করা হচ্ছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট যা ৮জুন হস্তান্তর হবে। জাতিসংঘের অপর সংস্থা ইউনিসেফ ৫৫ লক্ষ টাকায় এটি নির্মাণ করে দিচ্ছে। এরফলে সদর হাসপাতালে আরও কোন সময় অক্সিজেনের অভাব হবে না।

তিনি আরও জানান,আমি যোগদাদের (স্বল্পসময়) একবছরের মধ্যে এ সকল চিকিতসা ব্যবস্থা করতে যাচ্ছি। স্বাধিনতা পরবর্তী সময়ে যা কখনো সম্ভব হয়নি। এজন্য জেলা প্রশাসন ও আরআরআরসি,জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক সংস্থা, জনপ্রতিনিধি ও সর্বোপরি জেলাবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

জেলায় ভেন্টিলেটর,আইসিইউ ও এইসডিইউ,পিসিআর ল্যাব প্রাপ্তিতে যিনি বেশি অবদান রেখেছেন কক্সবাজারস্থ শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন (আরআরআরসি) কার্যালয়ের প্রধান স্বাস্থ্য সমন্বয়কারী ডা.আবু তোহা এম আর এইচ ভুঁইয়া কক্সবাংলাকে বলেন,জেলায় প্রতিনিয়ত করোনাক্রান্ত রোগীর চাপ বাড়ছে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে এই চাপ আরও বাড়তে পারে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেন, আরআরআরসি মাহবুব আলম তালুকদার,সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান,ইউনিসেফের ডা. দেবাশীষ এবং বিভিন্ন দাতা সংস্থাদের নিয়ে বৈঠকে জেলায় আইসিইউ ও এইসডিইউ,পিসিআর মেশিন প্রয়েজনীয়তার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়,বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এবং আইইডিসিআরকে লিখিতভাবে অবহিত করি। যার ফলশ্রুতিতে যাবতীয় সরঞ্জাম কক্সবাজার সদর হাসপাতালে এসে পৌঁচেছে। আশা করছি এর মাধ্যমে জেলাবাসী সুফল পাবে। তিনি আরও জানান,ভবিষ্যতে জেলাবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য ডায়ালেসিস যন্ত্রের ব্যবস্থার করার চেষ্টা চলছে।

এদিকে তাতক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি অবু মোর্শেদ চৌধূরী ফেসবুকে লেখেন-“সময়ে সেবা না পেয়ে অসময়ে আপনজনদের মৃত্যু আর ককসবাজার জেলার স্বাস্থ্যসেবার দৃশ্য দেখে কষ্ট হয়। কোথায় সেই পলিটিক্যাল কমিটমেন্ট? স্বাধীনতার ৪৮ বছরে ককসবাজার এত নেতা আসলো গেল এত জ্বালাময়ী বক্তৃতা শোনালেন, শোনাচ্ছেন। একটা আইসিও সেন্টার ও তো করতে পারলেন না আপনারা! এই মানবিক জননিরাপত্তা জনিত ব্যর্থতার আর জনগনণের স্বাস্থ্য সেবা না পেয়ে মৃত্যুর দায়িত্ব রাজনৈতিক নেতারা কি এড়িয়ে যেতে পারবেন? এই করোনাকালে ভাগ্যিস জেলা প্রশাসনের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং সমন্বয়ের ফলে ককসবাজারে অবস্থানরত কিছু আন্তর্জাতিক এবং স্থানীয়/ জাতীয় বেসরকারি সংস্থা সম্পৃক্ত হওয়ায় ককসবাজার বাসী এই মহামারিকালে কিছুটা প্রাথমিক সেবা পাচ্ছে এবং নানাভাবে সহযোগিতা করছে। আমি নিশ্চিত আজকে রোহিঙ্গারা ককসবাজারে অবস্থান না করলে হয়তো এসব অনেক আন্তর্জাতিক / বেসরকারি সংস্থাগুলোর দেখা পাওয়া দুরহ ছিল। যা অন্যান্য জেলার অবস্থান দেখলে সহজেই প্রতীয়মান হয়। সংশোধনের জন্য দয়া করে “করোনা”থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি ।”

