কক্সবাংলা রিপোর্ট(১১ নভেম্বর) :: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের বহুল আলোচিত কক্সবাজার-৪(উখিয়া-টেকনাফ) আসনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেতে পারেন উখিয়া উপজেলা অাওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী।
চলতি ১৯ নভেম্বরের পরই ঘোষণা করা হবে কক্সবাজার-৪(উখিয়া-টেকনাফ) আসনের আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত একক প্রার্থীর নাম। ইতোমধ্যেই দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার নিকট কক্সবাজার জেলার চুরান্ত করা ৪জন প্রার্থীর নামের তালিকা হস্তান্তর করা হয়েছে। ওই তালিকাতেই রয়েছেন অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরীর নাম।দলটির নীতিনির্ধারকদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য ও আভাস পাওয়া গেছে।
এদিকে রোহিঙ্গা ইস্যু সহ বিভিন্ন কারনে দেশে ও দেশের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা কক্সবাজার-৪(উখিয়া-টেকনাফ) আসনের প্রার্থী বাছাইয়ে আওয়ামী লীগ বিশেষ নিয়ম অনুসরণ করেছে। অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে বিচার বিশ্লেষণ করে জনপ্রিয় ও কলঙ্কবিহীন প্রার্থীকে কক্সবাজার-৪ আসনে দল থেকে মনোনয়ন দিতে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগে একজন আদর্শ নেতার মধ্যে যেসব বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলি থাকা দরকার তার সবই বিবেচনা করে এ আসন থেকে অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরীকে দলীয় প্রার্থী হিসাবে চুরান্ত করেছে বলে জানিয়েছেন দলটির নীতিনির্ধাকরা।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী কক্সবাংলাকে বলেন,দীঘ দিন ধরে তিনি দলের একজন পরিচ্ছন্ন কমী হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় আমি উখিয়া উপজেলা অাওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি।তাই বিলম্বে হলেও দলীয় প্রার্ হিসাবে আসন্ন সংমদ নির্বাচনে মনোনয়নের ব্যাপারে আমি প্রত্যাশী।
তিনি আরো বলেন,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি আমাকে এ আসনে মনোনয়ন দেন উখিয়া-টেকনাফবাসী সহ দলের নেতাকর্মীরা নির্বাচনে আমার জন্য নিজেদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত।নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর জয়ের জন্য সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবে।’ আমি দৃড়ভাবে আশা করি বিপূল ভোটে জয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামী লীগকে এ আসন উপহার দিতে পারব। অার দল যাকে মনোনয়ন দিবে তার হয়েই আমরা কাজ করবো এবং নির্বাচনের শেষ সময় পর্যন্ত মাঠে থাকবো।’’
জানা যায়,আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সর্বশেষ সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচনে বিতর্কিত কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না।’ প্রধানমন্ত্রী যখন এই মন্তব্য করেছেন,তখন সারা দেশজুড়ে চলছিল বহুল কাঙ্ক্ষিত মাদক বিরোধী অভিযান। আর এই অভিযানে বন্দুকযুদ্ধ, ক্রসফায়ার এসব বিতর্ক ছাপিয়ে আবদুর রহমান বদির নাম এসেছে পাদপ্রদীপে।
আবদুর রহমান বদি কক্সবাজার-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের টিকেটের এমপি। বিএনপি, জাতীয় পার্টি এবং গণমাধ্যম সকলে একযোগে বলছে, বদিকে গ্রেপ্তার না করে মাদকবিরোধী অভিযান অসম্পূর্ণ, হাস্যকর।
বদির বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, সেটা ভিন্ন প্রসঙ্গ, কিন্তু আগামী নির্বাচনে যে তিনি আওয়ামী লীগের টিকেট পাচ্ছেন না, তা কয়েকমাস আগে কক্সবাজারে গিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিশ্চিত করে এসেছেন।
কক্সবাজার সফরে গিয়ে বদিকে দেখেই ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ‘তোমাকে তো মনোনয়ন দেওয়া হবে না।’ আওয়ামী লগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য যদি সঠিক হয় তাহলে, মাদক ব্যবসা নিয়ে বিতর্কিত আবদুর রহমান বদি আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাচ্ছেন না।
এছাড়াও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধাকরা মনেপ্রাণে চান দল থেকে মাদকের বদনাম দুর হোক। তারা এও চাচ্ছেন না মাদক অধ্যূষিত টেকনাফ থেকে কাউকেই এমপির মনোনয়ন দিতে। কারন টেকনাফ থেকে মনোনয়ন দিলেই ইয়াবা গডফাদারের কলঙ্ক বইতে হবে পুরো দলকে। তাই দলের ভাবমূর্তির স্বার্থে টেকনাফ থেকে কেউই যে এবার নৌকার মনোনয়ন পাচ্ছেনা এটা নিশ্চিত।
তাই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য কক্সবাজার-৪(উখিয়া-টেকনাফ) আসনে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নেতা নৌকা প্রতীক থেকে মনোনয়নের জন্য আলোচিত হলেও সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরীই পেতে যাচ্ছেন এ আসন থেকে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন।
প্রসঙ্গত ককসবাজারের উখিয়া -টেকনাফ নিয়ে গঠিত হয়েছে (ককসবাজার -৪-২৯৭ নং)। উখিয়া -টেকনাফ অাসনে প্রার্থী হতে অাওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন অাটজন।
এদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য অাবদুর রহমান বদি,সাবেক সংসদ সদস্য ও টেকনাফ উপজেলা অাওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ অালী, উখিয়া উপজেলা অাওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী,উখিয়া উপজেলা অাওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও রাজাপালং ইউপি চেয়ারম্যান জাহাংগীর কবির চৌধুরী, ককসবাজার জেলা যুব লীগের সভাপতি সোহেল অাহমদ বাহাদুর, টেকনাফ উপজেলা অাওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক নুরুল বশর,উখিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক চৌধুরী, টেকনাফ উপজেলা অাওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি জহির অাহমদ এম এ।
আর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী ভোটগ্রহণ করা হবে ২৩ ডিসেম্বর। সংসদ নির্বাচনের মনোনয়পত্র দাখিলের শেষ সময় ১৯ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ২২ নভেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৯ নভেম্বর। আর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ২৩ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ৩০ নভেম্বর।
Posted ৮:৩৪ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১১ নভেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta