শনিবার ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শনিবার ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

করোনা মহামারিতে বড় ধরনের বিপদের মুখে সংবাদপত্র

মঙ্গলবার, ২৩ জুন ২০২০
328 ভিউ
করোনা মহামারিতে বড় ধরনের বিপদের মুখে সংবাদপত্র

কক্সবাংলা ডটকম(২২ জুন) :: বড় ধরনের বিপদের মুখে পড়তে যাচ্ছে সংবাদপত্র। বিজ্ঞাপন শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। পত্রিকার গ্রাহকও কমেছে। এ অবস্থায় সংবাদপত্র টিকিয়ে রাখাই কঠিন হয়ে পড়েছে। করোনা সংকটে সব খাতই প্রণোদনা, সহায়তা বা ছাড় পেয়েছে। কিন্তু সংবাদপত্র সেবা শিল্প হওয়া সত্ত্বেও সরকারের কাছ থেকে বিশেষ কোনো সুবিধা পাচ্ছে না। আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটেও সংবাদপত্রের জন্য কোনো সুখবর নেই।

করোনাকালের অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত প্রায় সব মিডিয়া হাউস। এমনিতেই তেমন একটা নেই সরকারি বিজ্ঞাপন, প্রায় বন্ধের উপক্রম বেসরকারি ব্যবসা-বাণিজ্যের বিজ্ঞাপনও। এর মধ্যেই ব্যাংকের বিজ্ঞাপন বন্ধের ঘোষণাও এসেছে। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই ওষুধশিল্পের বিজ্ঞাপন থাকলেও নেই বাংলাদেশে। বারবার অনুরোধ করেও পাওয়া যাচ্ছে না সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর কাছে জমে থাকা বকেয়া বিল।

২০২০-২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট সামনে রেখে সংবাদপত্রশিল্প রক্ষায় নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রীর কাছে পাঁচ দফা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সেগুলো হলো—সংবাদপত্রের করপোরেট ট্যাক্স ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা, নিউজ প্রিন্ট আমদানির ওপর ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বাদ দেওয়া, বিজ্ঞাপন আয়ের ওপর উৎস কর (টিডিএস) ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করা, উৎসস্থলে কাঁচামালের ওপর ৫ শতাংশের বদলে অগ্রিম কর (এআইটি) শূন্য শতাংশ করা এবং কর্মীর আয়কর থেকে প্রতিষ্ঠানকে দায়মুক্ত করা ও তাঁর বাড়িভাড়ার পুরোটাই করমুক্ত করা। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে এসব দাবির ব্যাপারে কোনো সুখবর পাওয়া যায়নি।

নোয়াব বলছে, বিশ্বায়ন ও ডিজিটাল মিডিয়ার যুগে ছাপা সংবাদপত্র এমনিতেই রুগ্ণ শিল্পে পরিণত হয়েছে। আর করোনাভাইরাসের মহামারি সংবাদপত্রশিল্পের জন্য আরো ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। পত্রিকাগুলোর বিজ্ঞাপন শূন্যের কোঠায় নেমেছে, পত্রিকার গ্রাহক ব্যাপকভাবে কমেছে। ফলে প্রচুর আর্থিক লোকসান গুনতে হচ্ছে। পত্রিকাগুলোর মাসিক বেতন ব্যয়, অফিস ভাড়া, ব্যবস্থাপনা ব্যয়, পত্রিকা পরিবহন ব্যয়সহ অন্যান্য সব ব্যয় অপরিবর্তিত রয়েছে। এরই মধ্যে কয়েকটি পত্রিকা প্রিন্ট সংস্করণ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। বর্তমানের এই সংকটময় মুহূর্তে সরকারের সহযোগিতা ছাড়া সংবাদপত্রশিল্পের টিকে থাকা কঠিন।

করোনাকালে ‘ঘরবন্দি’ সারা দেশ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা মানুষের মুখে ঘুরতে থাকা অসংখ্য ‘ভুল বার্তা’ সমাজে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। এ নিয়ে সরকারকে বিব্রত হতে হচ্ছে। তবে গুজব প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখছে সংবাদপত্র। সংবাদপত্রে মুদ্রিত অক্ষরেই মানুষের নির্ভরতা বেশি। বিশ্বাসযোগ্যতায় পাঠকের মনে স্থান করে নেওয়া সংবাদপত্রই সরকার ও জনগণকে গুজব থেকে মুক্ত করছে। এই করোনার মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সংবাদপত্রশিল্পে জড়িত কর্মীরা জরুরি সেবা দিয়ে চলেছেন। কিন্তু সেই সংবাদপত্রের সামনেই অশনি সংকেত দেখা দিয়েছে। সংবাদপত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সিনিয়র সাংবাদিক, সম্পাদক ও সাংবাদিক নেতারা। তাঁরা সবাই এ অবস্থার দ্রুত উত্তরণ চান।

সাংবাদিক নেতারা বলছেন, মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাবে বিজ্ঞাপন নেই বললেই চলে। সরকারি বিজ্ঞাপনও খুবই কম। সময়মতো সরকারি বিজ্ঞাপন বিলও পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারের কাছে পত্রিকাগুলোর কয়েক শ কোটি টাকা বকেয়া পাওনা রয়েছে। এই বকেয়া টাকা পরিশোধ হলেও পত্রিকাগুলো কিছুদিন চলতে পারত। কিন্তু সেটাও ছাড় করছে না সরকারি দপ্তরগুলো।

তথ্য ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) স ম গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘আমরা মূলত বিভিন্ন দিবসের সরকারি ক্রোড়পত্রের বিল দিই। আমাদের কাছে সংবাদপত্রগুলোর ক্রোড়পত্রের বিল পাওনা ছিল ৯৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২৫ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে বা হচ্ছে। আগামী মাসে আরো ২৭ কোটি টাকা পরিশোধ করতে পারব বলে আশা করছি। আমাদের বিল পরিশোধ নির্ভর করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওপর। আমার দপ্তর থেকে দ্রুত বিল পরিশোধের ব্যাপারে আন্তরিকতার কোনো অভাব নেই। তথ্যমন্ত্রী এবং সচিবও এ ব্যাপারটি তদারকি করছেন। আর অন্যান্য সরকারি বিলও একসময় আমাদের দপ্তর থেকে দেওয়া হতো। এখন স্ব স্ব সংস্থা বিল দেয়। ফলে সেগুলোর ব্যাপারে আমি বলতে পারব না।’

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, ‘সরকার বিজ্ঞাপনের বিল দিচ্ছে না। এতে সংবাদপত্রশিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই দুঃসময়ে বকেয়া পরিশোধ করলে আমরা সেটাকে প্রণোদনা হিসেবেই দেখতাম। আমার দাবি থাকবে আগামী অর্থবছরের বাজেটে সংবাদপত্রের বকেয়া পরিশোধের জন্য যেন আলাদা বরাদ্দ রাখা হয়। এতে দুঃসময়ে আশা আলো দেখতে পারবে সংবাদপত্র। সাংবাদিক ছাঁটাই বা বেতন কমানো কিন্তু কোনো সমাধান নয়। বরং মালিক, সাংবাদিক ও কর্মচারী সবাই একসঙ্গে বসে করণীয় ঠিক করতে হবে। সরকারের উচিত মিডিয়ার মালিক ও সাংবাদিক নেতাদের নিয়ে একসঙ্গে বসা। তাহলে এই শিল্প রক্ষায় সমাধানের পথ বেরিয়ে আসবে। আমরা দুঃসময়ে সবাই এক জায়গায় বসতে চাই। এ ছাড়া বেসরকারি যেসব বিজ্ঞাপন রয়েছে—সেগুলোও অব্যাহত রাখার দাবি আমরা জানাচ্ছি।’

প্রবীণ সাংবাদিক ও সাবেক সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনায় বিপর্যস্ত অর্থনীতি। এই সময় সরকার বিভিন্ন শিল্প বাঁচাতে প্রণোদনা দিচ্ছে। কিন্তু সংবাদপত্রশিল্পে প্রণোদনা নেই। সংবাদপত্র ঠিক না থাকলে সমাজের অগ্রগতি হতে পারে না। আগে থেকেই চাপের মধ্যে ছিল সংবাদপত্র। বর্তমানে বিজ্ঞাপন কমেছে, পাঠক কমেছে। সরকারের কাছে পত্রিকাগুলোর বড় অঙ্কের বকেয়া পড়ে রয়েছে। ব্যাংকসহ বেসরকারি বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এভাবে সংবাদপত্র টিকতে পারবে না। সরকার যেহেতু মিডিয়াবান্ধব। তাই সংবাদপত্রের জন্যও তাদের উদ্যোগ বা প্রণোদনার বিকল্প নেই। আমি অনুরোধ করব, দ্রুততার সঙ্গে সরকারের কাছে থাকা বকেয়া বিলগুলো যেন পরিশোধ করা হয়।’

328 ভিউ

Posted ২:৫১ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৩ জুন ২০২০

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com