নির্মাণাধীন সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট

এদিকে কক্সবাজার জেলায় ২৪ ঘণ্টার ও কম সময়ে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে এবং উপসর্গ নিয়ে পাঁচজন সহ জেলায় এ পর্যন্ত মারা গেছে ২২জনের অধিক।আর করোনাক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১ হাজার। তবে চিকিৎসক ও মারা যাওয়া রোগীদের স্বজনরা অভিযোগ করে বলছেন, কক্সবাজারে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় নির্ধারিত হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ ও ভেন্টিলেটর সুবিধা সুবিধা না থাকায় মুমূর্ষু রোগীদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। আইসিইউ ও ভেন্টিলেটর সুবিধা থাকলে হয়ত অনেক করোনা রোগীর প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হতো।

সর্বশেষ ৫জন শুক্রবার সন্ধ্যায় উখিয়ার কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান কক্সবাজারের জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক সংগঠক ও পর্যটন শিল্পের উদ্যোক্তা আবু সায়েম ডালিম (৪২)। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাকে প্রথমে আইসোলেশন সেন্টারে নেওয়া হয় তিন দিন আগে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে বুধবার তাকে উখিয়া কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা যান তিনি।

শুক্রবার রাত আটটায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে মারা গেছেন করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া নারী রূপবান (৫০)। তিনি কলাতলী আদর্শ গ্রামের মোহাম্মদ কালুর স্ত্রী। আদর্শ গ্রাম সমাজ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন জানান, শুক্রবার সকালে প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট ও জ্বর নিয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জরুরি প্রয়োজনেও হাসপাতালে তাকে অক্সিজেন দেওয়া হয়নি। রূপবানের করোনা উপসর্গ দেখা গিয়েছিল এক সপ্তাহ আগেই। কিন্তু তিনি ও তার পরিবার প্রথমে এটা গোপন রাখে। শনিবার সকাল ১১টায় করোনা উপসর্গ নিয়ে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মাত্র দুই মিনিট পর শবে মেরাজ (৫০) নামে এক নারী।

নির্মাণাধীন সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট

এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শাহীন মোহাম্মদ আবদুর রহমান চৌধুরী বলেন, ওই রোগী অক্সিজেন দেওয়ার মতো অবস্থায় ছিলেন না। উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রোগীর স্বজনেরা তা করেননি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণা বলছে, কভিড-১৯ এ আক্রান্ত মোট রোগীর ৮০-৮২ শতাংশ সাধারণ চিকিৎসাতেই সুস্থ হয়ে ওঠেন। বাকি ১৮-২০ শতাংশ রোগীর চিকিৎসা নিতে হয় হাসপাতালে। এদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ রোগীর জন্য প্রয়োজন হতে পারে কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস সুবিধা বা ভেন্টিলেটর। আর জটিল ৫ শতাংশের জন্য লাগতে পারে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিইউ।

চিকিৎসকরা বলছেন, করোনা রোগীদের মধ্যে প্রায় ১৮ শতাংশ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত থাকায় আইসিইউ ও ভেন্টিলেটর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আইসিইউ, ভেন্টিলেটর সাপোর্ট ছাড়া করোনা রোগীদের চিকিৎসা খুব মুশকিল। কারণ করোনায় শ্বাসকষ্টের রোগীর যেকোনো সময় অবস্থা খারাপ হতে পারে। ভেন্টিলেশন ছাড়া চিকিৎসার প্রস্তুতি শূন্যের কোঠায়।

নির্মাণাধীন আইসিইউ নির্মাণ কক্ষ

 

276 ভিউ

Posted ১০:৪০ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৬ জুন ২০২০

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com